রাজস্থানকে টিকিয়ে রাখলো স্টোকসের সেঞ্চুরি

অপরাজিত ১০৭ রানের ইনিংস খেলার পথে স্টোকস - আইপিএল টুইটারটুকটাক রান পাচ্ছিলেন, কিন্তু তার নামের সঙ্গে তা যাচ্ছিল না। অবশেষে বেন স্টোকস প্রমাণ করলেন কেন তিনি এই সময়ের বিশ্ব ক্রিকেট এমভিপি (মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ার)। ১৯৫ রানের পাহাড় গড়েছিল মুম্বাই ইন্ডিয়ানস। অপরাজিত এক সেঞ্চুরিতে রাজস্থান র‌য়্যালসকে সেখানে তুলেছেন ইংলিশ অলরাউন্ডার। সঞ্জু স্যামসনের সঙ্গে ১৫২ রানের জুটি গড়ে মুম্বাইকে হারিয়েছেন ৮ উইকেটে। দূরতর হলেও প্লে-অফে ওঠার স্বপ্নটা তাই বেঁচে রইলো রাজস্থানের।

টসজয়ী মুম্বাইয়ের ইনিংসে ৩৬ বলে ৩৭ করেছেন ওপেনার ইশান কিষাণ, ২৬ বলে ৪০ সুরিয়াকুমার যাদব, ২৫ বলে ৩৪ সৌরভ তিওয়ারি। কিন্তু এসব ম্লান হার্দিক পান্ডিয়ার ব্যাটিংয়ের কাছে। ২১ বলে অপরাজিত ৬০ রানের ইনিংস খেলার পথে আইপিএলের চতুর্থ দ্রুততম ফিফটি করেছেন (২০ বলে)। দুই চার ও ৭ ছক্কার ইনিংসটি দিয়ে শেষ ৪২ বলে ৯৪ রান তুলতে সাহায্য করেছেন মুম্বাইকে। আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামকে বিস্ময়াভূত করে দেওয়া ইনিংসটি শেষে অবশ্য পরাজিত দলের অংশ। কারণ দ্বিতীয়ার্ধে জেগে উঠেছিলেন স্টোকস।

১৯৫ তাড়া করতে নামা রাজস্থানের প্রথম উইকেট তুলে নেয় মুম্বাই ১৩ রানে। এই আইপিএলের সবচেয়ে শক্তিশালী বোলিং ইউনিটের এমন বোলিংয়ে রাজস্থানের দ্রুত পতনেরই ইঙ্গিত ছিল। না, রাজস্থান দারুণভাবে প্রয়োজনীয় রান রেটের সঙ্গে এগোতে থাকে। ৪.৪ ওভারে ৪৪ রানে অধিনায়ক স্টিভ স্মিথকে বোল্ড করে দ্বিতীয় উইকেটটাও নেন তার অস্ট্রেলিয়া সতীর্থ জেমস প্যাটিনসন। বুমরা-বোল্টের স্পেল তো পড়েই ছিল। কিন্তু আর কোনও উইকেট যেতে দেননি স্টোকস ও স্যামসন। ওরাই কাজটা শেষ করে এসেছেন। ২৮ বলে ফিফটি করা স্টোকস ওই প্যাটিনসনের বলকে মিড উইকেটের ওপর আছড়ে ফেলে পূর্ণ করেছেন এবারের আইপিএলের পঞ্চম সেঞ্চুরি, পরের বলটিতে চার মেরে দলকে পৌঁছে দিয়েছেন লক্ষ্যে। ৬০ বলে ১০৭ রান করার পথে ১৪টি চারের সঙ্গে ৩টি ছক্কা মেরেছেন। অন্যপ্রান্তে স্যামসন তার ৩১ বলে ৫৪ রানের ইনিংসটি সাজিয়েছেন ৪ চার ও ৩ ছক্কায়।

উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো ছিল। তবে ১০ বল হাতে রেখেই যেমন আধিপত্যে রাজস্থান ১৯৫ রান টপকে গেল, তাতে মনে হয় না মুম্বাইয়ের সেই অজেয় চেহারাটা আর আছে।

১২ ম্যাচে পঞ্চম জয়ে রাজস্থান ১০ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠস্থানে, প্লে-অফে যাওয়ার একটা সম্ভাবনা ধরে রাখতে পেরেছে। তবে মুম্বাইকে প্রবল প্রতাপে হারিয়ে তারা অন্য দলগুলিকেও সাহস দিলো যে প্লে-অফে কেউ অবধ্য নয়। অর্থাৎ এবারের শিরোপা লড়াইটা বেশ আকর্ষণীয় হতে চলেছে। তার আগে প্লে-অফ নিশ্চিত হওয়ার লড়াইটাই চরম উত্তেজনাকর জায়গায়। ১১টি করে ম্যাচ খেলে মুম্বাই, দিল্লি ও ব্যাঙ্গালোরের হাতে ১৪টি করে পয়েন্ট। শুধু নেট রান রেটের ব্যবধানেই দল তিনটি এক, দুই ও তিন নম্বরে। এদের চেয়ে দুই পয়েন্ট পিছিয়ে চারে কলকাতা। ১০ পয়েন্ট করে নিয়ে কলকাতার নিঃশ্বাস দূরত্বে পাঞ্জাব ও রাজস্থান। এ পরিস্থিতে কাল ১২তম ম্যাচে মুখোমুখি পাঞ্জাব ও কলকাতা।  

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

মুম্বাই: ২০ ওভারে ১৯৫/৫(হার্দিক ৬০*, সুরিয়াকুমার ৪০, কিষাণ ৩৭, তিওয়ারি ৩৪, গোপাল ২/৩০, আর্চার ২/৩১) ও রাজস্থান: ১৮.২ ওভারে ১৯৬/২ (স্টোকস ১০৭*, স্যামসন ৫৪*, উথাপ্পা ১৩, প্যাটিনসন ২/৪০)।