৮ বছর আগে ২০১৭ সালে ইংল্যান্ডে সর্বশেষ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি মাঠে গড়িয়েছিল। সেবার মাশরাফির বাংলাদেশ ভারতের কাছে হেরে বিদায় নেয় সেমিফাইনাল থেকে। বার্মিংহামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটি জিততে পারলেই স্বপ্নের ফাইনাল খেলতে পারতো বাংলাদেশ। হারলেও অবশ্য যে কোন বৈশ্বিক আসরে সেটাই বাংলাদেশের সেরা সাফল্য। ৮ বছর পর দুবাইয়ে বৃহস্পতিবার ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশের এবারের অভিযান। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে নাজমুল হোসেন শান্ত জানিয়েছিলেন, চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্যই যাচ্ছেন তারা। অধিনায়কের এই কথায় চলছে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ। শান্তর সামনে এখন দুটো চ্যালেঞ্জ! এক, ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের জবাব, অন্যটি বার্মিংহামে হারের প্রতিশোধ।
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার ম্যাচটা মাঠে গড়াবে বিকাল ৩টায়। সরাসরি সম্প্রচার করবে টি-স্পোর্টস।
গত কয়েক বছর ধরেই ক্ল্যাসিক দ্বৈরথে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ-ভারত লড়াই। দুই দলের লড়াইয়ে বাড়তি উত্তেজনার পারদ ছড়ায়। বিশেষ করে ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপের অগ্নিগর্ভ কোয়ার্টার ফাইনালের পর থেকে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের খেলা চিত্তাকর্ষক দ্বৈরথে পরিণত হয়েছে। মাঠ ও মাঠের বাইরে কথার লড়াইয়েও থাকে সেই ছাপ। আজ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আবারও দল দুটি মুখোমুখি। যদিও সমর্থকদের উত্তেজনা ক্রিকেটারদের খুব বেশি ভাবাচ্ছে না। ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের অধিনায়ক শান্ত বলেছেন, ‘বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ নিয়ে সব সময় তো উত্তেজনা থাকে। আমার মনে হয় ক্রিকেটাররা এটা নিয়ে এতটা ভাবে না। পরিকল্পনা কীভাবে বাস্তবায়ন করবে, সেদিকেই মনোযোগ দেয়। মাঠে যত ঠাণ্ডা থাকা যায়, সেটা নিয়ে চিন্তা করে সবাই।’
দুবাইয়ের ভেন্যু দুই দলের কাছেই পরিচিত। কন্ডিশনও প্রায় একই। ভারতের বিপক্ষে সবশেষ ৫ ওয়ানডের তিনটিই জিতেছে বাংলাদেশ। বাকি দুই ম্যাচ জিতেছে ভারত। মুখোমুখি লড়াইয়ের বাইরে অবশ্য সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে ভারত এগিয়ে। ইংল্যান্ডকে ওয়ানডে সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে ধবলধোলাই করার সুখস্মৃতি আছে রোহিত শর্মাদের। অন্যদিকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স হতাশাজনক। তবু শান্তর কণ্ঠে আত্ববিশ্বাসের সুর, ‘আমি মনে করি ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং সব বিভাগে ভালো খেলতে হবে। এই সংস্করণে সবশেষ কয়েকবছর যেভাবে খেলে আসছি, আমি মনে করি আমরা ভালো দল। কন্ডিশন একই আছে, আমরা তৈরি আছি, ম্যাচে ভালো কিছুর জন্য আশা করছি।’
সবশেষ ভারত সফরে নাহিদ রানা ছিলেন আলোচনার কেন্দ্রে। গতির ঝড় তুলে খাবি খাইয়েছেন বিরাট কোহলি-রোহিত শর্মাদের। আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মতো বড় টুর্নামেন্টে মাঠে নামার আগেই আলোচনায় রানা। শান্তও মনে করেন, এই পেসার হতে পারেন ট্রামকার্ড, ‘রানা অবশ্য যে রকম বোলিং করছে ওর ওপর একটু বাড়তি নজর থাকবেই। কিন্তু ওকে দেখে কখনো মনে হচ্ছে না যে ও প্রেশারে আছে, ও নরমাল আছে। ঠিকমতো অনুশীলন করে যাচ্ছে, কালকে যদি ওর খেলার সুযোগ হয় তাহলে অবশ্যই সেরাটা দেবে আমি বিশ্বাস করি।’
এদিকে, বাংলাদেশের সাথে ম্যাচের আগের দিন রোহিত শর্মার সংবাদ সম্মেলনে কোনও প্রশ্নেই ছিল না বাংলাদেশ নিয়ে। রোহিতের উত্তরেও ছিল না বাংলাদেশ প্রসঙ্গ! এক প্রশ্নের উত্তরে রোহিত শুধু বলেছেন, ‘২০১৭ সালের পর এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আট বছর হয়ে গেল। দেখুন আপনি যতগুলো আইসিসি ইভেন্ট খেলবেন প্রতিটিই জিততে চাইবেন। প্রতিটি সমান গুরুত্বের। শুধু এই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নয়, শেষ বিশ্বকাপ যেটা আমরা খুব ভালো খেলেছি সবগুলোই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এবারও তার কোনও পরিবর্তন হবে না। আমরা এখানে শিরোপা উঁচিয়ে ধরতেই এসেছি। তবে শিরোপা ধরার জন্য বেশ কিছু বিষয় সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা জরুরি। দল হিসেবে আমাদের নজর থাকবে মাঠে নিজেদের কাজগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা এবং সামনে এগিয়ে যাওয়া। এটাই আমাদের লক্ষ্য ভাবনা।’