রহমতগঞ্জের এই অবস্থান কখনও ভাবেননি কামাল বাবু

রহমতগঞ্জের এই অবস্থান কখনও ভাবেননি কামাল বাবু চলতি মৌসুমে জেবি বাংলদেশ প্রিমিয়ার লিগে বিস্ময় সৃষ্টিকারী দল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে পুরনো ঢাকার দল রহমতগঞ্জ। নয় খেলায় ১৯ পয়েন্ট নিয়ে তারা রয়েছে পযেন্ট তালিকার শীর্ষে। জাতীয় পর্যায়ের ফুটবলে যা এর আগে কখনই তারা করতে পারেনি। প্রতিষ্ঠিত দলগুলো যখন বড় অঙ্কের বাজেটে দল গড়ে হিমশিম খাচ্ছে। তখন ছোট দল হিসেবে খ্যাত রহমতগঞ্জকে অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন কোচ কামাল আহমেদ বাবু। বাংলা ট্রিবিউনকে যিনি ভাগাভাগি করেছেন নিজের পথচলার অভিজ্ঞতা।

শুরুতেই প্রশ্ন করা হয়েছিল- দল আজ যে অবস্থানে গিয়েছে, সেটি কি কখনও ভেবেছিলেন? উত্তরে সরাসরি না বলেন কোচ। তিনি বলেন, ‘মৌসুমের শুরুতে যখন আমি দল গঠন করে মাঠে নামলাম তখন আমার মনে হয়েছিল এ দলটিতে লড়াকু মানসিকতা আছে। দলটি প্রতিটি ম্যাচে লড়বে; এটিই ছিল আমার প্রাথমিক লক্ষ্য। তবে আমি এ দল নিয়ে কোটি কোটি টাকার দল টপকে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে পৌঁছাবো তা আমি কখনও ভাবিনি। যদি বলি ভেবেছি তবে ভুল বলা হবে। হ্যাঁ, আমার একটা স্বপ্ন ছিল রহমতগঞ্জ পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থাকবে। সে স্বপ্ন আমার পূরণ হয়েছে।’

দলের এই সাফল্যেও পেছনে কোনও রহস্য দেখেন না কামাল বাবু, ‘আগেই বলেছি দলের খেলোয়াড়দের মানসিকতা, যোগ্যতা ও নিয়মানুবর্তিতা দেখে আমি এ দল নিয়ে দারুণ আশাবাদী হয়ে উঠেছিলাম। আমার সাফল্যের কোনও সংজ্ঞা নেই, আমি কঠিন পরিশ্রমে বিশ্বাসী। আমার দল কঠোর অনুশীলন করেছে ও করছে। আমি এ দলের ফিটনেস নিয়ে সন্তুষ্ট। আপনারা হয়তো দেখেছেন যে রহমতগঞ্জ শেষ বিশ মিনিটে প্রতিপক্ষের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে।’

এ পর্যন্ত যে নয়টি ম্যাচ রহমতগঞ্জ খেলেছে তার মাঝে কোনটি সবচেয়ে কঠিন ছিল এবং কোন ম্যাচটির পর দলে বাড়তি গতি আনে? এমন প্রশ্নের উত্তরে কোচ বলেন, ‘আমি বলবো চট্টগ্রাম আবাহনীর বিপক্ষে ২-০ গোলের জয়টি আমার দলের চেহারা বদলে দেয়। কাগজে-কলমে ও বাস্তবে চট্টগ্রাম আবাহনী বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের সেরা দল। তাদের বিপক্ষে জয়ের পর ভাবতে শুরু করি যে আমরা অনেক দূরে যাবো।’

কামাল বাবু কেনও সফল? এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে আড়ষ্ট এই কোচ বলেছেন, ‘নিজের কথা নিজে বলাটা ভালো দেখায় না। তবে আমি চেষ্টা করি প্রতিপক্ষকে নিজ জ্ঞ্যানে ব্যাখ্যা করতে। তাদের দুর্বলতা খুঁজি, আমি নিজেকে গেম রিডার হিসেবে ভাবতে পছন্দ করি। আর একজন ফুটবল কোচের সবচেয়ে বড় শক্তি হলো দলকে উজ্জীবিত করা। আমি তাদের বলি-তোমরা কোনও দলের চেয়ে ছোট নও, মাঠে সব দলই সমান। যারা ভলো খেলবে তারাই জিতবে। আমরা কখনই আগে হেরে যাই না।’

সফল হলেও এই মুহূর্তে শিরোপার দিকে তাকাচ্ছেন না কামাল বাবু। তিনি এগোতে চান ধীর লয়ে, ‘শিরোপা এখনও বহুদূর, আমি শিরোপা জয়ের চিন্তা করি না। প্রতিটি ম্যাচে আমরা আমাদের ধারাবাহিকতা রেখে এগিয়ে যেতে চাই। আমরা শেষ পর্যন্ত লড়ে যাবো, হাল ছাড়বো না। দেখা যাক শিরোপা জিততে পারি কিনা।’

 /আরএম/এফআইআর/