উইকেট নিয়ে ধোঁয়াশা!

সমারসেট কাউন্টি ক্রিকেট গ্রাউন্ডের উইকেট নিয়ে বিভ্রান্ত মাশরাফির দলইংল্যান্ডে খুব বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ হয় না বাংলাদেশের। ক্রিকেটের আদিভূমির উইকেট সম্পর্কেও তাই তেমন ধারণা নেই খেলোয়াড়দের। সোমবারের ভেন্যু টন্টনে তো আগে খেলার সুযোগই হয়নি। তাই উইকেট কেমন হবে তা নিয়ে সংশয়ে টিম ম্যানেজমেন্ট।

বাংলাদেশের কোচ স্টিভ রোডস ইংরেজ হলেও উইকেট, টিম কম্বিনেশন বা ম্যাচের পরিস্থিতি মূল্যায়নে সমস্যা হচ্ছে। ৫ জুন ওভালে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড ম্যাচের কথাই ধরা যাক। সেদিন ধারাভাষ্যকারদের কথা শুনে মেসেজ পাঠানো হয়েছিল ক্রিজে থাকা মোহাম্মদ মিঠুনকে। আর তারপরই ছন্দপতন। পেস সহায়ক উইকেটে ২৭০/২৮০ রান হতে পারতো ভালো সংগ্রহ। বাংলাদেশ যেভাবে ব্যাট করছিল তাতে মনে হচ্ছিল রানটা হয়েই যাবে। কিন্তু লক্ষ্যের বেশ আগেই থেমে যায় মাশরাফির দল।

পাঁচ নম্বরে নেমে আস্থার সঙ্গে খেলছিলেন মিঠুন। পর পর দুই ওভারে বাউন্ডারি মেরে রানের চাকা সচল রেখেছিলেন তিনি। কিন্তু বিপত্তি বাধলো ৩৭ ওভার শেষে। কোচ-অধিনায়কের সঙ্গে পরামর্শ না করে, শুধু ধারাভাষ্যকারের কথায় ‘প্রভাবিত’ হয়ে মেরে খেলার জন্য মেসেজ পাঠানো হয় মিঠুনের কাছে। লক্ষ্য স্কোরটা যেন ৩০০ রান বা তার বেশি হয়। কিন্তু পরের ওভারের প্রথম বলেই মারতে গিয়ে মিঠুন আউট! এরপর আড়াই শ’ রানও হয়নি, ২৪৪ রানে অলআউট হয়ে ২ উইকেটে হেরে গেছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট সূত্রে জানা গেছে, সেদিনের ঘটনার জন্য দলের অনেকেই সেই মেসেজদাতার ওপর বিরক্ত। তাকে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, অধিনায়ক আর কোচের পরামর্শ ছাড়া মাঠে যেন কোনও মেসেজ না পাঠানো হয়।

মাশরাফি নিজে অবশ্য অন্য কাউকে নয়, সেদিনের ব্যর্থতার জন্য নিজেদের দায়ী করছেন। রবিবার সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের অধিনায়ক বলেছেন, ‘আমাদের ব্যর্থতাও কম নয়। ওভালে প্রায়ই ৩০০ প্লাস রান হয়। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আমাদের ব্যাক অফ মাইন্ডে সেটাই ছিল। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আমাদের হিসেব ঠিক ছিল। নিউজিল্যান্ডের সঙ্গেও আমরা ঠিক পথে এগোচ্ছিলাম। মিঠুন-মাহমুদউল্লাহ যখন ব্যাট করছিল, তখন মনে হচ্ছিল ২৭০ করতে সমস্যা হবে না। যারা দীর্ঘক্ষণ ব্যাট করে তাদের বোঝা উচিত সেই উইকেটে কত রান হতে পারে। অনেক সময় বাইরে থেকে মেসেজ আসে। কিন্তু ধারাভাষ্যকারদের কমেন্ট শুনে উইকেটের চরিত্র বোঝা সহজ নয়। ধারাভাষ্যকার তো বলবেই এটা মনে হচ্ছে, ওটা মনে হচ্ছে। কিন্তু যারা মাঠে থাকে তাদেরই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’

উইকেট পর্যবেক্ষণকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে মাশরাফির যুক্তি, ‘এটা আসলে একটা ম্যাচের হার-জিত নির্ধারণ করে দেয়। নিউজিল্যান্ড ম্যাচে আমরা জয়ের সুযোগ হাতছাড়া করেছি। সেদিন উইকেট ঠিকমতো অ্যাসেস করতে পারলে ২৭০ রান হয়ে যেতো। আসলে এই অ্যাসেসমেন্টটা খুব প্রয়োজন। টন্টনের উইকেট নিয়ে বেশ বিভ্রান্তি আছে। শুরুতে শুনেছি উইকেটে ঘাস থাকবে। আবার কেউ কেউ বলছেন ফ্ল্যাট উইকেট হবে। তবে উইকেট যেমনই হোক, যে দল দ্রুত উইকেট বুঝতে পারবে, তাদের জয়ের  সম্ভাবনা বেশি।’