টানা ৮ হারে প্লে-অফ থেকে ছিটকে গেলো ঢাকা

তিন রানের মধ্যে তামিম ইকবাল, আহমেদ শেহজাদ ও মুশফিকুর রহিমকে হারিয়ে ম্যাচ থেকেই ছিটকে গিয়েছিল ফরচুন বরিশাল। সেখান থেকে মাহমুদউল্লাহ-সৌম্য সরকারের চমৎকার জুটিতে ম্যাচে ফেরে দলটি। তাদের ১৩৯ রানের জুটির ওপর ভর করে দুর্দান্ত ঢাকাকে ১৯০ রানের লক্ষ্য দেয় বরিশাল। জবাবে খেলতে নেমে দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিংয়ে ১৪৯ রানে থামে ঢাকার ইনিংস। আর তাতেই ৪০ রানের জয়ে প্লে-অফের সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখলো বরিশাল। ৮ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চতুর্থ স্থানে অবস্থান করছে তামিম ইকবালের নেতৃত্বাধীন দলটি। 

মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে পয়েন্ট টেবিলের নিচে থাকা ঢাকাকে ১৯০ রানের লক্ষ্য দেয় বরিশাল। জবাবে খেলতে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে ঢাকা। দলের হয়ে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটার অ্যালেক্স রস সর্বোচ্চ ৫২ রানের ইনিংস খেলেন। তিনি ছাড়া কেউই বরিশালের বোলারদের বিপক্ষে প্রতিরোধ গড়তে পারেননি। ব্যাটারদের ব্যর্থতায় ঢাকা অলআউট হয় ১৪৯ রানে। ১৯ জানুয়ারি উদ্বোধনী ম্যাচে কুমিল্লার বিপক্ষেই একমাত্র জয়টি পেয়েছিল ঢাকা। এরপর আর হারের বৃত্ত ভাঙতে পারেনি। বিপিএলের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি টানা ৮ হারের রেকর্ড গড়েছে ঢাকা। আর এই হারেই বিপিএলের প্লে-অফ থেকে ছিটকে গেছে তাসকিন আহমেদের দল।

বরিশালের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ইনজুরি কাটিয়ে নয় মাস পর ফেরা মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। আগের ম্যাচে চট্টগ্রামের বিপক্ষে অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করেছিলেন। শনিবার ব্যাট করতে হয়নি। তবে বল হাতে দলের সেরা বোলার তিনিই। ২১ রান খরচায় তার শিকার তিন উইকেট। এছাড়া ওবেদ ম্যাককয় ও মেহেদী হাসান মিরাজ দুটি করে উইকেট নিয়েছেন। একটি উইকেট নেন আকিভ জাবেদ।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়ে শুরুতেই বিপদে পড়ে বরিশাল। মাত্র ১৯ রানের মধ্যে তারা হারায় তিন টপ অর্ডার ব্যাটারকে। এরপর ক্রিজে নামেন মাহমুদউল্লাহ, তখন নন-স্ট্রাইক প্রান্তে ছিলেন সৌম্য সরকার। মাহমুদউল্লাহ যখন ক্রিজে এলেন তখন বরিশাল খাদের কিনারায়। তবে এই দুই ব্যাটার দায়িত্ব নিয়ে খেলে দলের স্কোরকে অনেক লম্বা করেছেন। এদিন ২২ গজে ছক্কার ‘বৃষ্টি’ নামিয়ে ঢাকার বোলারদের রীতিমতো পাড়ার বোলার বানিয়ে দেন দুই জন।

২০ ওভার শেষে ৪ উইকেটে তাদের রান ১৮৯। সৌম্য সরকার ৪৮ বলে করেছেন ৭৫ রান। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৪৭ বলে করেন ৭৩ রান। দুই জনের চতুর্থ উইকেট জুটিতে ৮৫ বলে আসে ১৩৯ রান। তাতেই বড় পুঁজি পেয়ে যায় বরিশাল।

মাহমুদউল্লাহ ক্রিজে গিয়ে ডাউন দ্য উইকেটে এসে শরীফুলকে ছক্কা ওড়ান। পরের বল জায়গায় দাঁড়িয়ে দৃষ্টিনন্দন কাভার ড্রাইভ। মাহমুদউল্লাহর এমন স্কোরিং শট থেকে আত্মবিশ্বাস পেয়ে যান সৌম্যও। এরপর পঞ্চম ওভারে তাসকিনকে দুই চার হাঁকান বাঁহাতি এই ব্যাটার। পাওয়ার প্লে’ শেষে বরিশালের রান দাঁড়ায় ৪৬। ১০ ওভার শেষে ৭৯। পরের ৬ ওভারে ৬৭ রান যোগ করেন দুই ব্যাটার। এ সময়ে ছক্কা-চারে মিরপুরের গ্যালারিতে এই দুই ব্যাটার উৎসবের উপলক্ষ এনে দেন। দুই জনের ব্যাটিং তাণ্ডবে মনে হচ্ছিল বরিশালের রান দুইশ পেরিয়ে যাবে। কিন্তু ১৭তম ওভারে শরিফুল মাহমুদউল্লাহকে আটকে দিলে রানের গতি কিছুটা কমে আসে। শেষ পর্যন্ত ৭ চার ও ৪ ছক্কায় মাহমুদউল্লাহ ৭৩ রান করে আউট হন।

শেষ দিকে সৌম্য সরকার ও শোয়েব মালিকের ১৮ বলে ৩১ রানের জুটি দলের স্কোরবোর্ড থেমেছে ১৮৯ রানে। ৭৫ রানে অপরাজিত থাকা সৌম্য ৪ চারের সঙ্গে মারেন ৬ ছক্কা। তার সঙ্গে অপরাজিত থাকা শোয়েব মালিক ১০ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় করেন ১৯ রান।

ঢাকার হয়ে শরিফুল ইসলাম ও তাসকিন আহমেদ দুটি করে উইকেট পেয়েছেন। শরিফুল ৩৬ ও তাসকিন খরচ করেছেন ৩৫ রান।