আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে হাশিম আমলার অবসর

হামিশ আমলাদক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটে বাজছে বিদায়ের সুর। দিনকয়েক আগে টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় বলেছেন ডেল স্টেইন। আর এবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সব ফরম্যাট থেকেই অবসরের ঘোষণা দিলেন হাশিম আমলা। দক্ষিণ আফ্রিকার জার্সিতে আর দেখা যাবে না এই ব্যাটসম্যানকে।

১৫ বছরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিলেন আমলা। অবশ্য ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলা চালিয়ে যাবেন তিনি। ৩৬ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান প্রোটিয়াদের জার্সিতে সব ফরম্যাট মিলিয়ে ৩৫৯ ম্যাচে করেছেন ১৮ হাজারের উপরে রান, আছে ৫৫টি সেঞ্চুরি।

অবসরের ঘোষণায় আমলা বলেছেন, ‘সবার প্রথমে, সব কৃতিত্ব ও মহিমা মহান সর্বশক্তিমানের, যিনি আমাকে প্রোটিয়াদের হয়ে খেলার সুযোগ করে দিয়েছেন। এই ভ্রমণটা ছিল আনন্দ ও গৌরবে পরিপূর্ণ। এই সফরে আমি অনেক কিছু শিখেছি, অনেক বন্ধু তৈরি হয়েছে, আর সবচেয়ে বড় বিষয় হলো একে অন্যের সঙ্গে ভালোবাসা ভাগাভাগি করেছি।’

বিদায়বেলায় সবার প্রতি ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেছেন তিনি, ‘আমি ধন্যবাদ দিতে চাই আমার বাবা-মাকে, যারা আমাকে ভালোবাসা ও সমর্থন দিয়েছেন। একই সঙ্গে এই দুর্দান্ত ভ্রমণে সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার পরিবার, বন্ধু ও এজেন্ট, আমার সতীর্থ এবং সাপোর্ট স্টাফের প্রত্যেক সদস্যকে।’

দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় তুলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ইতি টেনে দিলেন আমলা। মাঠের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের সঙ্গে বিনয়ী আমলা ভক্ত হৃদয়ে আলাদা জায়গা করে নিয়েছেন। প্রোটিয়াদের সাফল্যের পথে ব্যাটে তার পারফরম্যান্স ছিল এককথায় অসাধারণ। যদিও বিশ্বকাপের আগে ও টুর্নামেন্ট চলার সময় বাজে সময় পার করেছেন এই ব্যাটসম্যান। এরপরও আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটা রাঙানো থাকলো হার না মানা ৮০ রানের ইনিংস দিয়ে। বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চেস্টার-লি-স্ট্রিটের ম্যাচটিই হয়ে থাকলো তার শেষ ম্যাচ।

আমলার ব্যাটেই দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথমবার দেখেছে ট্রিপল সেঞ্চুরি। প্রোটিয়াদের একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে টেস্টে ট্রিপল সেঞ্চুরি (৩১১*) করেছেন তিনি। একই সঙ্গে টেস্টে ইংল্যান্ড, ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিনিই এখন পর্যন্ত প্রোটিয়াদের হয়ে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংসের মালিক।

২০০৪ সালে কলকাতায় ভারতের বিপক্ষে তার টেস্ট অভিষেক। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলেছেন সবশেষ টেস্ট। ১৫ বছরের ক্যারিয়ারে ১২৪ টেস্টে ২৮ সেঞ্চুরিতে করেছেন ৯ হাজার ২৮২ রান।

ওয়ানডেতে অভিষেক হয়েছেন অনেক দেরিতে। টেস্ট অভিষেকের প্রায় চার বছর পর খেলেন প্রথম ওয়ানডে। অথচ সময়ের সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে বিবেচিত বিরাট কোহলির চেয়েও দ্রুতগতিতে রান তুলেছেন এই ওপেনার! এখন পর্যন্ত ওয়ানডেতে দ্রুততম ২ হাজার, ৩ হাজার, ৪ হাজার, ৫ হাজার, ৬ হাজার ও ৭ হাজার রানের রেকর্ড তার দখলে। ১৮১ ম্যাচে ২৭ সেঞ্চুরিতে ৫০ ওভারের ফরম্যাটে তার রান ৮ হাজার ১১৩। আর ৪৪ টি-টোয়েন্টিতে নামের পাশে যোগ করেছেন ১ হাজার ২৭৭ রান।