দ্বিতীয় দিন শেষে ২৫ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ

প্রথম টেস্টের সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে ১৩ ওভারে ৫৭/১ (জয় ২৮*, মুমিনুল ১৫*; সাদমান ৪); বাংলাদেশ পিছিয়ে ২৫ রানে।

জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংসে ৮০.২ ওভারে ২৭৩/১০ ( এনগারাভা ২৮*; কারান ১৮, বেনেট ৫৭, ওয়েলচ ২, আরভিন ৮, মাধেভেরে ২৪, উইলিয়ামস ৫৯, মায়াভো ৩৫, মাসাকাদজা ৬, মুজারাবানি ১৭)। লিড ৮২

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ৬১ ওভারে ১৯১/১০ (খালেদ ০*; সাদমান ১২, জয় ১৪, শান্ত ৪০, মুশফিক ৪, মুমিনুল ৫৬, মিরাজ ১, তাইজুল ৩, হাসান ১৯, জাকের ২৮, নাহিদ ০)

মেহেদী হাসান মিরাজের দারুণ বোলিংয়ে জিম্বাবুয়েকে বড় সংগ্রহ করতে দেয়নি বাংলাদেশ। সিলেট টেস্টের দ্বিতীয় দিন এই স্পিনার পাঁচ উইকেট নিয়ে সফরকারীদের ২৭৩ রানে গুটিয়ে দেন। ৮২ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস খেলতে নেমে বাংলাদেশ চতুর্থ ওভারেই ওপেনার সাদমান ইসলামকে হারায়। আরেকটি উইকেট হারাতে পারতো। মাহমুদুল হাসান জয় জীবন পাওয়ায় এক উইকেট হারিয়েই দিন শেষ করেছে স্বাগতিকরা। জয় ২৮ ও মুমিনুল ১৫ রানে অপরাজিত আছেন।

বাংলাদেশ ১ উইকেটে করেছে ৫৭ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে এখনও তারা ২৫ রানে পিছিয়ে।

সাদমানের আউটের পর জীবন পেলেন জয়

ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে মুজারাবানির বলে ফিরতে পারতেন আরেক ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। ব্যাটের কানায় বল লেগে পেছনে ক্যাচ গেলেও সেটা গ্লাভসে জমাতে পারেননি মায়াভো। জয় জীবন পেয়েছেন ৬ রানে। 

চতুর্থ ওভারেই ফিরলেন সাদমান

প্রথম ইনিংসে কিছুক্ষণ প্রতিরোধ গড়তে পারলেও দ্বিতীয় ইনিংসে পুরোপুরি ব্যর্থ ওপেনার সাদমান ইসলাম। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে ব্লেসিং মুজারাবানির অফ স্টাম্পের বাইরের বল খেলতে গিয়ে দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। ফেরার আগে সাদমান করেছেন ৪ রান। তাতে ১৩ রানে পড়েছে বাংলাদেশের প্রথম উইকেট। 

মিরাজের ৫ উইকেট শিকারে ২৭৩ রানে থামলো জিম্বাবুয়ে

সিলেটে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১৯১ রানে থেমেছে বাংলাদেশ। বিপরীতে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ভালো জবাব দিয়েছে জিম্বাবুয়ে। পেয়েছে ৮২ রানের লিড।

সফরকারীরা প্রথম ইনিংসে অলআউট হয়েছে ২৭৩ রানে। যার মঞ্চটা গড়ে দেন ওপেনার ব্রায়ান বেনেট। সকালে তাকে ৫৭ রানে থামিয়েছেন নাহিদ। নাহিদ, হাসান দ্রুত তিন উইকেট পতনে ভূমিকা রাখলে তার পর ম্যাচটা নিজেদের হাতে রাখতে ভূমিকা রাখেন অভিজ্ঞ শন উইলিয়ামস। তার ৫৯ রানের ইনিংসে জিম্বাবুয়ে লিড নিয়েছে। এ সময় তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন ওয়েসলি মাধেভেরে (২৪)। পরে লিড বাড়াতে ভূমিকা রাখেন নিয়াশা মায়াভো (৩৫)। তৃতীয় সেশনে মিরাজ তাকে বিদায় দিয়ে পর পর দুটি উইকেট তুলে অষ্টম উইকেটের পতনে ভূমিকা রাখলেও শেষ দিকে দ্রুত রান তুলে বাংলাদেশের হতাশা বাড়ান রিচার্ড এনগারাভা ও ব্লেসিং মুজারাবানি। ৩৬ রান যোগ করেন তারা। মুজারাবানিকে (১৭) ফেরানোর পর অবশ্য ইনিংস গুটিয়ে যেতে সময় লাগেনি। জিম্বাবুয়ে ২৭৩ রানে অলআউট হয়েছে। ২৮ রানে অপরাজিত থাকেন এনগারাভা।      

৫২ রানে এগারোতম বারের মতো পঞ্চম উইকেট শিকার করেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তাছাড়া শুরুর দিকে দারুণ বোলিং করা নাহিদ রানা ৭৪ রানে তিন উইকেট নিয়েছেন। একটি করে নিয়েছেন হাসান মাহমুদ ও খালেদ আহমেদ। 

মিরাজ চতুর্থ উইকেট পেলেও লিড বাড়িয়ে নিচ্ছে জিম্বাবুয়ে

চায়ের বিরতির পর মিরাজের দুই উইকেট শিকারে আট উইকেট হারিয়ে বসে জিম্বাবুয়ে। তার পরেও রান চাকা থেমে থাকেনি। সফরকারীদের হয়ে দ্রুত লিড বাড়িয়ে নিতে থাকেন মুজারাবানি ও এনগারাভা। ৩৬ রান যোগ করে বাংলাদেশের হতাশা বাড়ান তারা। নবম উইকেটের এই জুটি ভেঙে চতুর্থ উইকেট শিকার করেছেন মিরাজ। মুজারাবানিকে স্টাম্পড করিয়েছেন তিনি। ফেরার আগে ১৬ বলে ১৭ রান করেছেন জিম্বাবুয়ে পেসার। তাতে ছিল ২টি চার ও ১টি ছয়ের মার।  

চায়ের বিরতির পর মিরাজের আঘাত

মায়াভোর ব্যাটে ভর করেই চায়ের বিরতির আগে লিড বাড়াচ্ছিল জিম্বাবুয়ে। বিরতির পর মায়াভোকে বিদায় দিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তার ঘূর্ণিতে এলবিডাব্লিউ হয়েছেন জিম্বাবুয়ের উইকেটকিপার ব্যাটার। ফেরার আগে করেছেন ৩৫ রান।

এক ওভার বিরতি দিয়ে আবার মিরাজ আঘাত করলে এবার বিদায় নেন ওয়েলিংটন মাসাকাদজা। মারার বল দিলে সেই ফাঁদে পা দিয়ে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। তাতে পড়ে জিম্বাবুয়ের অষ্টম উইকেট।     

২২ রানের লিড নিয়ে চায়ের বিরতিতে জিম্বাবুয়ে

প্রথম সেশনে দ্রুত বেশ কিছু উইকেট হারালেও দ্বিতীয় সেশনে দারুণ প্রতিরোধে ঘুরে দাঁড়ায় জিম্বাবুয়ে। শন উইলিয়ামসের ব্যাটে ভর করেই লিড নেয় তারা। এই সেশনে শুরুতে মাধেভেরেকে (২৪) ফিরিয়ে উইলিয়ামসের সঙ্গে তার ৪৮ রানের জুটি ভেঙেছেন খালেদ। কিন্তু শন (৫৯) প্রান্ত আগলে জিম্বাবুয়েকে লিডের পথে তুলে বিদায় নিয়েছেন। তার পর নিয়াশা মায়াভো ও ওয়েলিংটন মাসাকাদজার ব্যাটে ২২ রানের লিড নিয়ে চায়ের বিরতিতে গেছে সফরকারী দল। দ্বিতীয় সেশন শেষে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ২১৩। ব্যাট করছেন মায়াভো (৩১) ও মাসাকাদজা (২)।

এই সেশনটা নিজেদের করে নিতে ৮০ রান যোগ করেছে জিম্বাবুয়ে। শন উইলিয়ামস থাকলে লিডের চেহারা আরও ভদ্রস্থ হতো। 

জিম্বাবুয়েকে লিড নেওয়ার পথে তুলেছেন উইলিয়ামস।মেরে খেলতে গিয়ে আউট উইলিয়ামস

প্রান্ত আগলে জিম্বাবুয়েকে লিডের পথে তুলেছেন শন উইলিয়ামস। দৃঢ়চেতা ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশকে হতাশ করছিলেন তিনি। সেই উইলিয়ামস দলের ২ রানের লিডের পর থেমেছেন ৫৯ রানে। মূলত মেহেদী হাসান মিরাজের বলে মেরে খেলতে গিয়ে মাহমুদুল হাসান জয়ের হাতে তালুবন্দি হয়েছেন জিম্বাবুয়ে ব্যাটার। উইলিয়ামসের ১০৮ বলের ইনিংসে ছিল ৬টি চার ও ২টি ছয়। 

৪৮ রানের জুটি ভাঙলেন খালেদ

দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনে বাংলাদেশ দাপট দেখালেও দ্বিতীয় সেশনে প্রতিরোধ গড়েছিলেন শন উইলিয়ামস ও ওয়েসলি মাধেভেরে। পঞ্চম উইকেটে তাদের ৪৮ রানের জুটিতে লিড নেওয়ার কাছে চলে আসে সফরকারীরা। এই জুটি ভেঙেছেন খালেদ আহমেদ। শর্ট লেংথের ডেলিভারিতে মাধেভেরেকে খেলতে বাধ্য করেছেন। কিন্তু বাউন্স করা বল ঠিকমতো খেলতে পারেননি জিম্বাবুয়ে ব্যাটার। ব্যাটের কানায় লেগে বল আঘাত করে স্টাম্পে। ফেরার আগে মাধেভেরে ৩৩ বলে ২৪ রান করেছেন।  

উইলিয়ামস-মাধেভেরের জুটিতে লিড নেওয়ার কাছে জিম্বাবুয়ে

আরভিন বিদায় নিলেও প্রান্ত আগলে খেলছেন অভিজ্ঞ শন উইলিয়ামস। বিরতির পর ওয়েসলি মাধেভেরের সঙ্গে মিলে জুটি গড়েছেন তিনি। তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফিফটি। তাতে ব্যবধান আরও কমিয়ে লিড নেওয়ার পথে সফরকারীরা।   

৪ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশন বাংলাদেশের

প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশকে ১৯১ রানে অলআউটের পর গতকাল উদ্বোধনী জুটিতে দারুণ সূচনা পেয়েছিল জিম্বাবুয়ে। দ্বিতীয় দিন সকালে ৬৯ রানের সেই জুটি ভেঙে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান নাহিদ রানা। ফেরান বেন কারানকে (১৮)। দ্রুত সময়ে তার আঘাতে বিদায় নেন দারুণ খেলতে থাকা ব্রায়ান বেনেটও (৫৭)। তার পর ৮৮ রানে হাসান মাহমুদ আঘাত হানলে দ্রুত সময়ে তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে জিম্বাবুয়ে। সেখান থেকে দলের ইনিংস মেরামতে অবদান রাখছিলেন শন উইলিয়ামস ও অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন। লাঞ্চের আগে অধিনায়ক আরভিনকে ফিরিয়ে সেই প্রতিরোধও ভেঙেছেন রানা।

প্রথম সেশন শেষে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১৩৩ রান। সফরকারীরা এখনও ৫৮ রানে পিছিয়ে। ব্যাট করছেন উইলিয়ামস (৩৩) ও ওয়েসলি মাধেভেরে (৪)।

দ্বিতীয় দিন সকালের প্রথম সেশন নিজেদের করে নিতে সবচেয়ে বড় অবদান নাহিদ রানার। ৪৬ রানে তিন উইকেট নিয়েছেন তিনি। হাসান ৩৬ রানে নিয়েছেন একটি। বাংলাদেশ এই সময়ে ৬৬ রান দিয়ে ২৩.৫ ওভারে ৪ উইকেট নিয়েছে। 

রিভিউ নিয়ে আরভিন-উইলিয়ামসের প্রতিরোধ ভাঙলো বাংলাদেশ

প্রথম ঘণ্টায় দ্রুত তিন উইকেট নিয়ে জিম্বাবুয়েকে চেপে ধরেছিল বাংলাদেশ। তার পর প্রতিরোধ গড়ে খেলতে থাকে ক্রেইগ আরভিন ও শন উইলিয়ামস জুটি। লাঞ্চের আগে ৪১ রানের সেই জুটি ভেঙেছে বাংলাদেশ। 

অবশ্য সেই জুটি ভাঙতে রিভিউ নিতে হয়েছে। নাহিদ রানার বাউন্সি ডেলিভারি আরভিনের ব্যাট স্পর্শ করে কিপারের কাছে গেলেও শুরুর আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। শান্ত তার পর রিভিউ নেওয়াতে মিলেছে সাফল্য। তাতে নাহিদের তৃতীয় শিকারে পরিণত হন ৮ রান করা আরভিন।   

নাহিদের পর হাসানের আঘাতে পড়লো জিম্বাবুয়ের তৃতীয় উইকেট

নাহিদের দ্বিতীয় সাফল্যের পরের ওভারেই আঘাত হানেন আরেক পেসার হাসান মাহমুদ। তাও দুর্দান্ত এক ইনসুইঙ্গারে। নতুন নামা নিক ওয়েলচ (২) তার ভেতরে ঢুকে পড়া বল বুঝতেই পারেননি। বল ব্যাট-প্যাডের ফাঁক দিয়ে উপড়ে ফেলে অফ স্টাম্প! তাতে ৬৯ রানে প্রথম উইকেট হারানো জিম্বাবুয়ে ৮৮ রানের মধ্যে দ্রুত হারিয়েছে ৩ উইকেট!   

দ্বিতীয় সাফল্যও এনে দিলেন নাহিদ

গতকাল কোনও উইকেটই নিতে পারেনি বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিন সকালে জিম্বাবুয়েকে বিপদে ফেলেছে বাংলাদেশের পেস আক্রমণ। নাহিদ রানা শুরুর জুটি ভাঙার পর চড়াও হয়ে খেলতে থাকা হাফসেঞ্চুরিয়ান ব্রায়ান বেনেটকেও সাজঘরে পাঠিয়েয়েছেন। প্রথম উইকেটের মতো দ্বিতীয় উইকেটও নিয়েছেন শর্ট বল ডেলিভারিতে। বাড়তি বাউন্স আর গতির সঙ্গে পেরে উঠেননি জিম্বাবুয়ে ওপেনার। বল ব্যাটের কানায় লেগে জমা পড়ে জাকের আলীর গ্লাভসে। তাতে ৫৭ রানে ফিরেছেন বেনেট। তার ৬৪ বলের ইনিংসে ছিল ১০টি চার।    

অবশেষে শুরুর জুটি ভাঙলেন নাহিদ

গতকাল থেকেই বাংলাদেশের ওপর চড়াও হয়ে খেলছিল জিম্বাবুয়ের ওপেনিং জুটি। সেই জুটি অবশেষে দিনের শুরুতে ভেঙে স্বস্তি ফিরিয়েছেন পেসার নাহিদ রানা। দিনে নিজের দ্বিতীয় ওভারে ওপেনার বেন কারানকে শর্ট বলের ফাঁদে ফেলে সাফল্য পেয়েছেন। তার বাড়তি বাউন্সের বল ঠিকমতো খেলতে পারেননি কারান। বল গ্লাভসে লেগে জমা পড়ে শর্ট লেগে থাকা মুমিনুল হকের হাতে। তাতে ভেঙেছে ৬৯ রানের ওপেনিং ‍জুটি। ফেরার আগে ৫৫ বলে ২ চারে ১৮ রান করেছেন কারান।  

ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় দ্বিতীয় দিন শুরু বাংলাদেশের

প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের করা ১৯১ রানের জবাবে খেলতে নেমে শুরুটা ভালো করেছে জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের সিম অ্যাটাককে পাত্তা না দিয়ে সফলভাবে প্রথম দিন শেষ করেছিল। কোনও উইকেট না হারিয়ে স্কোরবোর্ডে যোগ করে ৬৭ রান। দ্বিতীয় দিনে তাদের শুরুর জুটি ভাঙার আশায় বাংলাদেশ খেলতে নেমেছে। 

প্রথম দিনে সফরকারীরা দাপট দেখালেও বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে এদিন খেলতে নেমেছে। অবশ্য এদিন সকাল থেকেই আকাশ মেঘলা। দুই ওপেনার বেন কারান ও ব্রায়ান বেনেট অবিচ্ছিন্ন থেকে মাঠে নেমেছেন।