জুটি যে এত বড় হয়ে যাবে ভাবিনি: মুশফিক

জুটি যে এত বড় হয়ে যাবে ভাবিনি: মুশফিক দুই সুখী যোদ্ধা হাসিখুশি মুখে এসে কথা বললেন সংবাদ সম্মেলন কেন্দ্রে। এদের একজন আবার সেনাপতি। তার নাম মুশফিকুর রহিম। যার সহযোদ্ধা সাকিব আল হাসান। ওয়েলিংটনের বেসিন রিজার্ভ ক্রিকেট গ্রাউন্ডের আন্ডারগ্রাউন্ডে বানানো অনুশীলনের ইনডোরে এরা সাংবাদিকদের অস্থায়ী খাবার জায়গাকে ব্রিফিংয়ের জায়গা বানিয়েছে। এমনিতে ব্রিফিংয়ে আসেন দলের পক্ষে কোনও একজন। চেয়ারও রাখা ছিল একটা।  শুক্রবার এসেছেন দু’জন! বাংলাদেশের এতবড় স্মরণীয় রেকর্ডময় জুটির একটা ইনিংসের পর কি সংবাদ সম্মেলন একজনে হয়? জুটিওতো একজনে হয় না। মুশফিকের সঙ্গে সাকিব এসে একটা চেয়ার দেখে অনুযোগ করে বলেন, ‘দু’জন নিয়ে এসেছে সংবাদ সম্মেলন করতে। অথচ চেয়ার একটা।’ তাড়াতাড়ি সেখানে আরেকটা চেয়ার দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনেও খুব স্বাভাবিক দীর্ঘ রেকর্ড জুটির প্রশ্নটি আসে সবার আগে। টিম বাংলাদেশের কাপ্তান মুশফিকুর রহিম হাসতে হাসতে বলেন, ‘আমরা একটা বড় জুটি গড়তে চেয়েছিলাম। কিন্তু জুটি যে এত বড় হয়ে যাবে তা ভাবিনি।’

বারবার তামিম-মমিনুলের প্রথম দিনের ইনিংসটার কথা উল্লেখ করেন মুশফিক। ক্যাপ্টেন বলেন, ‘তারা আমাদের লড়াইয়ের ভিত্তিটা গড়ে দিয়ে গেছেন। সেই ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েই আমরা সবকিছু করেছি। তাদের গড়ে যাওয়া ভিত্তি, প্রেরণাকে কাজে লাগিয়েই আমরা ইনিংসটাকে এগিয়ে নিয়ে গেছি।’

মুশফিক আরও বলেন, ‘দ্বিতীয় দিনে আমাদের পরিকল্পনা ছিল মমিনুল বেশ কিছু সময় ক্রিজে থাকবে। কিন্তু দ্রুত উইকেট একটা এভাবে পড়ে যেতেই পারে। তবে মমিনুল বেরিয়ে যাওয়ার সময় বলে গেছে ভাই উইকেটে রান আছে। ঠিকমতো যদি খেলতে করতে পারেন তাহলে রান পাবেন। সে কারণে উইকেটে এসে আমি বেশ কিছু সময় উইকেট বোঝার চেষ্টা করেছি। সাফল্যও পেয়েছি।’

মুশফিক নিজেদের কৌশল নিয়ে বলেন, ‘আমি আর সাকিব শুরু থেকে ঠিক করেছিলাম আমরা সাধারণ ব্যাটিং করবো। আমাদের লক্ষ্য ছিল একটা পার্টনারশিপ যাতে হয়। কিন্তু পার্টনারশিপটা এত বড় হবে তা হয়তো ভাবা হয়নি। কিন্তু আমাদের শুধু লক্ষ্য ছিল ভালো একটা জুটি। ড্রেসিং রুমে আমাদের বলা হয়েছে, লাঞ্চ ব্রেকেও আমাদের বলা হয়েছে এ ধরনের সুযোগ বারবার আসে না। তাই এটাকে যতটা পারো বড় করো। আমরা চাচ্ছিলাম যতটা সম্ভব বড় রান করা যায়।’

মুশফিক-সাকিব বড় জুটি গড়লেও এর ভিত্তি গড়ে দিয়ে গেছেন তামিম-মমিনুল। বিষয়টি নিজেই স্বীকার করেন মুশফিক, ‘বিদেশের মাটিতে আমাদের ভালো খেলার দরকার ছিল। কিন্তু ভিত্তিটা করে দিয়ে গেছে তামিম-মমিনুল। সাকিব আজ অনেক ভালো ব্যাট করেছে। আমরা আমাদের এই দু’দিনের খেলায় সুখী। কিন্তু টেস্টের আরও তিন দিন আছে। শনিবারের প্রথম সেশনটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা শনিবার আরও কিছু রান চাই। আমাদের একজন ব্যাটসম্যান সাব্বির এখনও ক্রিজে আছেন। টেল এন্ডাররা আছেন। আমরা যদি আরও পঞ্চাশটা রান পাই তাহলে আর তাদের যদি দ্রুত কিছু উইকেট নিতে পারি তাদের বেশ চাপে ফেলতে পারবো।’

প্রথম ইনিংসে দ্বিতীয় দিনে ৭ উইকেটে ৫৪২ রান এসেছে। যেখানে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে ব্যাটিং বান্ধব উইকেট। বিষয়টি উল্লেখ করে মুশফিক বলেন, ‘উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্যে আজ অনেক সুবিধার ছিল। আমরা যেভাবে ভেবেছিলাম যে উইকেটে পেস বোলারদের জন্যে অনেক সুবিধা থাকবে, সেভাবে হয়তো এখন নেই। তারপরও আমি বলবো ভালো জায়গায় অনেকক্ষণ বল করলে আপনি যতই একশ-দেড়শ রান করেন না কেনও যে কোনও একটি বলে আউট হওয়ার সুযোগ থাকতেই পারে। সে কারণে বলছি যা করেছি তাতেই আমরা খুশি।’

এতবড় একটি ইনিংসের পর ড্রেসিং রুমে উদযাপন কী রকম হয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে মুশফিক বলেন, ‘উদযাপন তেমন কিছু না। এটা শুধু তামিম আর আমার মাঝে ছিল। তামিমের একটা চাওয়া ছিল।যা হওয়ার তামিমের সঙ্গেই হয়েছে।’

/এফআইআর/