শ্বাসরুদ্ধকর জয়ে ফাইনালে ইংল্যান্ড

ইংল্যান্ডের মেয়েদের ফাইনালে ওঠার আনন্দএই না হলে ফাইনালে ওঠার লড়াই! প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিচারে ছেলেদের ক্রিকেট থেকে মেয়েদের ক্রিকেট যে পিছিয়ে নেই, সেটাই ধরা পড়ল মহিলা বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে। পেন্ডুলামের মতো ম্যাচ দুলেছে শেষ ওভারে। জয়টা যেখানে সময়ের অপেক্ষা মনে হচ্ছিল ইংল্যান্ডের, সেখানে এক ওভারের নাটকীয়তায় দক্ষিণ আফ্রিকার তরীতেও লাগতে থাকে জয়ের হাওয়া। ৩ বলে দরকার ২ রান, মাত্রই ক্রিজে আসা নতুন খেলোয়াড়কে চেপে ধরতে পারলেই শিরোপা জেতার মঞ্চ। আশার মশাল হাতে ছুটে চলা শাবনিম ইসমাইলের অফস্ট্যাম্পের অনেকটা বাইরে ফেলা বল অ্যানিয়া শ্রবসোলের ব্যাটে লেগে পেরিয়ে গেল সীমানা। তাতে কঠিন অঙ্ক মিলিয়ে দিয়ে মহিলা বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠার আনন্দে মেতে উঠল ইংল্যান্ড।

ব্রিস্টলে মহিলা বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে শেষ ওভারের নাটকীয়তায় ক্রিকেট বিশ্ব উপভোগ করল শ্বাসরুদ্ধকর এক ম্যাচ। যেখানে ২ উইকেটের জয়ে স্বাগতিক ইংল্যান্ড ফাইনালে উঠলেও লড়াই করার দুর্দান্ত মানসিকতায় মন জয় করে নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার মেয়েরাও। নির্ধারিত ৫০ ওভারে তাদের ৬ উইকেটে করা ২১৮ রানের জবাবে ইংলিশরা ২ বল আগে ৮ উইকেট হারিয়ে জয় নিশ্চিত করে ঘরের মাঠে শিরোপা জেতার লড়াইয়ে এগিয়ে গেল আরও একধাপ।

সব নাটক জমা ছিল যেন শেষ ওভারে। ৬ বলে ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ৩ রান। প্রথম বলে জেনি গানের ক্যাচ মিস করার পর ইসমাইলের দ্বিতীয় বলে ১ রান নিলেন এই ইংলিশ খেলোয়াড়। তৃতীয় বলেই আউট লরা মার্শ। ৩ বলে ইংল্যান্ডের দরকার তখন ২ রান। জমে ওঠা ম্যাচে কোনও সুযোগই দিলেন না শ্রবসোলে, মুখোমুখি হওয়া নিজের প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে জয় নিশ্চিত করেন স্বাগতিকদের।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা দক্ষিণ আফ্রিকার মেয়েরা লরা উলভার্ডট ও মিগনোন দু প্রেজের হাফসেঞ্চুরিতে ৬ উইকেট হারিয়ে করেছিল ২১৮ রান। ওপেনার উলভার্ডট ১০০ বলে খেলেন ৬৬ রানের ইনিংস, যাতে ছিল ৮টি বাউন্ডারি। প্রেজ ছাড়িয়ে যান তাকেও, তার হার না মানা ৭৬ রানের ওপর ভর দিয়েই দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ছাড়ায় ২০০। ৯৫ বলের ইনিংসটি তিনি সাজিয়েছিলেন ৫ বাউন্ডারিতে।

২১৯ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের মেয়েরা শুরুতে খুব একটা সুবিধা করতে না পারলেও জয়ের পথে ঠিকই হাঁটতে থাকে সারাহ টেলরের ব্যাটে। ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতা এই উইকেটরক্ষক ৭৬ বলে ৫৪ রানের ইনিংস ভিত গড়ে দেয় স্বাগতিকদের। তবে প্রয়োজনের দিক থেকে তুলনা করলে তার ওই ইনিংসটাও ছাড়িয়ে গেছে ফ্রান উইলসন ও জেনি গানের ব্যাটিং। দরকারের সময় উইলসন ৩৮ বলে করেন ৩০ রান। আর শেষদিকে গান বলের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রান না নিলে ইংল্যান্ডের জয়ের পথটা হয়ে যেত আরও কঠিন। শেষ পর্যন্ত ২৭ বলে হার না মানা ২৭ রানের ইনিংস খেলে দলকে ফাইনালে তুলেই মাঠ ছেড়েছেন গান। ক্রিকইনফো

/কেআর/