দল হিসেবে খেলতেই পারলো না বাংলাদেশ

c54ca63323076388509d326956b31e05-5bde80f06cd24বাংলাদেশ দলকে ধারাবাহিক এমন শ্রীহীন অনেক বছর পর দেখলাম। কেউ কারও কাজে আসলো না, তিনটি বিভাগের কোনোটিই অপরটিকে তাদের নৈপুণ্য দিয়ে আগলে রাখতে পারলো না। এমন হতাশাজনক ব্যাটিং, বোলিং বা ফিল্ডিং এই সিরিজে দেখবো তা ছিল চিন্তার বাইরে।

তিন ম্যাচের ৬টি সেশনের কোনও একটিতে এককভাবে ডোমিনেট করতে পারেনি বাংলাদেশ, কোনও ম্যাচে বল বা ব্যাট হাতে দারুণ কোনও সূচনাও দেখা গেলো না। তবে বোলিংয়ে খুব একটা ভালো করবে এমন আশা আমার তেমন ছিল না, চোখে লাগার মতো পারফরম্যান্স এক তাইজুলেরই ছিল। চূড়ান্ত ১৪ জনের দলে তাসকিন আহমেদকে রেখে একটি ম্যাচেও তাকে মাঠে না খেলানোর যুক্তিটি বোধগম্য হয়নি, তাহলে ভারত সফররত দল থেকে তাকে ডেকে আনার কোনও সঙ্গত কারণ খুঁজে পাই না। আশা করি এর একটা ব্যাখ্যা টিম ম্যানেজমেন্ট জনগণকে জানাবে।

শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানদের ধারাবাহিক ব্যাটিংয়ের প্রশংসা করতে হয়, তাদের প্রথম ৬ জন ব্যাটসম্যান এই সিরিজে ছিলেন যথেষ্ট উজ্জ্বল, তাদের দ্রুত সাজঘরে ফেরত পাঠানো তো অনেক দূরের কথা, আমাদের মূল পেস বোলাররা কোনও পর্যায়েই তাদের ওপর বিন্দুমাত্র নিয়ন্ত্রণ বা প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি। শুধুমাত্র পার্টটাইমার সৌম্য ছিলেন এর কিছুটা ব্যতিক্রম।

একই মাঠে তিন ম্যাচ হওয়াতে সেই মাঠে পিচের আচরণের বৈশিষ্ট্য ও আউটফিল্ডের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার কাজটা অনেক সহজ ছিল। কিন্তু পিচে টিকে থাকার কাজটা আমাদের ব্যাটসম্যানদের কাছে মনে হলো অনেক দুরুহ একটা কাজ। কিন্তু লঙ্কান ব্যাটসম্যানরা সেটা হেসেখেলে করলো তাদের চোখের সামনেই। ব্যাটিং ব্যর্থতা ছিল বড়ই লজ্জার এই সিরিজে, তামিম-রিয়াদরা এমন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে এভাবে কোণঠাসা হবেন কল্পনাও করিনি।

যারা নিয়মিত একাদশে সুযোগ পান না, সেই মিঠুন, সাব্বির, মোসাদ্দেকদের কেউই ম্যাচ জেতানোর মতো কোনও নৈপুণ্য দিয়ে নিজেকে বা দলকে কিছু দিতে পারলেন না। প্রাপ্ত সুযোগের এমন অপচয় যে তারা করলেন, সেটিও তাদের বোধগম্য হয়েছে কিনা সন্দেহ আছে। বিশ্বকাপে দীর্ঘদিন কাটিয়ে আসা একটা দল এই সিরিজে একটি ক্রিকেট টিম হিসেবে খেলতেই পারলো না তা দেখার জন্য আমি অন্তত প্রস্তুত ছিলাম না। কিছু ব্যক্তিগত রুটিন সাফল্য ছাড়া ব্যাট বল হাতে কিছুই অর্জিত হয়নি। বরঞ্চ খোয়াতে হয়েছে প্রায় সবকিছুই। ভারপ্রাপ্ত নতুন অধিনায়ক ও কোচ দলকে কিছুই উপহার দিতে পারলেন না।

যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। একটি বাজে সময়ের পর আমাদের ক্রিকেট আবারও ঘুরে দাঁড়াবে বলে আমি বিশ্বাস করি। খেলোয়াড়দের তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে আরও সচেতন থাকা উচিত ও পেশাদারিত্বের লেভেলটা শুধু লেবেল হিসেবে গায়ে ব্যবহার না করে মাঠে তার প্রয়োগের সক্ষমতায় মনোযোগী হওয়াটা হবে বুদ্ধিমানের কাজ। সুসময়ের সঙ্গে সঙ্গে দুঃসময়েও আমাদেরকে ক্রিকেটারদের পাশে থাকতে হবে, যাতে তারা অতি দ্রুত তাদের স্বাভাবিক নৈপুণ্য দিয়ে মাঠ রাঙাতে পারেন।