জ্বলে উঠতে পারবেন নাসির?

217521কিছু দিন আগেও বাংলাদেশ দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন নাসির হোসেন। দলে তার আরেক নাম ছিল ‘দ্য ফিনিশার’। ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তার ব্যাট চওড়া হয়ে দলকে নিয়ে যেত জয়ের বন্দরে।

কিন্তু গত বছর থেকে জাতীয় দলে অনিয়মিত হয়ে পড়েন তিনি। অনুজ্জ্বল পারফরম্যান্সের চেয়েও শৃঙ্খলাভঙ্গ তার জায়গা হারিয়ে ফেলার কারণ। দেশের ক্রিকেটাঙ্গনের অনেকের ধারণাই এমন। ২০১৬ সালে দুটি করে ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি খেলার সুযোগ পাওয়া নাসির অবশেষে ৭ মাস পর টাইগারদের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেলেন। আজ ত্রিদেশীয় সিরিজের শেষ ম্যাচে একাদশে রাখা হয়েছে তাকে।

নাসির কেন দলে সুযোগ পান না, তা এক রহস্যই বটে! ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং তিন বিভাগেই অবদান রাখতে পারেন তিনি। ৬ বা ৭ নম্বরে নেমে ভালো ইনিংস খেলা, প্রয়োজনের সময় বল হাতে নিয়ে ‘ব্রেক থ্রু’ এনে দেওয়া কিংবা চোখধাঁধানো ফিল্ডিংয়ে দলকে উজ্জীবিত রাখা—নাসির যেন ক্রিকেটের পরিপূর্ণ এক ‘প্যাকেজ’। তবু তিনি দলে উপেক্ষিত!

আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের দলে থাকলেও ইংল্যান্ডে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলে নাসির নেই। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অবশ্য তাকে ‘স্ট্যান্ডবাই’ রাখা হয়েছে। এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে চমৎকার পারফরম্যান্সের জন্যই তার থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখতে পারেন নি নির্বাচকরা। এবারের লিগে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের হয়ে চার ম্যাচে একটি করে সেঞ্চুরি ও হাফসেঞ্চুরি সহ তার মোট রান ২২৬। তিন ম্যাচেই অপরাজিত থাকায় গড়ও ২২৬। উজ্জ্বল ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বল হাতেও জ্বলে উঠে ৪টি উইকেট নিয়েছেন তিনি। গত মার্চ-এপ্রিলে ইমার্জিং কাপেও ভালো পারফরম্যান্স ছিল নাসিরের। চার ম্যাচে ১৫৪ রান করার পাশাপাশি তিন উইকেট নিয়েছিলেন অফব্রেক বোলিংয়ে।

গত বছরের অক্টোবরে সর্বশেষ জাতীয় দলকে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন নাসির। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওই ওয়ানডেতে একদমই ভালো খেলতে পারেন নি। ১০ বলে ৪ রান করার পর ৭ ওভার বল করে ৫৩ রানের বিনিময়ে নিয়েছিলেন একটি উইকেট। এরপরই বাদ পড়ে যান তিনি। নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কা সফরে স্কোয়াডেই ছিলেন না।

নাসিরের দলে না থাকা প্রসঙ্গে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু প্রায়ই বলেন, ‘বর্তমানে দলে নাসিরের চেয়ে ভালো খেলোয়াড় আছে। তাই সে সুযোগ পাচ্ছে না।’

যদিও ক্রিকেটাঙ্গনে গুঞ্জন, নাসিরের বাদ পড়ার প্রধান কারণ শৃঙ্খলাজনিত। নাসিরের ভক্তরা এ নিয়ে অনেকবার ক্ষোভ প্রকাশ করলেও নির্বাচকরা তাতে কর্ণপাত করেন নি। অবশেষে ত্রিদেশীয় সিরিজের শেষ ম্যাচে সুযোগ পেলেন তিনি। কে জানে, এটাই হয়তো তার ক্যারিয়ারের ‘টার্নিং পয়েন্ট’!  

/আরআই/এএআর/