ক্রীড়াঙ্গনের কালো দিন

বিমান দূর্ঘটনায় ব্রাজিলিয়ান ফুটবলারদের করূণ মৃত্যুসবুজ রঙা লোগোতে ‘এসিএফ’ লেখাটি বোঝা যাচ্ছে স্পষ্ট। উপরে অক্ষর তিনটির পূর্ণ রূপ-অ্যাসোসিয়েকাও শাপেকোয়েনসে দি ফুতবল। যদিও স্যাঁতসেঁতে কাদার কারণে লেখাটি স্পষ্ট নয়। এই লোগো, এই দলের জন্য লড়াই করতে ব্রাজিল থেকে কলম্বিয়ার উদ্দেশে উড়াল দিয়েছিল ক্লাবটি খেলোয়াড়রা। কে জানতো কঠিন এক ট্র্যাজিডির শিকার হয়ে চলে যেতে হবে তাদের না ফেরার দেশে। শাপেকোয়েনেসের নাম বিশ্বজুড়ে শোনা যাবে আর্তনাদ আর হাহাকারের কণ্ঠে।

ব্রাজিলের এই ক্লাবের নাম খুব বেশি মানুষের শোনার কথা নয়। ৪৩ বছর আগে লাতিন আমেরিকার দেশটির শাপেকো শহরে যাত্রা শুরু করা ক্লাবটি প্রচারের আলোয়, মানুষের মনের গহীনে ঢুকে গেল এবার ঠিকই, তবে সেটা কঠিন এক ট্র্যাজেডির জন্ম দিয়ে। ব্রাজিল থেকে কলম্বিয়ায় দলটি যাচ্ছিল সুদামেরিকানা টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলতে। প্রতিপক্ষ ছিল কলম্বিয়ার ক্লাব অ্যাতলেতিকো ন্যাসিওনাল। কিন্তু যাওয়ার পথেই বিমান দূর্ঘটনায় সব শেষ। বিমানে থাকা ৮১ যাত্রীর ৭৬ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে পুলিশ। জানা গেছে বেঁচে থাকা পাঁচজনের মধ্যে তিন ফুটবলার আছেন শাপেকোয়েনেসের। যদিও বেঁচে থেকেও সারাজীবন বিভীষিকাময় মুহূর্ত আর প্রিয় মানুষ হারানোর বেদনা নিয়েই কাটাতে হবে তাদের।

বুধবার কলম্বিয়ার মেদেলিনে স্বাগতিক অ্যাতলেতিকো ন্যাসিওনালের বিপক্ষে ফাইনালের প্রথম লেগ খেলার কথা ছিল শাপেকোয়েনেসের। গত সপ্তাহে তিন বছরের মধ্যে ব্রাজিলের প্রথম দল হিসেবে তারা নিশ্চিত করে সুদামেরিকানার ফাইনাল। মর্যদার দিক থেকে লাতিন অঞ্চলের দ্বিতীয় সেরা এই টুর্নামেন্টের ফাইনাল নিশ্চিত করেছিল ব্রাজিলিয়ান ক্লাবটি আর্জেন্টিনার স্যা লরেঞ্জোকে হারিয়ে। ফাইনালে উঠার আনন্দে গোটা ব্রাজিল ফুটবলই মিলেছিল এক মোহনায়। আর্জেন্টাইন দলকে হারানো বলে কথা। লক্ষ্য ছিল এবার ফাইনাল জয়ের। কিন্তু সেই ফাইনাল খেলতে গিয়ে ‘জীবনের ফাইনাল’ ম্যাচটাই খেলে ফেললেন ক্লাবটির খেলোয়াড়, কোচ, কর্মকর্তারা।

এই ট্র্যাজিডিতে হাহাকার আর কান্নায় ভারি হয়ে উঠেছে ব্রাজিলের বাতাস। শুধু ব্রাজিল কেন, স্তব্দ গোটা ক্রীড়াঙ্গনই।

/কেআর/