আগারওয়ালে ভুগলো বাংলাদেশ

আগারওয়ালের ডাবল সেঞ্চুরি উদযাপনশুক্রবারের খেলা শেষ হতেই যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন মুমিনুল হকরা। মায়াঙ্ক আগারওয়াল যে কম ভোগাননি তাদের! তার ২৪৩ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে রান পাহাড়ে চাপা পড়েছে বাংলাদেশ। সফরকারীদের ১৫০ রানের জবাবে প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেটে ৪৯৩ রান করে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে ভারত। ৪ উইকেট হাতে রেখে ৩৪৩ রানের লিড তাদের।

১ উইকেটে ৮৬ রানে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করে ভারত। ৪৩ রানে চেতেশ্বর পূজারা ও ৩৭ রানে আগারওয়াল মাঠে নামেন। দিনের দ্বিতীয় ওভারে টানা দুটি চার মেরে ৬৮ বলে ফিফটিতে পৌঁছান পূজারা। কিছুক্ষণ পরই তাকে থামান আবু জায়েদ রাহী। দ্বিতীয় উইকেটে আগারওয়ালের সঙ্গে ৯১ রানের জুটি গড়ে বিদায় নেন পূজারা। ৭২ বলে ৯ চারে ৫৪ রান করে বদলি ফিল্ডার সাইফ হাসানের ক্যাচ হন তিনি।

পূজারাকে ফিরিয়ে পরের ওভারে বিরাট কোহলিকেও নিজের শিকার বানান রাহী। মাত্র দুই বল ক্রিজে ছিলেন ভারতীয় অধিনায়ক। রানের খাতা না খুলে এলবিডাব্লিউ হন কোহলি। আম্পায়ার আউট না দিলেও মুমিনুল হক রিভিউ নেন এবং সফল হন।

রাহীর টানা দুই ওভারে উইকেট হারানোর ধাক্কা কাটিয়ে ভারত প্রথম ইনিংসে লিড নেয়। আগের দিন ৩২ রানে ইমরুল কায়েসের হাতে জীবন পাওয়া আগারওয়াল ফিফটি করেন ৯৮ বলে ৯টি চারে। আজিঙ্কা রাহানের সঙ্গে চতুর্থ জুটিতে লিড পায় ভারত।

৮২ রানে ফিরে যেতে হতো আগারওয়ালকে, ৪৭তম ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে এলবিডাব্লিউ হন তিনি। কিন্তু রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান ভারতীয় ওপেনার। তাতে আর কোনও উইকেট না হারিয়ে ৩৮ রানে এগিয়ে থেকে প্রথম সেশনের খেলা শেষ করে ভারত। লাঞ্চে যাওয়ার আগে তাদের স্কোর ছিল ৩ উইকেটে ১৮৮ রান।

আউট হওয়ার পর আগারওয়ালকে অভিনন্দন জানান মুমিনুল৩২ ও ৮২ রানে পাওয়া জীবন কাজে লাগিয়ে লাঞ্চের পরই সেঞ্চুরি করেন আগারওয়াল। ভারতীয় ওপেনার ১৮৩ বলে ১৫ চার ও এক ছয়ে তৃতীয় সেঞ্চুরি করেন। দ্বিতীয় সেশনে তার সঙ্গে দারুণ জুটি গড়ার পথে হাফসেঞ্চুরি করেন রাহানেও। তাদের অপরাজিত ১৮৪ রানের জুটিতে ভারত ১৫৩ রানে এগিয়ে থেকে চা বিরতিতে যায়। আগারওয়াল ১৫৬ ও রাহানে ৮২ রানে অপরাজিত ছিলেন।

চা বিরতির পর মাঠে নেমেই উইকেট উদযাপন করে বাংলাদেশ। শেষ সেশনের দ্বিতীয় ওভারেই আগারওয়াল ও রাহানের শক্ত জুটি ভাঙেন রাহী। ডিপ পয়েন্টে তাইজুল ইসলামের ক্যাচ হন রাহানে, বিচ্ছিন্ন হয় ১৯০ রানের জুটি। ১৭২ বলে ৯ চারে ৮৬ রানে রাহীর চতুর্থ শিকার হন তিনি।

রাহানে ফেরার পর ডাবল সেঞ্চুরি করতে বেশি সময় নেননি আগারওয়াল। দক্ষিণ আফ্রিকার পর বাংলাদেশের বিপক্ষেও প্রথম টেস্ট ম্যাচে দুইশর দেখা পান তিনি। ৯৯তম ওভারের পঞ্চম বলে মিরাজকে ছয় মেরে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি ৩০৩ বল খেলে ২৫ চার ও ৫ ছয়ে।

আগারওয়াল ও রাহানের জুটিতে লিড নেয় ভারতদুইশ করে আরও মারমুখী হয়ে ওঠেন আগারওয়াল। তবে ১০৮তম ওভারে মিরাজের দ্বিতীয় বলে একটি ছয় মারার পর আরও একবার সীমানাছাড়া করতে চেয়েই ভুল করেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ডিপ মিডউইকেটে রাহী তার চমৎকার ক্যাচ ধরেন। শেষ হয় ৩৩০ বলে ২৮ চার ও ৮ ছয়ে সাজানো দুর্দান্ত এক ইনিংসের। ক্যারিয়ার সেরা ২৪৩ রান করেন আগারওয়াল। রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে তার জুটি ছিল ১২৩ রানের।

ঋদ্ধিমান সাহা বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ১২ রান করে এবাদত হোসেনের বলে বোল্ড হন তিনি। উমেশ যাদবের সঙ্গে ৩৯ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ার পথে ৭২ বলে ফিফটি করেন জাদেজা। ৬০ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি, আর ২৫ রানে খেলছিলেন উমেশ।

বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন রাহী। একটি পান মিরাজ।