লাসিথ মালিঙ্গার সিংহাসন কেড়ে নিলেন সাকিব

মাঠে নামলেই রেকর্ডবুক ওলটপালট করা নিয়মিত অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে তার। কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে শীর্ষ উইকেট শিকারি বোলার হতে সাকিবের প্রয়োজন ছিল ২ উইকেট। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রবিবার এক ওভারে স্কটিশ দুই ব্যাটারকে ফিরিয়ে লাসিথ মালিঙ্গার সিংহাসন কেড়ে নিলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
   
সপ্তম ওভারেই সাকিবের হাতে বল তুলে দেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। প্রথম ওভারে ৫ রান দিয়ে সুযোগ তৈরি করতে পারেননি। তবে নিজের দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে সুইপ শট খেলতে গিয়ে তাসকিনের হাতে ক্যাচ দেন স্কটিশ ব্যাটার জর্জ মুনসে। কিন্তু সেই ক্যাচ নিতে পারেননি। ওই ওভারে খরচ করেন তিন রান। 

তবে নিজের তৃতীয় ওভারেই ছাড়িয়ে যেতে পারেন লঙ্কান পেসার মালিঙ্কাকে। সাকিবের দ্বিতীয় বলে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠার আগেই লংঅনে আফিফের দুর্দান্ত ক্যাচে ফিরে যান রিচার্ড বেরিংটন। স্কটিশদের বিপক্ষে বাংলাদেশের একমাত্র টি-টোয়েন্টিতে হারের কারণ ছিলেন এই বেরিংটন। তাকে ফিরিয়েই সাকিব ছুঁয়ে ফেলেন মালিঙ্গাকে। এক বল বিরতি দিয়ে সাকিব তুলে নেন মাইকেল লিস্কের উইকেট। ২ বল খেলে রানের খাতা না খুলেই লংঅনে লিটনের সহজ ক্যাচে সাজঘরে ফেরেন স্কটিশ এই ব্যাটার। আর তাতেই সাকিব টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারি হয়ে যান। 

অনেক দিন ধরেই সিংহাসন দখলের সামনে ছিলেন সাকিব। ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া সিরিজে এই রেকর্ডের সামনে ছিলেন। কিন্তু পারেরনি, এরপর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও হয়নি। এই দুই উইকেটে কেবল শীর্ষ উইকেট শিকারিই নন, একসঙ্গে আরও দুটি রেকর্ডের ভাগিদার হয়েছেন তিনি।

৮৪ ম্যাচে ১০৭ উইকেট নিয়ে মালিঙ্গার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার শেষ হয়েছে। ৮৯ ম্যাচে ১০৮ উইকেট নিয়ে সাকিব আছেন এখন এক নম্বরে। তিন নম্বরে থাকা টিম সাউদির উইকেট সংখ্যা ৯৯। ৯৮ উইকেট নিয়ে চার নম্বরে আছেন পাকিস্তানের কিংবদন্তি ক্রিকেটার শহীদ আফ্রিদি। ৫১ ম্যাচে আফগানিস্তানের রশিদ খানের উইকেট ৯৫, তার অবস্থান পাঁচ নম্বরে।

রবিবার পাওয়া ২ উইকেট সাকিবকে আন্তর্জাতিক আঙিনায় ৬০০ উইকেট দখলের কীর্তিও এনে দিয়েছে। বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে অনন্য এই কীর্তি গড়ছেন বাঁহাতি স্পিনার। সব মিলিয়ে ২৩তম বোলার হিসেবে এই মাইলফলকে পৌঁছেছেন সাকিব। আর বাঁহাতি স্পিনারদের মধ্যে হচ্ছেন দ্বিতীয়।

তবে একটি জায়গায় তিনি অনন্য। বিশ্বের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক মঞ্চে একই সঙ্গে ১২ হাজার রান ও ৬০০ উইকেটের রেকর্ড তার দখলে। যা করতে পারেননি ক্রিকেট ইতিহাসের কিংবদন্তি অলরাউন্ডাররাও। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অন্তত ১০ হাজার রান করেছেন, এমন ক্রিকেটারদের মধ্যে সাকিবের পর সবচেয়ে বেশি উইকেট জ্যাক ক্যালিসের। তার উইকেট সংখ্যা ৫৭৭।