১৯৭১ সালের ২৫ জুলাই ভারতের নদীয়ার কৃষ্ণনগরে প্রথম মাঠে নেমেছিলেন পিন্টু-সালাউদ্দিনরা। সেই ম্যাচের পরতে পরতে ছিল উত্তেজনা, শিহরণ। তখনও বাংলাদেশ স্বীকৃতি পায়নি। তবে ফুটবলারদের দাবি মেনে ম্যাচের আগে বাংলাদেশের পতাকা উঠেছে মাঠে, বেজেছে ‘আমার সোনার বাংলা’।
তারপর আরও ১৫টি ম্যাচ খেলেছিল দলটি, সাড়া ফেলে দিয়েছিল পুরো ভারতে। মুম্বাইয়ে (তখন নাম ছিল বম্বে) একটি ম্যাচে স্বাধীন বাংলা দলের বিপক্ষে খেলেছিলেন ভারতের ক্রিকেট তারকা মনসুর আলী খান পতৌদি। সেই ম্যাচে গ্যালারিতে ছিলেন বলিউড কিংবদন্তি দিলীপ কুমার ও প্রখ্যাত অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর।
স্বাধীনতার ৪৭ বছর কেটে গেলেও স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল কোনও সম্মাননা পায়নি। দলের ৩৫ সদস্যের ৯ জন আজ আর পৃথিবীতে নেই। দল বঞ্চিত হলেও ১৯৯৫ সালে জাকারিয়া পিন্টু এবং পরের বছর সালাউদ্দিন পেয়েছেন স্বাধীনতা পুরস্কার।
দলটির অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টুর দাবি, ‘আমি অনেকবার এই দলকে স্বাধীনতা বা জাতীয় পুরস্কার দেওয়ার অনুরোধ করেছি সরকারকে। বুঝতে পারছি না আমাদের দলকে কেন এভাবে বঞ্চিত করা হচ্ছে। বর্তমান সরকার তো মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার, তারা তো দিতে পারে। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলকে অবশ্যই পুরস্কার দেওয়া উচিত।’
স্বাধীন বাংলা দলের প্রস্তাবক ও সদস্য সাইদুর রহমান প্যাটেলও ব্যথিত, ‘এটা আমাদের খুব কষ্টের জায়গা। স্বাধীনতা যুদ্ধে অনেক বড় অবদান রেখেও স্বাধীন বাংলা দল কোনও স্বীকৃতি পায়নি। অথচ এই দলের প্রত্যেকেই ছিলেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত। সেই সময় ভারতীয় পত্রিকায় লেখা হতো বাংলাদেশের দুটো রণাঙ্গন—একটা সশস্ত্র, অন্যটা ক্রীড়াঙ্গন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সঙ্গে জড়িত অনেকেই পুরস্কার পেয়েছেন, এমনকি বিদেশিরাও পেয়েছেন সম্মাননা। শুধু আমাদের দল কিছু পায়নি।’
তার আশা, একদিন দলটি স্বীকৃতি পাবে, ‘এটা জাতির জনকের দল। আমরা আশা নিয়ে বেঁচে আছি, একদিন শুভ সংবাদ পাবোই।’
আরও পড়ুন-
দ্বিচক্র যানে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন (ফটো স্টোরি)
যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা
রাজারবাগে অস্ত্রাগার খুলে দিয়েছিলেন আবু শামা
‘আমরা যেখানে রেখে যাবো, তোমরা সেখান থেকে দেশকে আরও উন্নতির পথে নিয়ে যাবে’