পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা এখন কাঁপছে গোলাপি জ্বরে। নৈশালোকে নেশা ধরানো টেস্ট ম্যাচ। নন্দনকাননে হওয়া এই টেস্ট ম্যাচে বিরাট কোহলি ও মুমিনুল হক একই কাতারে! আগামীকাল শুক্রবার ক্রিকেটের নন্দনকানন ইডেন গার্ডেনসে শুরু হবে রোমাঞ্চ জাগানিয়া এই টেস্ট, যার শিহরণ এরই মধ্যে স্পর্শ করেছে স্বাগতিক ও সফরকারী দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে। শুধু তাই নয়, ক্রিকেটারদের ছাড়িয়ে এই ম্যাচের উত্তেজনা গোটা শহরের আনাচে কানাচে। ভারতের প্রথম দিবা-রাত্রির টেস্ট নিয়ে কলকাতা জুড়ে উন্মাদনা চোখে পড়ার মতো।
শহরের আলোকসজ্জা নিয়ে আগের দিন কথা হয়েছিলো ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গলের যুগ্ম সচিব দেবব্রত দাসের সঙ্গে। তিনি জানিয়েছিলেন, ‘সন্ধ্যা নামলেই দেখবেন কী করা হয়েছে! আসলে আমি মুখে বললে আপনার বিশ্বাস হবে না। আশপাশের এলাকা, শহীদ মিনার সব গোলাপি রঙয়ের আলোতে জ্বলবে।’ গতকাল সন্ধ্যা নামার পরই বোঝা গেলো একটুও বানিয়ে বলেননি দেবব্রত দাস। পুরো শহরই তো গোলাপি।
গোলাপি বলের টেস্ট ঘিরে ইডেন গার্ডেনস সেজেছে আলাদাভাবে। বিসিসিআই ও সিএবি প্রেসিডেন্ট সৌরভ গাঙ্গুলীর নির্দেশনায় করা হয়েছে বিশেষ গ্রাফিতি। স্ট্রিট ক্রিকেটার থেকে ভারতের জাতীয় দলে উঠে আসার বিভিন্ন ধাপ তুলে ধরা হয়েছে সেখানে। এই গ্রাফিতিগুলো ইডেনকে করে তুলেছে আরও চাকচিক্যময়।
ধর্মতলা, রবীন্দ্র সদন প্রাঙ্গন- কোথায় নেই গোলাপি রঙ! এমন কী হুগলি নদীতে চলন্ত বিশেষ একটি লঞ্চেও দেখা গেছে হোলাপির আভা। কলকাতায় দিবা-রাত্রির টেস্ট ম্যাচের সময় হাওড়া ব্রিজ থেকে বিদ্যাসাগর সেতু পর্যন্ত নদীতে ভাসবে এই লঞ্চটি। গাঙ্গুলীও টুইটারে গোলাপি বলের বিভিন্ন স্থাপনার ছবি টুইটারে পোস্ট করেছেন। সেখানে লিখেছেন, ‘এর চেয়ে ভালো আর কিছু হতে পারে না।’
এ তো গেলো গোলাপিময় শহরের কথা। মোড়ে মোড়ে আড্ডা চলছে এই টেস্ট নিয়ে। বাসে, ট্রামে, ট্রেনেও চলছে এনিয়ে আলোচনা। কেউবা টিকিট না পাওয়ার যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন।
এই ঐতিহাসিক টেস্টের সমস্ত আয়োজন বিসিসিআই এবং সিএবি ও স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বয়ে করা হয়েছে। আয়োজনটা ঠিকমতো করতে পেরে দারুণ রোমাঞ্চিত গাঙ্গুলী, ‘আমি ভীষণ রোমাঞ্চিত, দেখুন চারদিনের টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। টেস্টে ম্যাচে এমনটা হচ্ছে ভাবা যায়?’ এবার দেখার পালা, নতুন ‘পিঙ্ক সিটি’র এই মুগ্ধতা শেষ পর্যন্ত ম্যাচেও ছড়ায় কিনা!