শ্রেয়াসকে ফেরালেন মিরাজ, অক্ষরকে এবাদত

দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ২৭২ রানের লক্ষ্য দিয়ে শুরুতেই ভারতকে চেপে ধরেছিল বাংলাদেশ। পর পর দুই ওভারে দুই ওপেনারকে সাজঘরে পাঠানোর পর ওয়াশিংটন সুন্দর, লোকেশ রাহুলের প্রতিরোধ ভেঙেছে। তখন ভীষণ চাপে পড়ে গেলেও ধীরে ধীরে শ্রেয়াস আইয়ার ও অক্ষর প্যাটেলের ব্যাটেই জয়ের জন্য লড়তে থাকে ভারতীয় দল। ১০৭ রান যোগ করে এই জুটি। বিপজ্জনক শ্রেয়াসকে তালুবন্দি করিয়ে জুটি ভেঙেছেন মিরাজ। তার পর অক্ষরকে সাকিবের ক্যাচ বানিয়ে ফের ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিতে পেরেছে স্বাগতিক দল।  

৩৮.২ ওভার শেষে সফরকারীদের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ১৮৯ রান। ক্রিজে আছেন শার্দুল (২) ও দীপক চাহার (০)। ফেরার আগে ১০২ বলে ৮২ রান করেছেন শ্রেয়াস। তাতে ছিল ৬টি চার ও ৩ ছয়। অক্ষর প্যাটেল ৫৬ বলে করেছেন ৫৬ রান। 

মিরপুর স্টেডিয়ামে আঙুলের চোটে অধিনায়ক রোহিত শর্মার নামা হয়নি। ফলে ৮ বছর পর ওপেনিং করতে নেমেছিলেন বিরাট কোহলি। সঙ্গে ছিলেন শিখর ধাওয়ান। দ্বিতীয় ওভারে ওপেনিং জুটি ভেঙে বাংলাদেশকে উৎসবে ভাসান এবাদত হোসেন। শর্ট লেংথের বল পুল করতে গেলে ইনসাইড এজ হয়ে কোহলি বোল্ড হয়েছেন। তৃতীয় ওভারে আরেক ওপেনার শিখর ধাওয়ানকে বিদায় দেন মোস্তাফিজ। শর্ট লেংথের বল বুঝতে পারেননি তিনি। ক্যাচ উঠে বল জমা পড়ে মিরাজের হাতে। শুরুতে বিপদে পড়ে গেলে ২৬ রান যোগ করে ধাক্কা সামাল দেন শ্রেয়াস আইয়ার-ওয়াশিংটন সুন্দর। তাদের প্রতিরোধ ভাঙেন সাকিব আল হাসান। তার ঘূর্ণিতে ক্যাচ তুলে ১১ রানে ফিরেছেন ওয়াশিংটন।  

তার পর লোকেশ রাহুল-শ্রেয়াস আইয়ারের জুটিও স্থায়ী হয়নি। ২৬ রান যোগ করা এই জুটি ভেঙে ভারতকে আরও বিপদে ফেলে দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তার ঘূর্ণি ভারতের সহ অধিনায়ক বুঝতেই পারেননি। লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে ১৪ রানে ফিরেছেন।   

শুরুতে মিরাজের অনবদ্য সেঞ্চুরি (১০০*) ও মাহমুদউল্লাহর (৭৭) রানে দাঁড়িয়ে ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ২৭১ রান সংগ্রহ করেছে স্বাগতিক দল।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামলে ৬৯ রানে হাওয়া হয়ে যায় ৬ উইকেট! ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া ব্যাটিং লাইনে তখন অতিমানবীয় কিছুই প্রয়োজন ছিল। যে রূপটায় দেখা গেলো মেহেদী হাসান মিরাজকে। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ দলের ত্রাতা হয়ে আবির্ভূত হলেন। যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তাতে খেই হারানো বাংলাদেশকে ম্যাচে ফিরিয়েছে মিরাজ-মাহমুদউল্লাহর রেকর্ড জুটিই।

দ্রুত টপ অর্ডারের ৬ ব্যাটারকে হারিয়ে অলআউট হওয়ার শঙ্কা যখন চোখ রাঙাচ্ছিল। সপ্তম উইকেটে মাহমুদউল্লাহ ও মিরাজের ১৪৮ রানের জুটি বাংলাদেশকে উদ্ধার করেছে। ৭ উইকেটের বিনিময়ে এনে দিয়েছে ২৭১ রান। এই জুটি ভারতের বিপক্ষে যেকোনও উইকেটে আবার সর্বোচ্চও।

অফস্পিনিং অলরাউন্ডার মিরাজ ৫৫ বলে ৩ চার ও ২ ছয়ে ৫০ রানের মাইলফলক ছুঁয়েছেন। প্রথম পঞ্চাশ ৫৫ বলে করলেও দ্বিতীয় ৫০ ছুঁয়েছেন ২৮ বলে। সব মিলিয়ে ৮৩ বলে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন এই ব্যাটার। যা আবার ৮ নম্বরে নেমে কোনও ব্যাটারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি! ৮ চার ও ৪ ছক্কায় মিরাজ নিজের ইনিংসটি সাজিয়েছেন। মাহমুদউল্লাহও তুলে নেন ক্যারিয়ারের ২৭তম হাফসেঞ্চুরি। উমরান মালিকের বলে দুর্দান্ত এক ক্যাচে পরিণত হওয়ার আগে ৯৬ বলে ৭ চারে মাহমুদউল্লাহ খেলেছেন ৭৭ রানের ইনিংস। শেষ দিকে নাসুমও কার্যকরী একটি ইনিংস খেলেছেন। ১১ বলে ১৮ রান আসে নাসুমের ব্যাট থেকে। শেষটা এতই বারুদ ঠাসা ছিল- ৫ ওভারে মাহমুদউল্লাহ, নাসুম ও মিরাজ মিলে ৬৮ রান তুলেছেন।

৩৭ রান খরচায় ওয়াশিংটন সুন্দর সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নিয়েছেন। এছাড়া উমরান মালিক ও মোহাম্মদ সিরাজ দুটি করে উইকেট নিয়েছেন।