তামিমের কাছে ‘ভাই-ভাই’ সম্পর্কের চেয়ে পেশাদারিত্ব সবার আগে

তামিম ইকবাল বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ওপেনার। বড় ভাই নাফিস ইকবালও এক সময় জাতীয় দলে খেলেছেন সুনামের সঙ্গে। চট্টগ্রামবাসীর স্বপ্ন ছিল দুই ভাই একসঙ্গে খেলে গৌরবগাঁথা সৃষ্টি করবেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন অপূর্ণই থেকে গেছে। দুই ভাইয়ের একসঙ্গে খেলা হয়নি কোনও আন্তর্জাতিক ম্যাচ। তবে স্বপ্ন পূরণ না হলেও নতুন করে জুটি বেঁধেছেন তামিম-নাফিস।

গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর বাংলাদেশ দলের লজিস্টিক ম্যানেজার হিসেবে বিসিবিতে যোগ দেন নাফিস ইকবাল। তামিম তো দীর্ঘদিন ধরেই ওয়ানডে অধিনায়ক। যার সুবাদে দুই ভাই একবিন্দুতে মিলিত হলেন প্রথবমার। তাতে একসঙ্গে ওপেনিংয়ে নামতে না পারার আক্ষেপ কিছুটা হলেও দূর হওয়ার কথা। 

বুধবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটি মাঠে গড়াবে। তার আগে অধিনায়ক তামিম ইকবালের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে মাঠের এক কোণে। ছোট ভাই তামিমকে নিয়ে বড় ভাই নাফিস নির্ধারিত স্থানে চলেও এলেন ঠিকঠাক মতো। ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্বটা খুব ভালো করেই পালন করলেন নাফিস। শেষ দিকে তামিমের কাছে প্রশ্ন ছুটে এলো- জাতীয় দলে দুই ভাই একসঙ্গে নতুন ভূমিকাতে। বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন?

তামিমের কাছে নতুন এই ‘জুটি’ ভালো লাগার হলেও বিষয়টিকে পেশাদারিত্বের জায়গা থেকেই দেখছেন। তাইতো সম্পর্ক ছাপিয়ে সবার ওপরে জায়গা করে নিয়েছে পেশাদারিত্ব, ‘এটা এমন একটা জায়গা আমাদেরকে খুব খুব বেশি পেশাদারিত্ব দেখিয়ে কাজ করতে হবে। আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক আছে। তিনি আমার বড় ভাই। আপনি যখন জাতীয় দলের জন্য দায়িত্ব পালন করবেন, আমাকে তাকে ম্যানেজার হিসেবে সম্মান দিতে হবে। আমাকে খেলোয়াড় হিসেবে সম্মান দিতে হবে। এটা পেশাদার জায়গা। যেখানে সম্পর্ক দ্বিতীয়, পেশাদারিত্ব এক নম্বরে।’

ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে নাফিস মূল দায়িত্বের বাইরে ব্যাটারদের সঙ্গে কাজ করছেন। প্রায় প্রতি অনুশীলনেই তাকে থ্রোয়ারের ভূমিকায় দেখা যায়। ছোট ভাইয়ের বেলাতেও তেমনটা করতে দেখা গেছে। গত ২০ ফেব্রুয়ারি জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের পড়ন্ত বিকালে তামিমকে থ্রো ডাউন করেছেন নাফিস। একই দৃশ্য দেখা গেছে মঙ্গলবারও।

যে কাজ কিছুটা হলেও একসঙ্গে খেলতে না পারার অতৃপ্তি মুছে দিচ্ছে। নাফিস অন্তত তেমনটাই মনে করেন, ‘একটা সময় দুই ভাইয়ের একসঙ্গে জাতীয় দলে খেলার সুযোগ ছিল। সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। তবে যেটা হয়নি ভেবে কী হবে। নতুন করে দুই ভাই একসঙ্গে জাতীয় দলে কাজ করতে পারছি, এটা দারুণ অনুভূতির।’

তামিম বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করে যাচ্ছেন। দেশের সফলতম ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা দায়িত্ব ছাড়ার পর তার কাঁধেই এসেছে নেতৃত্ব। এখন পর্যন্ত ১৫ ওয়ানডেতে তার অধীনে দল জিতেছে ৮টিতে।

নাফিসের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার খুব লম্বা হয়নি। ১১ টেস্ট ও ১৬ ওয়ানডে খেলেছেন। তবে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক প্রথম টেস্ট জয় ও সিরিজ জয়ে বড় অবদান রেখেছিলেন তিনি। ঢাকায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে তার ৩৫৫ বলে ১২১ রানের ইনিংসটি বাংলাদেশের অন্যতম সেরা। ২০১৮ সালে পেশাদার ক্রিকেটকে বিদায় বলার পর বিভিন্ন দলের ম্যানেজার, লজিস্টিক ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।