ক্রিকেটারদের ‘মনস্তাত্ত্বিক নিরাপত্তা’ দিয়ে সাফল্য পাচ্ছেন হাথুরুসিংহে

২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত প্রথম দফায় বাংলাদেশে দায়িত্ব পালন করে গেছেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। ওইবার অনেক সাফল্য পেলেও শেষ দিকে এসে সিনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন তিনি। তবে চলতি বছরের শুরুতে দ্বিতীয়বার বাংলাদেশের কোচ হন হাথুরুসিংহে। তার কোচিংয়ে সাকিব-তামিমরা কেমন করে, তা নিয়ে ছিল সংশয়। কিন্তু এবার ভিন্ন অবস্থানে লঙ্কান কোচ। ক্রিকেটারদের ‘মনস্তাত্ত্বিক নিরাপত্তা’ দিয়ে সাফল্য আদায় করে নিচ্ছেন তিনি।

বাংলাদেশের প্রধান কোচ হিসেবে গত ফেব্রুয়ারিতে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেন হাথুরুসিংহে। ২০ ফেব্রুয়ারি কাজে যোগ দিয়ে দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে যান। শুরুটা একেবারে মন্দ হয়নি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ হারলেও প্রতিপক্ষকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করেছে তার শিষ্যরা। এরপর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষেও ২-০ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ জেতে বাংলাদেশ। সোমবার থেকে শুরু হওয়া টি-টোয়েন্টি সিরিজেও একই লক্ষ্য থাকছে স্বাগতিকদের।

রবিবার চট্টগ্রামে সংবাদ সম্মেলনে হাথুরুসিংহের কাছে জানতে চাওয়া হয় আগের চেয়ে এই মেয়াদে কী কী বদল এনেছেন! কয়েক সেকেন্ড ভেবে তার উত্তর, ‘একই ক্রিকেটার, স্কিলও তো একই। মনে হয় না কোনও বদল হয়েছে। শুধু ড্রেসিংরুমের পরিবেশ বদলেছে। আমরা এখন যেভাবে কথা বলি, যা নিয়ে আলাপ করি, তাতে দলের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক নিরাপত্তা আনার চেষ্টা করছি।’

মনস্তাত্ত্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে আরও একটু বিস্তারিত বললেন বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ, ‘তাদেরকে (ক্রিকেটার) বলছি খেলার ফল যাই হোক, ভালো করুক বা ব্যর্থ হোক, তাদের মূল্য আছে। সবাই একই ক্রিকেটার, সবাইকে সমান চোখে দেখি। তারা আমার কাছে মূল্যবান, স্কিলসেটের কারণেই তাদের দলে নিয়েছি। এর বাইরে কিছু বদলেছে বলে মনে হয় না, স্কিল একই আছে।’

মাঠে পরিস্থিতির দাবি মিটিয়ে ইনটেন্ট ও ইমপ্যাক্টের সমন্বয় ঘটানোর চেষ্টাকেই মূলত সাফল্যের রসদ হিসেবে দেখছেন হাথুরুসিংহে, ‘একটি শব্দে আমি পুরো কথার সমাপ্তি টানতে পারি, মনস্তাত্ত্বিক নিরাপত্তা। এটা খুব বড় শব্দ। এর পেছনে অনেক কিছু কাজ করে, যেটা হয়তো বোঝার উপায় থাকে না। আপনি যদি এমন একটি পরিবেশ তৈরি করতে পারেন যেখানে খেলোয়াড়রা ফলাফল, প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে চিন্তা না করে তাদের সেরাটা দিতে বা করতে পারে। তারা যদি খোলা মনে চেষ্টা করে ব্যর্থও হয়, তবু ঠিক আছে। তারা আমার কাছে আগের মতনই থাকবে, তাদের ওপরে আস্থা থাকবে।’

হাথুরুসিংহে আরও বলেছেন, ‘আমি মনে করি সাম্প্রতিককালে এটাই সবচেয়ে বড় বদল। অন্য কোচরাও আমাকে বলেছেন এটাই আসল পরিবর্তন। আমি জানি একটা পরিবেশ তৈরি করতে পারলে তারা সেরাটা দিতে পারবে। সেরাটাও মাঝেমধ্যে যথেষ্ট হবে না, তখন আমরা হারবো, সেটাও ঠিক আছে, এটাই তো খেলা।’