৪১২ রানের ম্যাচে হায়দরাবাদের বিপক্ষে কলকাতার শ্বাসরুদ্ধকর জয়

ডেথ ওভারে ধুন্ধুমার ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনী হলো কলকাতা নাইট রাইডার্স ও সানরাইজার্স হায়দাবাদের লড়াইয়ে। তাতে দুই দলই রান উৎসব করেছে। ৪১২ রানের ম্যাচে শ্বাসরুদ্ধকর প্রতিদ্বন্দ্বিতার পর কলকাতা হেসেছে শেষ হাসি। স্বাগতিকরা ৪ রানে হারিয়েছে হায়দরাবাদকে। আগে ব্যাটিং করে কলকাতা করে ৭ উইকেটে ২০৮ রান।

ইডেন গার্ডেন্সে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫১ রানে চার উইকেট হারায় কলকাতা। ইনিংস শেষে সেই দলটির স্কোরবোর্ডে কি না জমা হয় ২০৮ রান! এই রান পাহাড় গড়তে বড় অবদান আন্দ্রে রাসেলের। ১৫ ওভার শেষে কলকাতার রান ছিল ৬ উইকেটে ১২৩। ডেথ ওভারে রিংকু সিংকে নিয়ে সপাটে ব্যাট চালান রাসেল। শেষ ৫ ওভারে ৮৫ রান যোগ হয় কলকাতার স্কোরবোর্ডে। মাত্র ২০ বলে ফিফটি করেন রাসেল, রিংকুর সঙ্গে তার জুটি ছিল ৮১ রানের। শেষ ওভারের প্রথম বলে রিংকু (২৩) আউট হন। 

রাসেল ২৫ বলে ৩ চার ও ৭ ছয়ে ৬৪ রানে অপরাজিত ছিলেন। নবম ব্যাটার হিসেবে আইপিএলে ২০০ ছক্কার মালিক হলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ তারকা, যেখানে তার দেশের ক্রিস গেইল ও কিয়েরন পোলার্ড আছেন।

তার আগে কলকাতাকে বিপর্যয় থেকে টেনে তোলেন ফিল সল্ট। ইংলিশ ওপেনার ৪০ বলে ৫৪ রান করেন। পঞ্চম উইকেটে রমনদীপ সিংকে (৩৫) নিয়ে ৫৪ রানের জুটি গড়েন তিনি।

লক্ষ্যে নেমে শুরুটা ভালো হয়েছিল হায়দরাবাদের। ষষ্ঠ ওভারে ৬০ রান তুলে ফেলে ওপেনিং জুটি। মায়াঙ্ক আগারওয়াল ও অভিষেক শর্মাকে সমান ৩২ রানে বিদায় করে কিছুটা চাপে ফেলে কলকাতা।

সুনীল নারিন বাউন্ডারিহীন চার ওভারের স্পেলের পাশাপাশি রাহুল ত্রিপাঠীর উইকেট নিয়ে হায়দরাবাদের লাগাম টেনে ধরে রাখেন। 

১৫ ওভার শেষে দলটির স্কোর ৪ উইকেটে ১২৮ রান। লড়াই করার কোনও আভাস মিলেনি। পরের ওভারেও মিচেল স্টার্ক মাত্র ৫ রান দিলে হায়দরাবাদের হার যেন সময়ের ব্যাপার ছিল।

কিন্তু ম্যাচ বদলে দিলেন হেনরিখ ক্লাসেন। শেষের আগের তিন ওভারে ৬৩ রান তুলতে অবদান রাখেন দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটার। ১৯তম ওভারে ২৬ রান তুলে ব্যবধান কমিয়ে আনেন ১৩ রানে! ২৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন ক্লাসেন।

শেষ ওভারের প্রথম বলে হার্ষিত রানাকে ছক্কা মেরে কলকাতাকে ভড়কে দেন ক্লাসেন। পরের বলে সিঙ্গেল নেন তিনি। স্ট্রাইকে গিয়ে তৃতীয় বলে শাহবাজ আহমেদ (১৬) আউট হন। তিন বলের মধ্যে হার্ষিতের দ্বিতীয় শিকার হন ক্লাসেন। সুয়াশ শর্মা অবিশ্বাস্য উড়ন্ত ক্যাচে হায়দরাবাদের জয়ের স্বপ্ন ধুলিস্মাৎ করে দেন। ২৯ বলে ৮ ছয়ে ৬৩ রান করেন প্রোটিয়া ব্যাটার।

শেষ বলে ৫ রান লাগতো হায়দরাবাদের। অস্ট্রেলিয়ার জার্সিতে অনেকবার ক্রান্তিকালে বীরত্ব দেখানো প্যাট কামিন্স শেষ বলে সেই রান তুলতে পারেননি। ব্যাট জোরে চালালেও হার্ষিতের বলে সংযোগ করতে পারেননি হায়দরাবাদ অধিনায়ক। ৭ উইকেটে ২০৪ রান করে দলটি। 

দারুণ ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বল হাতে ২৫ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন রাসেল।