মেসিকে ছাড়াই বার্সেলোনার আরেকটি জয়

ডেম্বেলে ও ব্রাথওয়েট: ম্যাচের পর বার্সার দুই জয়ের নায়ক এক. কোনও চোট ছাড়াই মেসিকে চ্যাম্পিয়নস লিগে টানা দু’ম্যাচ না খেলানো। দুই. ২০০২-০৩ মৌসুমের পর চ্যাম্পিয়নস লিগ গ্রুপ পর্বে প্রথম পাঁচ ম্যাচেই জয়। তিন. চ্যাম্পিয়নস লিগ ইতিহাসে প্রথম দল হিসেবে টানা পাঁচ ম্যাচ কমপক্ষে একটি করে পেনাল্টি পেয়ে তা থেকে গোল করা। বার্সেলোনার জন্য তিনটি ঘটনাই ঐতিহাসিক। কোনটিকে আপনি বেশি গুরুত্ব দেবেন সেই সিদ্ধান্ত আপনার।

আগের সপ্তাহে কিয়েভের মাঠে ডায়নামো কিয়েভকে (৪-০) হারানো বার্সেলোনা বুধবার বুদাপেস্টে ফেরেনসেভারোসকে ৩-০ গোলে হারিয়ে বোঝালো তাদের গভীরতা এবার অনেক। সেটিকে শুধু বুঝে-শুনে কাজে লাগানো দরকার।

বল মাঠে গড়ানোর ২৮ মিনিটের মধ্যেই তিন গোল করে ম্যাচটি শেষ করে দিয়েছে বার্সা। গোল তিনটি হয়েছে যেন ‘সাত’-এর নামতা গুনে। ১৪ মিনিটে জর্ডি আলবার বাসে দুর্দান্ত গোল করে দলকে প্রথম এগিয়ে দেন আন্তোয়ান গ্রিজমান। ২১ মিনিটে ওসমান ডেম্বেলের পাসে গোল করেন মার্টিন ব্রাথওয়েট, চ্যাম্পিয়নস লিগে দ্বিতীয়বার ম্যাচের শুরুতে নেমে যেটি তার তৃতীয় গোল। সাত মিনিট পর ব্রাথওয়েটের আদায় করা পেনাল্টি থেকে গোল ডেম্বেলের। আরও বড় ব্যবধানেই জিততে পারতো বার্সেলোনা যদি না ম্যাচের শেষদিকে ‘ওপেন নেট’ মিস করতেন ত্রিঙ্কাও, রিকি পুচ ও ডেম্বেলে। তবে রোনাল্ড কোম্যানের কাছে ৩-০ গোলে জেতাটাও বড় স্বস্তির। শুধু মেসিকেই তো নয়, ‘নাম্বার ওয়ান’ গোলকিপার মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগেন ও ফিলিপ্পে কুতিনিয়োকেও এ ম্যাচে বিশ্রাম দিয়েছেন বার্সা কোচ। দ্বিতীয়ার্ধে সের্হিয়ো বুসকেটস, গ্রিজমান, আলবা ও লংলেকে তুলে নেওয়ার পর মাঠে যেন ছিল বার্সেলোনার ‘বি’ দল। যে দলের গড় বয়স ২৩ বছরের সামান্য বেশি।

গত মৌসুম শেষে রিলিজ ক্লজের মারপ্যাঁচে পড়ে মেসি বার্সেলোনায় থেকে যেতে বাধ্য হওয়াতেই নিশ্চিত হয়েছিল, আর্জেন্টাইন সুপারস্টারের কর্তৃত্ব এবার খর্ব হবে। প্রতিষ্ঠিত হবে কোচ কোম্যানের নিয়ন্ত্রন। চ্যাম্পিয়নস লিগে টানা দু’ম্যাচ মেসিকে স্কোয়াডে না রেখে সেটি বুঝিয়ে দিলেন ডাচ কোচ। ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে যদিও বলেছেন মেসির সঙ্গে বিশ্রাম নিয়ে কথা হয়েছিল, তবে তাকে স্কোয়াডে না রাখার সিদ্ধান্ত কোচের নিজস্ব। কোম্যানের কথায় যুক্তিও আছে, আগেই টানা চার ম্যাচ জিতে দ্বিতীয় পর্ব নিশ্চিত হওয়ায় মেসিকে খেলিয়ে বাড়তি ঝুঁকি নেওয়ার কোনও মানে হয় না। সামনে রয়েছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ, বলতে গেলে টানা দুই মাস টানা খেলতে হবে। সুতরাং এটাই সুযোগ বার্সার প্রাণভোমরাকে একটু বিশ্রাম দেওয়ার। আগামী শনিবারই যেমন লা লিগার ম্যাচ কাদিজের মাঠে। লিগ শিরোপার লড়াইয়ে ফেরার জন্য ওই ম্যাচটি জিততে হবে। আর নবাগত কাদিজ খুব সহজ প্রতিপক্ষ যে নয়, রিয়াল মাদ্রিদকে হারিয়ে তারা তা প্রমাণও করেছে।

তা মেসিকে ছাড়াই ৩-০ গোলে জিতে গ্রিজমান-ডেম্বেলে-ব্রাথওয়েটরাও নিজেদের আত্মবিশ্বাসটা দেখালেন। বার্সেলোনার লক্ষ্য এখন ‘জি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হওয়া যাতে দ্বিতীয় রাউন্ডে পাওয়া যায় সহজতর প্রতিপক্ষ। সে জন্য ঘরের মাঠে শেষ গ্রুপ ম্যাচে জুভেন্টাসের সঙ্গে ভালো করতে হবে। জিতলে কথাই নেই, ড্র হলেও চলবে, এমনকি ১-০ গোলে হারলেও সমস্যা নেই। জুভেন্টাসও বুধবার রাতে ৩-০ গোলে হারিয়েছে ডায়নামো কিয়েভকে। গোল করেছেন ফেদেরিকো চিয়েসা, আলভারো মোরাতা ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। পাঁচ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট পাওয়া তুরিনের বুড়িও শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছে আগেই।