প্রয়োজনের সময় হাল ধরতে পারলেন না ব্যাটসম্যানরা

e87a1cb63f9c28f96bbd071e8843dadc-59a548a0355baঅসময়ে পারফরম্যান্স করার চেয়ে সময়মতো ৪০ রান করার গুরুত্ব অপরিসীম। কাল (বৃহস্পতিবার) ম্যাচ শেষে ১৯৬ রান তাড়া করে ২০ রানে হার, দক্ষিণ আফ্রিকায় এখন পর্যন্ত আমাদের সার্বিক পারফরম্যান্সের আলোকে যথেষ্ট প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ম্যাচের বার্তা দেয় এটা। তবে যারা ম্যাচটি সরাসরি দেখেছেন, তারা আমাদের ব্যাটিংয়ের প্রথম ১০ ওভার পর্যন্ত প্রথমবারের মতো এই সফরে যথেষ্ট উত্তেজনায় ভুগেছেন। ১৫ ওভারের মাথায় সেই উত্তেজনার পারদ অনেকটা নিচের দিকে নেমে যায়। শেষ ৫ ওভারে যদি অলৌকিক কিছু ঘটে, এমন বাসনা যাদের ছিল তারাই গভীর রাতে টিভি সেটের সামনে সাইফুদ্দিনের বীরোচিত ব্যাটিং হতাশা নিয়েও উপভোগ করেছেন।
কাল মূলত চার সিমার নিয়ে একাদশ সাজানোটা একটা বড় চমক ছিল এবং তার চেয়ে বড় চমক ছিল, দুই প্রান্ত থেকে নতুন বল দুই স্পিনারের ভাগাভাগি করে নেওয়া। রুবেল বাদে অন্য তিন পেসার ২ ওভারের বেশি বল করতে পারেননি। এত কিছুর পরও তাদের প্রতি নির্বাচকরা যে আস্থা রেখেছিলেন, তার প্রতিদান যথার্থ হয়নি। তবে তাদের কপাল মন্দ, তিন সিমারকেই তাদের প্রথম ওভারে এবি ডি ভিলিয়ার্স মেরে শুরুতেই তছনছ করে দেন। পরবর্তী পর্যায়ে রুবেল তার রিভার্স সুইং নিয়ে ভালোভাবে ফেরত আসেন। ডেথ ওভারে নিজে বল না করে সাইফুদ্দিনের উপর সাকিব ভরসা রেখেছিলেন। সাইফুদ্দিনও শেষ ৬ বলের মধ্যে ৫টি অসাধারণ ইয়র্কার লেন্থে চমৎকার বল করে তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে এগিয়ে গিয়েছেন এবং দিনের শেষে তার ব্যাটিং সামর্থ্যও ছিল দারুণ। একাদশে যে তার জায়গা পাকা হচ্ছে তার প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত রাখলেন তিনি ব্যাটে বলে।

কাল প্রথম সেশনে আনুপাতিক হারে পিচ কিছুটা মন্থর ছিল। তাই শেষ ৫ ওভারে মিলার ও বেহারদিয়েন বড় শটস খেলার দিকে মনোযোগী না হয়ে প্রচুর দুই রান নিয়েছেন ও শেষ ৩০ বলে ৬২ রানের জুটি তাদের শক্ত অবস্থানে পৌঁছে দেয়।

এই রান তাড়া করতে গিয়ে আমাদের আস্থার সংকটে ভোগা ব্যাটসম্যানরা দারুণ একটা জমপেশ ম্যাচের আবহাওয়া ইনিংসের প্রথমার্ধ পর্যন্ত বিদ্যমান রাখবেন, সেটা ছিল বড় একটা বিস্ময়।

তবে কালকের উইকেটের যে গতি ও বাউন্স ছিল, তাতে আমাদের দেশের পিচের মতো অন দ্য রাইজ অনেক শটস উইকেটের সামনে এই প্রথমবারের মতো খেলার সুযোগ পেয়েছে ব্যাটসম্যানরা এবং শটপিচ বলের পুল করতেও বেগ পেতে হয়নি। তবে ব্যাটিংয়ে এই দারুণ মুহূর্ত এনে দেওয়া সরকার তার ইনিংসটি দীর্ঘায়িত করতে পারলে তিনি একাই খেলার ভাগ্য বদলে দিতে পারতেন। তবে বিশ্বসেরা সাকিব এক ওভারে ৯ রান তুলে নেওয়ার পর হিসাবি না হয়ে বাড়তি ঝুঁকি তার ইনিংসের অপমৃত্যু ঘটায় এবং তার সঙ্গে মুশফিককে ফাঁদে ফেলে আউট করার দৃশ্যও ছিল কষ্টদায়ক। ক্রিজ ছেড়ে বাইরে না বেরিয়েও মাহমুদউল্লাহ অনেক আকর্ষণীয় ক্রিকেট খেলতে পারেন, এটা তাকে মনে করিয়ে দেওয়া উচিত। সময়মতো উইকেটে প্রয়োজনীয় উপস্থিতিতে এক ও দুই রান বল প্রেস করে নিতে না পারার কারণে মাঝপথে ম্যাচ আমাদের হাত থেকে বেরিয়ে যায়।

দক্ষিণ আফ্রিকা দলে বোলিং আক্রমণে রাবাদা ও ইমরান তাহিরের অনুপস্থিতি কাজে লাগানোর একটা বড় সুযোগ হাতছাড়া হয়ে গেলো। বিশ্বের অন্যতম টি-টোয়েন্টি স্পেশালিস্ট সাকিব আল হাসানের কাছ থেকে বল ও ব্যাট হাতে উজ্জ্বল পারফরম্যান্স না পেলে দক্ষিণ আফ্রিকার দুর্বল ও অনভিজ্ঞ বোলিং আক্রমণ সমৃদ্ধ দলকেও হারানো কখনোই সহজ হবে না।