মুশফিকের অবশ্য এমন তকমা পেতে নিতান্তই অনীহা! একে তো ৩৬০ ডিগ্রি খেতাবের আসল মালিক ওটা জুটিয়েছেন বহুদিনের ধারাবাহিক আক্রমণাত্মক ক্রিকেটে। তারওপর ক্রিকেটের নির্দয় চরিত্রটা যে তার জানা! বিশেষ করে বাংলাদেশে, যেখানে ৩৬০ থেকে শূন্য ডিগ্রিতে নেমে আসতে দুই ম্যাচও লাগে না!
কোচের দেওয়া খেতাব কতটা অনুপ্রাণিত করে, এমন প্রশ্নের জবাবে দোনোমনো করে মুশফিক বললেন, ‘ভাই, দুই ম্যাচও লাগে না ৩৬০ ডিগ্রি থেকে শূন্য ডিগ্রিতে আসতে। সেটা আমি কখনোই বিশ্বাস করি না। নিজেকে ওইরকম খেলোয়াড়ও মনে করি না। সবসময় মনে করি আমার খেলাটার দিন দিনে উন্নতি করা যায়। উইকেট খুব ভালো। চাপমুক্ত হয়ে খেলতে পারলে মাঠের চারপাশে খেলা সম্ভব। এসব উইকেটে ঝুঁকি নিয়ে খেলা যায়। কৃতিত্ব তাদের দেয়া উচিত, যারা ধারাবাহিকভাবে খেলছে। আশা করবো পরের ম্যাচে যেন রানে ফিরতে পারি।’
মঙ্গলবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে রাজশাহীর বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস খেলেছেন মুশফিকুর রহিম। ওইদিন ৫১ বলে ৯ চার ও ৪ ছক্কায় ৯৬ রানের ইনিংসটি সাজানোর পথে ২২ গজ জুড়েই খেলেছেন চোখ ধাঁধানো সব শট। এমন ইনিংস দেখে খুলনার কোচ জেমস ফস্টার মুশফিককে প্রশংসার বন্যায় ভাসিয়ে দেন, ‘মুশফিক অত্যন্ত দক্ষ একজন ক্রিকেটার। সে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে বোলারদের ওপর চড়াও হতে পারে। তার হাতে প্রচুর অপশন আছে। মুশফিক একজন ৩৬০ ডিগ্রি খেলোয়াড়, পুরো মাঠ জুড়েই সে খেলতে পারে।’
দলীয় ৫ রানে দুই উইকেট হারানো খুলনাকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তোলে মুশফিক-রুশো জুটি। রুশো ৪২ রান করে আউট হলেও অন্যপ্রান্তে অবিচল মুশফিক খেলেন ৯৬ রানের ওই ইনিংস। চার রানের জন্য পাননি টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। যদিও সেটি মুশফিকের মাথার মধ্যে গাঁথা নেই, ‘সেটা তো কতদিন আগে চলে গেছে। আমিও ভুলে গেছি। এখন আপনারা মনে করিয়ে দিলেন। দলের জয়ে অবদান রাখার চেষ্টা থাকে সবসময়। দলের অধিনায়ক হিসেবে আমি সবসময় সেটা করতে চাই।’
টেস্ট ও ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি থাকলেও নেই কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে। এই আসরে কি তাহলে সেঞ্চুরি হচ্ছে? সেঞ্চুরিটা মুশফিকের কাছে গৌণ, ‘সেঞ্চুরির চেয়ে আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ম্যাচ উইনিং পারফরম্যান্স। সেটা হতে পারে ১৩০, হতে পারে ২০ রানে নট আউট, হতে পারে ৮০ রানের ইনিংস। আমার কাছে ম্যাচ জেতানো ইনিংসই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’