‘সাকিব কাউকে কিছু বুঝতে দিচ্ছে না’

পরিবারের পাঁচ সদস্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এরপরও সাকিব আল হাসান দক্ষিণ আফ্রিকাতে। দ্বিতীয় ওয়ানডের পর দেশেও ফিরতে চেয়েছিলেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি) সাকিবের কোর্টে বল ঠেলে দিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আগামীকাল (বুধবার) সিরিজের শেষ ওয়ানডে খেলেই দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেবেন বাঁহাতি অলরাউন্ডার। এই পরিস্থিতিতে সাকিবের মানসিক অবস্থা ভালো না থাকাই স্বাভাবিক। তবে সেটি ড্রেসিং রুমে কাউকে বুঝতে দিচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন নির্বাচক হাবিবুল বাশার।

দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকা হাবিবুল খুব কাছ থেকে দেখছেন সাকিবকে। তিনি জানিয়েছেন, সাকিব ভালো আছেন ও নিজের কাজে মনোযোগী। গণমাধ্যমকে সাবেক এই অধিনায়ক বলেছেন, ‘সে (সাকিব) খুব ভালো আছে। নিশ্চিতভাবে ওর মনের মধ্যে কিছু একটা আছে, আমরা সবাই বুঝতে পারি। কিন্তু ও সেটা কারও সামনে প্রকাশ করছে না। খুব ইতিবাচক আছে। ড্রেসিং রুমে এই বিষয় নিয়ে কেউ কোনও আলাপ করছে না। ও ওর মতো আছে। দেখে ভালো লাগছে যে, ও যে একটা ক্রাইসিসের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, ড্রেসিং রুমে কাউকে বুঝতে দিচ্ছে না। এটা খুব ভালো।’

পরিবারের সদস্যদের অসুস্থতায় ক্রিকেটে মনোযোগ দেওয়া বেশ কঠিন কাজ। সাকিবের এই ‘ত্যাগে’ মুগ্ধ কোচ-সতীর্থ থেকে শুরু করে বিসিবি। এই যেমন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানালেন, এই মুহূর্তে পরিবার থেকে দূরে থেকে দক্ষিণ আফ্রিকায় থেকে যাওয়াটা ‘বিরাট ব্যাপার’।

সাকিবের বর্তমান অবস্থা ও তার দক্ষিণ আফ্রিকায় থেকে যাওয়া নিয়ে পাপন বলেছেন, “সাকিব আমাকে প্রথম ওয়ানডের পরেই বলেছিল যে, ওর পরিবারের সবাই অসুস্থ। আমি তাকে বলেছি চলে আসতে পারো। তখন ও (সাকিব) বলেছিল যে দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলে আসবে। দ্বিতীয় ওয়ানডের পর আবার বললো, সে আসছে। তারপর ওর টিকিটটাও বুকড হয়ে গিয়েছিল। তারপর আবার কালকে (সোমবার) ফোন করে বললো, ‘না আমি তৃতীয় ওয়ানডেটা খেলে আসি।’ আমাদের তরফ থেকে ওকে সবুজ সংকেত দেওয়া আছে। এই অবস্থায় ও (সাকিব) যে খেলছে, এটা আমাদের জন্য বড় ব্যাপার এবং ও যে বড় ত্যাগ করছে এটাতে কোনও সন্দেহ নেই।”

বুধবার সেঞ্চুরিয়নে সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা। এই ম্যাচের আগে আজ (মঙ্গলবার) সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। সেখানে এই অলরাউন্ডার জানালেন, সাকিবকে তারা যতটা সম্ভব সহযোগিতা করছেন, ‘আমরা জানি, সাকিব ভাই মানসিকভাবে খুব শক্ত সবসময়ই। পরিবারের এই ইস্যুটা অনেক বড় ইস্যু। সবাই তাকে সহযোগিতা করছে এবং সেও ভালো খেলছে। আসলে পরিবার খারাপ থাকলে তো একটু খারাপ লাগে। তবে সবাই তাকে সহযোগিতা করছে, সব খেলোয়াড়রাই।’

আগের দিন টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন বলেছিলেন, ‘এতে তো কারোরই হাত নেই। খুব জরুরি একটা ব্যাপার। পারিবারিক বিষয় যেকোনও মানুষের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। ওর (সাকিব) জন্যও। কিন্তু সে এখন থেকে যাচ্ছে। সাকিব এই সেক্রিফাইসটা হয়তো করেছে এই সিরিজটার জন্য। এটা আমাদের ও বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য ভালো খবর।’