বিপিএলে স্থানীয়দের পারফরম্যান্স উপভোগ করছেন রোডস

স্টিভ রোডসতিনটি করে ওয়ানডে ও টেস্ট খেলতে ফেব্রুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডে যাবে বাংলাদেশ। এই সফরের আগে বিপিএল দিয়ে নির্বাচকদের নজর কাড়ার সুযোগ পাচ্ছেন খেলোয়াড়রা। কিন্তু টি-টোয়েন্টির পারফরম্যান্স দিয়ে এই সফরের জন্য কাউকে বিচার করতে চান না স্টিভ রোডস। যদিও বিপিএলে স্থানীয় খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স উপভোগ করছেন বাংলাদেশের কোচ।

প্রথমবার বিপিএল সামনে থেকে দেখছেন রোডস। বাংলাদেশের এই ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট নিয়ে তার মূল্যায়ন, ‘এখন পর্যন্ত আমার কাছে এটা রোমাঞ্চকর টুর্নামেন্ট। ভালো ক্রিকেট হচ্ছে এখানে। উইকেটও ভালো। কিন্তু মাঝেমধ্যে খারাপ উইকেট দেখা গেলেও সেটা টুর্নামেন্টকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলছে, তখন হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হচ্ছে।’

খানিকটা কথা এগোতেই তার বক্তব্যে উঠে এলো স্থানীয় খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স, ‘আমাদের নিজেদের খেলোয়াড়দের নিয়ে বলতে চাই। আমার মনে হয় তারা একটু উত্থান পতনের মধ্যে যাচ্ছে। বেশ কয়েকজন বোলার ভালো করছে, বিশেষ করে তাসকিন ও শফিউলসহ অন্যরা দারুণ। একই সঙ্গে সব স্পিনাররা ভালো করছে, আমাদের স্পিন কতটা সমৃদ্ধ সেটা বোঝা যাচ্ছে।’

স্থানীয় ব্যাটসম্যানদের মধ্যে লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিমের কথা বললেন রোডস, ‘ব্যাটসম্যানরাও ভালো করছে। আগের ম্যাচে লিটন দারুণ এক ইনিংস খেলেছে। মিরপুরে রান তাড়া করতে সফল এক ইনিংস খেলেছে মুশফিক।’ বিদেশি তারকা ক্রিকেটারদের ভিড়ে স্থানীয়দের জ্বলে ওঠার সুযোগ কম মনে করেন এই ইংলিশ কোচ, ‘স্থানীয় খেলোয়াড়দের জন্য ভালো খেলা সবসময় সহজ নয়, বিদেশি তারকা ক্রিকেটারদের কারণে মাঝেমধ্যে তারা খুব বেশি সুযোগও পায় না। আশা করি টুর্নামেন্টের শেষ দিকে আরও ভালো কিছু দেখব, সেটা হবে সত্যিই দারুণ।’

বিপিএলের পারফরম্যান্স দিয়ে খেলোয়াড়দের সামর্থ্য মূল্যায়ন করতে চান না রোডস। তার ব্যাখ্যা, ‘বিপিএলে খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স নিয়ে আমাদের খুব বেশি ভাবনা থাকা উচিত মনে করি না আমি। এটা পঞ্চাশ ওভারের থেকে একেবারে ভিন্ন এক ফরম্যাট। আর সম্প্রতি ওয়ানডেতে আমরা বেশ ভালো করেছি। তাই আমাদের প্রত্যেক খেলোয়াড়ের কাছে ভালো কিছুর প্রত্যাশা করছি না। বিশ্বকাপের দল নির্বাচনে এটা খুব বেশি প্রভাব রাখবে না। কিন্তু যদি ভালো খেলে কেউ সেটা তাদের জন্য ক্ষতিকর হবে না, বরং ভালোই হবে।’

বিপিএল শেষ হবে ৮ ফেব্রুয়ারি। তারপর ১৩ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে নিউজিল্যান্ড সিরিজ। এর আগে ১০ ফেব্রুয়ারি একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি খেলেই ওয়ানডে ফরম্যাটে লড়াই। প্রস্তুতিটা যথেষ্ট নয় স্বীকার করলেন রোডস, ‘বিপিএল খেলে একবারে নিউজিল্যান্ডে গিয়ে ওয়ানডে খেলা, আদর্শ প্রস্তুতি হবে না বলা যায়। কিন্তু আমরা কী করতে পারি, এই টুর্নামেন্টও চমৎকার। এটা তো আর অন্য সময় হওয়ার সুযোগ নেই। আমরা যারা জাতীয় দলের সঙ্গে আছি তারা বুঝি এবং মানিয়ে নেব।’

তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডের প্রস্তুতি নিতে হবে কম সময়ে। কিন্তু তারপরও আমরা আমাদের সেরাটা দেবো এবং জেতার জন্য খেলব।’ তিন ওয়ানডে শেষ হওয়ার পর টেস্টের আগে এক সপ্তাহের মতো সময় পাবে বাংলাদেশ। প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য সেটা যথেষ্ট মনে করেন রোডস, ‘টেস্টের দল ভিন্ন। নিউজিল্যান্ডে প্রস্তুতি নেওয়ার বেশ সময় পাবে তারা।’

নিউজিল্যান্ড সফর শেষে দেশে ফিরবে বাংলাদেশ। তারপর প্রস্তুতি নেবে বিশ্বকাপের। এর আগে মে মাসে আয়ারল্যান্ডে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে একটি ত্রিদেশীয় সিরিজ আছে তাদের। ইংল্যান্ডে বিশ্বকাপ হওয়ার আগে আয়ারল্যান্ডের এই সিরিজকে সেরা প্রস্তুতি মনে করছেন রোডস, ‘আয়ারল্যান্ডে খেলতে যাওয়ার আগে মিরপুরে ক্যাম্প হবে আমাদের। আয়ারল্যান্ড সিরিজ দিয়ে আমরা ইংল্যান্ডে বিশ্বকাপের জন্য ভালোভাবে প্রস্তুত থাকব মনে করি। আশা করি নিউজিল্যান্ডের কঠিন কন্ডিশনে জয়ের স্বাদ পাব। আর সেখানে ভালো ফল পেলে বুঝতে পারব ওয়ানডেতে ঠিক পথে যাচ্ছি আমরা।’