সাকিব চোট পেয়েছেন, জানেন না হেম্প

ইনজুরির কারণে অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে সাকিব আল হাসানকে। এ কারণেই চেন্নাই টেস্টে তার বোলিংয়ে দেরিতে আসা এবং কম বোলিং করা। অবশ্য এই খবর জানা গেলো ধারাভাষ্যকক্ষ থেকে। টিম ম্যানেজমেন্টের কেউই জানেন না!

ভারতের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে সাকিব মাত্র ৮ ওভার বল করেছেন। দিয়েছেন ৫০ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে বল করেছেন ১৩ ওভার। কিন্তু উইকেট পাননি কোনও।

আশ্চর্যজনক হলেও সত্য কাউন্টিতে এর চেয়ে বেশি বল করেছেন বামহাতি অলরাউন্ডার। সারের হয়ে প্রথম ইনিংসে ৩৩.৫ ওভার বল করে ৯ উইকেট নিয়েছেন। তার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ২৯.৩ ওভার বল করে নেন ৫ উইকেট। খরচ করেন ৯৬ রান।

তৃতীয় দিন খেলার আগে সাবেক ভারতীয় স্পিনার ও স্টার স্পোর্টসের ধারাভাষ্যকার মুরালি কার্তিককে দেখা যায় সাকিবের সঙ্গে কথা বলতে। তার পর ম্যাচের সময় সাকিবের আঙুলের সমস্যা নিয়ে ধারাভাষ্যে আলোচনা করেন তিনি। ধারাভাষ্যে থাকা তামিম ইকবাল জানতে চান, সাকিবের সঙ্গে তার কী কথা হয়েছে। তখনই ঘটনার ব্যাখ্যায় মুরালি জানান, ‘তাকে অনেক দিন ধরেই চিনি এবং জানি। তাই তাকে প্রশ্ন করেছিলাম কেন, পর্যাপ্ত বোলিং করেনি। জবাবে সে বলেছে, আঙুলে তার অস্ত্রোপচার হয়েছে।’

সেই সময় জানা যায় সাকিব তার বোলিং ফিঙ্গারে অস্ত্রোপচার করিয়েছেন। মুরালি আরও বলেন, ‘বোলিং ফিঙ্গারে সে অস্ত্রোপচার করিয়েছে। এখনও সেই জায়গা ফুলে আছে।  জায়গাটা অনমনীয় এবং কোনও ধরনের মুভমেন্ট নেই। তাছাড়া সেখানে কোনও ধরনের অনুভূতিও টের পাচ্ছেন না।’

আর সেই অনুভূতি টের না পাওয়াতেই সমস্যা হচ্ছে সাকিবের। কার্তিকের মতে, ‘স্পিনার হিসেবে এই অনুভূতি টের পাওয়া খুবই জরুরি। তাছাড়া কাঁধ নিয়েও সে সমস্যায় ভুগছে। তাই সব মিলে তার জন্য বল করাটা কঠিন হয়ে পড়ছে।’ 

তামিম তখন প্রশ্ন করেন, ‘মুরালি কার্তিক বলে গেছে, আঙুলের সমস্যার কারণে সাকিব বল গ্রিপ করতে পারছে না। যদি তা-ই হয়, তাহলে বাংলাদেশ চারজন ফ্রন্টলাইন বোলার নিয়ে খেলছে। টিম ম্যানেজমেন্টের অবশ্যই জানানো উচিত, তারা এই ইনজুরির কথাটা আগে থেকেই জানতো কি না।’

তামিমের প্রশ্নের উত্তর মিলেছে। পরে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী নিশ্চিত করেছেন, সাকিব গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ থেকেই ইনজুরি বয়ে চলছেন। ব্যাট করার সময়ই তখন আঙুলে চোট পান তিনি। পরে এক্স-রে থেকে জানা যায় আঙুলে ফ্র্যাকচার হয়েছে তার।

দেবাশীষ আরও জানিয়েছেন, সম্প্রতি এই ইনজুরি নিয়ে সাকিব কোনও সমস্যার কথা জানাননি। তবে নতুন অস্ত্রোপচারের কথা নিশ্চিত করেননি, ‘২০১৮ সালের এশিয়া কাপের সময় ইনজুরি ছিল। তার পর ওয়ানডে বিশ্বকাপে তর্জনিতে আরেকটি ইনজুরিতে সে আক্রান্ত হয়। যে কারণে একমাসের বিশ্রামে থাকতে হয় তাকে। যদিও এ বিষয়ে সে কখনও সমস্যার কথা আমাদের জানায়নি। অবশ্যই সেখানে একটা ফ্র্যাকচার আছে। সেটা নিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও খেলেছে। কিন্তু নতুন করে সে অস্ত্রোপচার করায়নি।’

কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাটিং কোচ ডেভিড হেম্প এই বিষয়ে একদমই জানতেন না। তৃতীয় দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তাকে সাকিবের ইনজুরি নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘এই বিষয়টি নিয়ে আমার জানা নেই। তাই আমি এই ব্যাপারে কিছু বলতে পারছি না।'