প্রথম দিনটা হতাশায় কাটলো বাংলাদেশের

আসগর আফগানের ব্যাটে ভুগেছে বাংলাদেশ (ফাইল ছবি)চট্টগ্রামে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের একমাত্র টেস্টে স্পিনারদের লড়াইয়ে জমজমাট শুরুর প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু স্বাগতিক স্পিনাররা শুরুটা ভালো করলেও রহমত শাহর সেঞ্চুরি ও আসগর আফগানের হাফসেঞ্চুরিতে তাদের জন্য হতাশায় কাটলো প্রথম দিন। ৫ উইকেটে ২৭১ রানে দিনের খেলা শেষ করেছে আফগানরা।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথমবার টেস্টে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। দুই দলই স্পিনকে মূল অস্ত্র বানিয়ে মাঠে নেমেছে। স্বাগতিকরা কোনও পেসারকে না নিয়ে মাঠে নামে; স্পিন আক্রমণ সাজায় সাকিব আল হাসান, তাইজুল ইসলাম, মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাঈম হাসানকে নিয়ে। তাইজুলের স্পিনে শুরুটা দারুণই হয়েছিল। কিন্তু রহমত শাহ ও আসগর আফগানের ব্যাটে দিনটা শেষ হয়েছে হতাশায়।

বাংলাদেশের চার স্পিনারকে বেশ দেখেশুনে খেলতে থাকেন দুই আফগান ওপেনার ইহসানউল্লাহ ও ইব্রাহিম জাদরান। অবশেষে ১৩তম ওভারে এই প্রতিরোধ গড়া জুটি ভাঙেন তাইজুল। ইহসানকে ৯ রানে বোল্ড করেন বাংলাদেশি স্পিনার। ১৯ রানে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। আফগান ওপেনারকে ফিরিয়ে তৃতীয় বাংলাদেশি হিসেবে ক্যারিয়ারের ১০০ উইকেটের মাইলফলকে পৌঁছান তাইজুল। এরপর আরও এক ওপেনার তার শিকার হন। ৬৯ বলে ২১ রান করে লং অফে মাহমুদউল্লাহর ক্যাচ হন ইব্রাহিম। রহমতের সঙ্গে তার জুটি ছিল ২৯ রানের।

মাহমুদউল্লাহর উইকেট উদযাপনপ্রথম সেশন শেষ হওয়ার ঠিক আগে নাঈম হাসানের বদলে বল হাতে নিয়ে জাদু দেখান মাহমুদউল্লাহ। নিজের চতুর্থ বলেই উইকেট পান তিনি। হাসমতউল্লাহ শহীদীকে স্লিপে সৌম্যর ক্যাচ বানান এই স্পিনার। ৩২ বলে ১৪ রান করেন আফগান ব্যাটসম্যান। মাহমুদউল্লাহর উইকেট উদযাপনে শেষ হয় প্রথম সেশনের খেলা। এই জুটিও ছিল ২৯ রানের। ৩২.৪ ওভারে ৩ উইকেটে ৭৭ রানে লাঞ্চে যায় আফগানিস্তান।

দ্বিতীয় সেশনে রহমতের সঙ্গে ক্রিজে নামেন আসগর। ৪২তম ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজের দ্বিতীয় বলে একটি রান নিয়ে তৃতীয় হাফসেঞ্চুরি পূরণ করেন রহমত, ৮৫ বলে ৩ চার ও ২ ছয়ে। তার সঙ্গে ক্রিজে শক্ত অবস্থান নেন আসগর। ৬৫তম ওভারে তার বিরুদ্ধে মিরাজের এলবিডব্লিউ আবেদনে আম্পায়ার আউট দেন। কিন্তু আফগান ব্যাটসম্যান রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান ৪২ রানে।

সেঞ্চুরি করেছেন রহমতপ্রথম সেশনে ৩ উইকেট নেওয়া বাংলাদেশ দ্বিতীয় সেশন শেষ করে হতাশায়। চা বিরতিতে যাওয়ার আগে এই সেশনে কোনও উইকেট পাননি বোলাররা। লাঞ্চের পর ক্রিজে নেমে রহমতের সঙ্গে পুরো সেশন কাটিয়ে দেন আসগর। দুজনের ১১৪ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে এই সেশনের পুরোটা ছিল সফরকারীদের। রহমত ৯৭ ও আসগর ৪৮ রানে অপরাজিত ছিলেন, ৩ উইকেটে ১৯১ রানে চা বিরতিতে যায় আফগানরা।

দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই ব্রেক থ্রু আনেন নাঈম হাসান। তার স্পিনেই আফগানিস্তানের ব্যাটিং লাইনে জোড়া আঘাত হানে বাংলাদেশ। প্রথম ৭ ওভারে ২৪ রান দিয়ে উইকেটশূন্য থাকা এই অফ স্পিনার শেষ সেশনের প্রথম ওভারে আউট করেছেন রহমত ও মোহাম্মদ নবীকে। ১৮৬ বলে আফগানিস্তানের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান হওয়ার পরের বলেই রহমত ক্যাচ দেন সৌম্যকে, ভাঙে ১২০ রানের শক্ত জুটি। তার ১৮৭ বলে ১০২ রানের ইনিংসে ছিল ১০ চার ও ২ ছয়। ওই ওভারের শেষ বলে নবীকে শূন্য রানে বোল্ড করেন নাঈম।

শুরুটা ভালো করলেও তাইজুল দুই সেশন থাকলেন উইকেট শূন্যএই ধাক্কা তারা কাটিয়ে উঠেছে আসগর ও আফসার জাজাইর জুটিতে। ৯৬ বলে ২ চার ও ১ ছয়ে দ্বিতীয় হাফসেঞ্চুরি করা আসগর পঞ্চাশ ছাড়ানো জুটি গড়েছেন আফসারকে সঙ্গে নিয়ে। তাদের অবিচ্ছিন্ন জুটি ৭৪ রানের। ১৬০ বলে ৩ চার ও ২ ছয়ে ৮৮ রানে খেলছিলেন আসগর, ৩৫ রানে টিকে ছিলেন আফসার।

বাংলাদেশের পক্ষে দুটি করে উইকেট নেন তাইজুল ও নাঈম। অন্যটি মাহমুদউল্লাহর।