ম্যাচসেরা হয়েও নির্বিকার মাশরাফি

মাশরাফিব্যক্তিগত মাইলফলক কখনোই স্পর্শ করে না তাকে। ব্যক্তি মাশরাফি এ কারণেই অনন্য। নিজের ২০০তম ওয়ানডেতে ম্যাচসেরার পুরস্কার পাওয়ার দিনেও অনুভূতিহীন এক মানুষ তিনি। নিজের অর্জনকে এক পাশে ঠেলে দল জেতার অনুভূতি ভাগাভাগি করলেন প্রাণ খুলে।

২০০৪ সালে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে রবিবারের মতোই কুয়াশাভেজা এক সন্ধ্যায় ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের শততম ওয়ানডেতে ম্যাচসেরার পুরস্কার পেয়েছিলেন মাশরাফি। ব্যাট ও বল হাতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ভারতের বিপক্ষে জয়ের নায়ক ছিলেন তিনি। ৯ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩৯ বলে ৩১ রানের হার না মানা ইনিংস খেলে দলকে ২২৯ রানের লড়াকু স্কোর গড়ে দেওয়ার পর বল হাতে আগুন ঝরান। ওপেনার বীরেন্দর শেবাগকে শূন্য রানে ও উইকেটরক্ষক মহেন্দ্র সিং ধোনিকে ১২ রানে ফিরিয়ে ১৫ রানের জয় এনে দেন দলকে।

বাংলাদেশের শততম ম্যাচের মতো নিজের ২০০তম ম্যাচে এসেও পেয়েছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৫ উইকেটের জয়ের পথে ১০ ওভারে ৩০ রান খরচায় তুলে নেন ৩ উইকেট। সফরকারীদের টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে দেওয়ার পুরস্কার হিসেবে হয়েছেন ম্যাচসেরা।

সংবাদ সম্মেলনে অনুভূতি ভাগাভাগি করলেন মাশরাফি সহজ ভাষায়, ‘১০০তম ম্যাচেরটা মনে আছে, সম্ভবত ভারতের সঙ্গে ছিল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে। এটা অনেক দিন ধরে স্মৃতিতে আছে এবং থাকবে। ওই সময় ভারতের বিপক্ষে আমাদের জয় মানে অন্যরকম কিছু। আর এটা তো মাত্রই হলো, ভোলার সুযোগ কোথায়! আসলে দুনিয়াতে কাকতালীয় বলে কিছু নেই, সব আমরা বানাই।’

মাইলফলকের ম্যাচে সেরা খেলোয়াড় হলেও ব্যক্তিগত অর্জন নিয়ে খুব বেশি আগ্রহ নেই তার। দলের জয়টাই বড় বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়কের কাছে, ‘মাইলফলক আসলে তেমন কিছু না। তবে অবশ্যই ম্যাচসেরা হতে পেরে ভালো লাগছে। যদিও এই ভালো লাগাটা কাজ করছে ম্যাচ জিতেছি বলে। ম্যাচ জিততে না পারলে কখনোই এসব অনুভূতি আসতো না।’

নড়াইল-২ আসন থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করবেন মাশরাফি। নির্বাচনের কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল। অনেকেরই ধারণা ছিল, মাশরাফি এই সিরিজে খেলবেন না, কিংবা খেললেও ফোকাস নির্বাচনে থাকায় ভালো করতে পারবেন না। দুর্দান্ত বোলিংয়ে সব সংশয় উড়িয়ে দিয়েছেন মাশরাফি। যদিও এই পারফরম্যান্সকে জবাব হিসেবে দেখছেন না তিনি, ‘জবাবের কিছু নেই। খারাপ হলে কথা বলতো, এটাই স্বাভাবিক। তবে জবাব দেওয়ার কিছু নেই। ১৮ বছর ধরে খেলছি, এত সহজে ফোকাস সরার কথা না। গত কিছুদিন আমি নিজেই অনুশীলনের চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

জিম্বাবুয়ে সিরিজের শেষ ম্যাচে হ্যামেস্ট্রিংয়ে চোট পেয়েছিলেন মাশরাফি। ওই ইনজুরি এখনও ভোগাচ্ছে তাকে। ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে ভালো বোলিং করলেও খেলতে হয়েছে ইনজুরি নিয়েই। মাশরাফির কথায়, ‘জিম্বাবুয়ে সিরিজের চোটটা এখনও আছে। ৩ উইকেট পেয়েছি বলে যে একেবারে সেরা অবস্থানে আছি, তা নয়। শারীরিকভাবে জিম্বাবুয়ে সিরিজের চেয়ে খুব একটা ভালো অবস্থানে নেই।’