‘রোহিত মেরে মেরে ভর্তা বানিয়ে দিয়েছে’

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে রোহিত শর্মার একটি শট১৪ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে প্রাপ্তির আনন্দে যেমন নেচেছেন, তেমনি ব্যর্থতার লজ্জায় লুকিয়েছেন মুখ। ২০১১ সালে ক্রিকেটকে বিদায় জানানো শোয়েব আখতার স্মৃতির সাগরে ডুব মারলে মনে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি নাড়া দেয় ২০০৩ ‍ওয়ানডে বিশ্বকাপ। দক্ষিণ আফ্রিকার সেই টুর্নামেন্টে তার বলে শচীন টেন্ডুলকারের আপার কাটে মারা ছক্কা এখনও চোখে লেগে আছে অনেকের। শোয়েবের আগে মন খারাপ হলেও এখন হওয়ার কথা নয়। শুধু তিনি একাই তো আর নন, অনেক পেসারই খাচ্ছেন আপার কাটের ছক্কা। আর এই জায়গায় তিনি সবচেয়ে বেশি কৃতজ্ঞ থাকবেন রোহিত শর্মার কাছে!

সেটা কিভাবে? সীমিত ওভারের ক্রিকেটে তার চেয়ে ভয়ংকর ব্যাটসম্যান ক’জনই আর আছেন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম দুই ওয়ানডেতে সুবিধা করতে না পারলেও সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ঠিকই সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে হলেন জয়ের নায়ক। বেঙ্গালুরুর এই ম্যাচেই মিচেল স্টার্কের গতিঝড়ের বিরুদ্ধে মেরেছেন দেখার মতো এক ছয়। আপার কাটে মারা ছক্কাটি দেখে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দলের সাবেক খেলোয়াড় হলেও রোহিতের প্রশংসায় মেতেছেন শোয়েব।

বেঙ্গালুরুর ম্যাচে রোহিত খুব বেশি যে আগ্রাসী ছিলেন, তা নয়। ১২৮ বলে করেছেন ১১৯। তবে যতবার আক্রমণে গিয়েছেন, শটগুলো ছিল নিখুঁত ও সময়োপযোগী। শোয়েবের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের দিনগুলোতে রোহিত তখনও রোহিত হয়ে ওঠেননি, তবে বর্তমান সময়ে তার আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের সামনে যে কোনও বোলারই পাত্তা পায় না, সেটা খুব ভালো করেই জানেন সাবেক পাকিস্তানি ফাস্ট বোলারের। নিজের ইউটিউব চ্যানেলে ‘রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস’ বলেছেন, ‘রোহিত যখন ছন্দে থাকে, তখন ভালো বল না খারাপ বল, সেটা কোনও মানে রাখে না। ও অনেক সময় নিয়ে, সুন্দরভাবে সব শট খেলে। ও এমনই।’

২০০৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে শোয়েবের শর্ট বলে আপার কাটে ছয় মেরেছিলেন টেন্ডুলকার। স্টার্ককে প্রায় একইভাবে ছক্কা মেরে শোয়েবের মন খারাপ করে দেওয়ার স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছেন রোহিত। ভারতীয় ওপেনারের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের বর্ণনা ৪৪ বছর বয়সী শোয়েব দিয়েছেন এভাবে, ‘তার আগ্রাসী ব্যাটিং দেখেছেন নিশ্চয়ই। ও মেরে মেরে ভর্তা বানিয়ে দিয়েছে। মিচেল স্টার্ককে মেরেছে, এরপর কামিন্সকে। ওর মারা কাট শট আমাকে টেন্ডুলকারের ছক্কার কথা মনে করিয়ে দিয়েছে।’

এর আগেও রোহিতের আপার কাট টেন্ডুলকারের ‘বিখ্যাত’ শটের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছিল। ২০১৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের হাসান আলীর বলে ‘হিটম্যানের’ হাঁকানো ছক্কাতে খোঁজা হয়েছিল ২০০৩ সালের টেন্ডুলকারের শটের ছায়া। আইসিসির টুইটারে দুজনের শট একসঙ্গে করে একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছিল। যার ক্যাপশন ছিল, ‘২০০৩ সালের শচীন নাকি ২০১৯ সালের রোহিত- কারটা ভালো?’