ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারাতে যা করা প্রয়োজন

কোনও জয় আসেনি সুপার টুয়েলভে। দুই ম্যাচের দুটোতেই হেরেছে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের অবস্থাও একই। আজ (শুক্রবার) শারজাতে এই দল দুটিই একে অন্যের প্রতিপক্ষ। জিতলে সেমিফাইনালে যাওয়ার স্বপ্ন বেঁচে থাকবে, আর হারলে বাকি দুই ম্যাচ হবে ‘নিয়মরক্ষার’। এমন সমীকরণ সামনে রেখে মাঠে নামছে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শক্তিমত্তার বিচারে বাংলাদেশের চেয়ে বেশ এগিয়ে ক্যারিবীয়রা। তারপরও টানা দুই হারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের আত্মবিশ্বাস নড়বড়ে। এই অবস্থায় বাংলাদেশের জন্য জয়ে ফেরার সুযোগ থাকছে। সেজন্য বেশ কয়েকটি জায়গায় নজর দিতে হবে মাহমুদউল্লাহদের।

নড়বড়ে ক্যারিবীয়দের চেপে ধরা

দলে দারুণ সব পাওয়ার হিটার থাকা সত্ত্বেও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র ৫৫ রানে অলআউট হয় বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। এরপর নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে মাত্র ১৪৩ রানের সংগ্রহ পায় ক্যারিবীয়রা। দলের স্কোরবোর্ড সমৃদ্ধ না হওয়াতে দুটি ম্যাচেই হারতে হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। বলার অপেক্ষা রাখে না আত্মবিশ্বাসে কতটা ঘাটতি পড়েছে তাদের। এখন লেন্ডল সিমন্স, এভিন লুইস, ক্রিস গেইল, কাইরন পোলার্ড, আন্দ্রে রাসেল, শিমরন হেটমায়ারদের ‘ভঙ্গুর’ আত্মবিশ্বাসে আঘাত হেনে বাংলাদেশের বোলাররা নিজেদের কাজটা ঠিকমতো করতে পারলে সুযোগ তৈরি হবে।

প্রাপ্ত সুযোগের সদ্ব্যবহার

কাগজে-কলমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ শক্তিশালী দল। তারপরও নিজেদের দিনে সেরাটা খেলতে পারলে বাংলাদেশকে হারনো বেশ কঠিনই। সেক্ষেত্রে ক্যারিবীয়রা কোনও সুযোগ দিলে সেগুলো লুফে নিতে হবে। ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে উইকেটকিপার নুরুল হাসান সোহান তেমনটাই বলে গেছেন, ‘খেলা শেষেই ফল দেখা যাবে, কিন্তু আমাদের শতভাগ দিয়ে চেষ্টা করতে হবে। যেহেতু ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শেষ দুই তিনটা সিরিজে আমরা ভালো খেলেছি, সেগুলো আরও বেশি অনুপ্রেরণা দেবে।’

সুখস্মৃতি থেকে অনুপ্রেরণা

২০০৭ সালে টি-টোয়ন্টি বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জিতেছিল বাংলাদেশ। মূল পর্বে সেটাই বাংলাদেশের একমাত্র জয়। এবার মুখোমুখি হওয়ার আগে ওই জয় উজ্জীবিত করতে পারে বাংলাদেশকে।  পরিসংখ্যান বলছে, দুই দলের লড়াইয়ে বাংলাদেশ বেশ শক্ত প্রতিপক্ষ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১২ ম্যাচে টাইগাররা পাঁচটিতে জিতেছে। হেরেছে ছয়টিতে। অন্য ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়।

পাওয়ার প্লের সঠিক ব্যবহার

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাওয়ার প্লের সঠিক ব্যবহার করতে পারলেও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ। ব্যাটিং-বোলিং, কোথাও পাওয়ার প্লেতে ভালো করতে পারেনি মাহমুদউল্লাহরা। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে পাওয়ার প্লেতে ভালো করতে না পারলে শুরুতেই চাপ তৈরি হওয়ার শঙ্কা থাকবে।

বোলারদের ছন্দে ফেরা

ওমানের প্রাথমিক রাউন্ডে বাংলাদেশের বোলারদের পারফরম্যান্স ভালো হলেও সুপার টুয়েলভে গিয়ে খেই হারিয়েছেন। মেহেদী-সাকিব-মোস্তাফিজ প্রত্যেকেই ছন্নছাড়া বোলিং করছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে  বাংলাদেশের বোলারদের সর্বোচ্চটা দিয়ে লড়াই করতে হবে। ক্যারিবীয়রা এমনিতেই স্পিনের বিপক্ষে অতটা ভালো নয়। তাই তাদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশের বোলাররা চেপে ধরতে পারলে দারুণ সম্ভাবনা তৈরি হবে।

বিশেষ করে, মোস্তাফিজের ফর্মে ফেরা জরুরি। গত কয়েক ম্যাচে মোস্তাফিজের সার্ভিস ঠিকমতো না পাওয়াতে ভুগতে হচ্ছে বাংলাদেশ দলকে। সহযোগী দেশগুলোর ব্যাটাররাও তাকে অবলীলায় খেলেছেন! শ্রীলঙ্কা ও ইংল্যান্ড বিপক্ষেও সুসময় ফেরাতে পারেননি বাঁহাতি পেসার।