সাইফ-তাসকিনের বোলিংয়ে শুরুতেই বিপদে জিম্বাবুয়ে

২৭৭ রানের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বাংলাদেশের বোলিংয়েও শুরুটা হলো প্রত্যাশা মতো। পাঁচ ওভারেই জিম্বাবুয়ের দুই উইকেট তুলে নিয়েছে সফরকারীরা। প্রথম ওয়ানডেতে ২৭৭ রানের লক্ষ্যে জিম্বাবুয়ের স্কোর ৫ ওভার শেষে ২ উইকেটে ১৭ রান।

ভালো লেংথের বলে শুরুতে বেশ বেগ পেতে হয় স্বাগতিকদের। তাতে আসে সফলতাও। অভিষেকেই ডাক মেরে ফিরেছেন মারুমানি। সাইফউদ্দিনের ভালো লেংথের বল কাট করতে গিয়েছিলেন। বল ব্যাটের কানায় লেগে আঘাত হানে স্টাম্পে।  পঞ্চম ওভারে উইকেট উৎসবে যোগ দেন পেসার তাসকিন আহমেদও। তার বলে মিডল স্টাম্প উপড়ে যায় ৯ রানে ব্যাট করতে থাকা ওপেনার মেধেভেরের।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা মোটেও বলার মতো ছিল না বাংলাদেশের। টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় লিটন দাস নিজের স্বভাববিরুদ্ধ ব্যাটিংয়ে সময়োপযোগী এক ইনিংস খেলেছেন। ‘প্রিয়’ প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়েকে সামনে পেয়ে তুলে নিয়েছেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি। আর তার সেই ইনিংসটাতেই বাংলাদেশ পায় লড়াই করার মতো পুঁজি। হারারের প্রথম ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৭৬ রান করে বাংলাদেশ। তামিম ইকবাল-সাকিব আল হাসানদের ব্যর্থতার ভিড়ে একপ্রান্ত আগলে রেখে লিটন খেলেছেন ১০২ রানের ঝলমলে ইনিংস। শেষ দিকে আফিফ হোসেনের (৩৫ বলে ৪৫) ঝড় ও মেহেদী হাসান মিরাজের (২৫ বলে ২৬) কার্যকরী ব্যাটিংয়ের আগে মাহমুদউল্লাহর (৫২ বলে ৩৩) লড়াকু ব্যাটিং-ই বাংলাদেশের ইনিংসের হাইলাইটস।

অথচ শুরুটা দেখলে যে কেউই বলবে- এই বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে অসাধারণভাবেই। শুরুতে রানের খাতা খোলার আগেই আউট হন তামিম। দলীয় স্কোরে কোনও রান যোগ হওয়ার আগেই প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

তামিম ইকবাল দ্রুত আউট হওয়ার পর স্বভাবসুলভ ব্যাটিংয়ে সূচনা করেছিলেন সাকিব। তবে পরিস্থিতির দাবি না মিটিয়ে একটু যেন বেশিই আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে খেলছিলেন। আর সেটাই কাল হয় তার! ১৯ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন তিনি। এর পর হতাশ করেন মিঠুন-মোসাদ্দেকও। ১৯ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ১৯ রান করে সাজঘরে ফিরে গেছেন মিঠুন। খানিক পর অবস্থা আরও খারাপ হয় মোসাদ্দেক হোসেনর বিদায়ে। রিচার্ড এনগারাভা শিকার হয়ে মাত্র ৫ রানে ফিরে যান মোসাদ্দেক।

টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন। একটু একটু করে ইনিংসের ভিত গড়ে আশা জাগাচ্ছিলেন। এমনকি ক্রিজে সেটও হয়ে গিয়েছিলেন। তবে বেশিদূর যেতে পারেননি। তার প্রতিরোধ ভেঙে উৎসব করেছে জিম্বাবুয়ে। মাহমুদউল্লাহ ৩৩ রানে আউট হয়েছেন। তার বিদায়েই ভাঙে লিটনের সঙ্গে ৯৩ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি।

তবে অপরপ্রান্ত আগলে সেঞ্চুরি ঠিকই তুলে নেন লিটন। সব মিলিয়ে ১১০ বলে ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরির মাইলফলকে পৌঁছান এই ব্যাটসম্যান। রিচার্ড এনগারাভার বলে আউট হওয়ার আগে ১১৪ বলে করেন ১০২ রান।

ততক্ষণে অবশ্য আফিফের সঙ্গে ৪০ রানে জুটি গড়েন তিনি। এই জুটি ভাঙলে আফিফ ও মিরাজ ৪২ বলে তুলেন ৫৮ রান। আফিফ, মিরাজ দ্রুত ফিরলেও স্কোরবোর্ড সমৃদ্ধ করে দিয়েছেন। শেষ দিকে সাউফউদ্দিন ৮ রানে অপরাজিত ছিলেন। সঙ্গে ছিলেন শরিফুল (০)। 

জিম্বাবুয়ের হয়ে ৫১ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন লুক জঙউই। দুটি করে নিয়েছেন ব্লেসিং মুজারাবানি ও রিচার্ড এনগারাভা। একটি নিয়েছেন টেন্ডাই চাতারা।