১৯৮৮ সালের পর ব্রিসবেনে অস্ট্রেলিয়ার পতন

অস্ট্রেলিয়ার দুর্গ বলে পরিচিত ব্রিসবেনের গ্যাবা। অবশ্য এমনটা বলার কারণও আছে। যেখানে ১৯৮৮ সালের পর কোনও টেস্ট হারেনি অজিরা। তাই চতুর্থ ও শেষ টেস্টে স্বাগতিকদেরই এগিয়ে রাখছিলেন সবাই। কিন্তু তারুণ্যে ভর করেই সেই দুর্গের পতন ঘটিয়েছে ভারত। রেকর্ড রান তাড়ায় শেষ টেস্ট ৩ উইকেটে জিতে সিরিজটা ২-১ ব্যবধানে নিশ্চিত করেছে আজিঙ্কা রাহানের দল।

এর ফলে ১৯৮৮ সালের পর গ্যাবায় হার দেখলো অস্ট্রেলিয়া। একই সঙ্গে গ্যাবায় জয় পাওয়া প্রথম এশিয়ান দলটিও ভারত। ফলে ঐতিহাসিক জয়ের পর টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট টেবিলেও শীর্ষে উঠে গেছে ভারত। অজিরা তিনে আর নিউজিল্যান্ড দুইয়ে। 

অবশ্য শেষ দিনের পুরোটাই ছিল রোমাঞ্চে ভরা। ৩২৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ভারতের ৭ উইকেট পড়ে গেলেও শেষ দিকে এক ঋষভ পান্তের ব্যাটিং বীরত্বই জিতিয়েছে ভারতকে। আর ৩ ওভার ভারতকে আটকে রাখতে পারলেই ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারতো অজিরা।

কিন্তু দিনের শুরুর দিকে ভারতের ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট। আধিপত্য বিস্তার করে খেলতে থাকে তারা। ১৮ রানে রোহিত শর্মা ফিরে গেছেন যদিও, কিন্তু প্রতিরোধ গড়ে ভারতকে এগিয়ে নিয়েছেন শুভমান গিল ও চেতেশ্বর পূজারা। এই জুটিতে ভর করেই একটা সময় স্কোর দাঁড়ায় ১৩২ রান। দুর্ভাগ্য যে টেস্টের প্রথম সেঞ্চুরির কাছে গিয়েও সেটি ধরা দেয়নি গিলের। তাকে ৯১ রানে স্মিথের ক্যাচ বানিয়েছেন লায়ন। তবে পূজারা ঠিকই লড়াই চালিয়ে গেছেন। রাহানে ২৪ রানে ফিরলেও একটা পর্যায়ে মনে হচ্ছিলো জয়ের পথেই যাচ্ছে ভারত।

কিন্তু মাঝপথে পূজারাকে (৫৬) ও মায়াঙ্ক আগারওয়ালকে (৯) বিদায় দিয়ে অস্ট্রেলিয়াও ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছিল। শেষ দিকে একটা সময় মনে হচ্ছিলো ড্রই হবে এই টেস্ট। ৯৩ ও ৯৪ ওভারে ওয়াশিংটন সুন্দর ও পান্তের বেশ কিছু বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারিতে এটা নিশ্চিত হয়ে যায় তারুণ্যে ভর করে গ্যাবার পতন ঘটাতে যাচ্ছে ভারতীয়রা।

শেষ দিকে সুন্দর ও শার্দুল ঠাকুরের উইকেট পড়লেও পান্ত ঠিকই বাউন্ডারিতে জয় নিশ্চিত করেছেন সফরকারীদের। ভারতকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেওয়া পান্ত খেলেছেন অসাধারণ একটি ইনিংস। অপরাজিত ছিলেন ৮৯ রানে। ম্যাচসেরাও হয়েছেন তিনি। তবে সিরিজ সেরা প্যাট কামিন্স। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ভারত: ৩৩৬ (ঠাকুর ৬৭, সুন্দর ৬২; হ্যাজলউড ৫/৫৭) ও ৩২৯/৭ (গিল ৯১, পান্ত ৮৯*; কামিন্ত ৪/৫৫)

অস্ট্রেলিয়া: ৩৬৯ (লাবুশেন ১০৮; নাটারাজন ৩/৭৮, সুন্দর ৩/৮৯) ও ২৯৪ (স্মিথ ৫৫, ওয়ার্নার ৪৮; সিরাজ ৫/৭৩, ঠাকুর ৪/৬১)