‘কালো চিতা’ মনু আর নেই

মোহামেডানের জার্সিতে মনির হোসেন মনুবঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে, কিছুটা সুস্থ হয়ে মুগদার বাসায় ফিরে গিয়েছিলেন মনির হোসেন মনু। কিন্তু রোগ-ব্যাধি সাবেক তারকা ফুটবলারের শরীরে এমনভাবে বাসা বেঁধেছিল যে আবার ভর্তি হয়েছিলেন হাসপাতালে। শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর সঙ্গে লড়াইয়ে জয়ী হতে পারেননি। লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয়ে আজ  দুপুরে বঙ্গবন্ধু মেডিক্যালেই না ফেরার দেশে চলে গেছেন মোহামেডানের ‘কালো চিতা’  মনু।

আশির দশকে ধুমকেতুর মতো তার ফুটবলে আগমন।  বিআরটিসির হয়ে দ্বিতীয় বিভাগে শুরু ক্যারিয়ার, তারপর প্রথম বিভাগ। ১৯৮৪ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত মোহামডানে দাপটের সঙ্গে খেলেছেন তিনি। জাতীয় দলে প্রথম খেলেন ১৯৮৫ সালের সাফ গেমসে।  ১৯৮৬ সালে আবাহনীর বিপক্ষে প্রায় মাঝমাঠ থেকে দুর্দান্ত গোল করেছিলেন। আর সেই গোলে চার বছর পর লিগ শিরোপা উঠেছিল মোহামেডানের ঘরে। পরের বছর প্রেসিডেন্ট গোল্ডকাপে চীনের বিপক্ষে বাংলাদেশ সাদা দলের জার্সিতেও অসাধারণ গোল এসেছিল মনুর পা থেকে।

বল পায়ে প্রতিপক্ষের ডিফেন্স ভেঙে ঢুকে পড়তেন অনায়াসে। তাই ঢাকার ফুটবলে তার নাম হয়ে যায় ‘কালো চিতা’। আশির দশকে বেশ কয়েকটি স্মরণীয় ম্যাচের জন্ম দিলেও ইনজুরি আর ব্যক্তিগত সমস্যায় মনুর ক্যারিয়ার দীর্ঘ হতে পারেনি। তবে যতদিন খেলেছেন, ততদিন ছিলেন প্রতিপক্ষের ত্রাস।

শেষ জীবনে হাসপাতালের বিছানায়মোহামেডানে মনুর সতীর্থ সালাম মুর্শেদী স্মৃতিচারণ করে বাংলা ট্রিবিউনকে বললেন, ‘মনু ছিল চিতার মতো ক্ষিপ্র খেলোয়াড়। তার গতির সঙ্গে আমাদের পেরে উঠতে কষ্ট হতো। ১৯৮৬ সালে আবাহনীর বিপক্ষে তার দুর্দান্ত গোলে আমরা লিগ শিরোপা পাই। সেই আনন্দে তাকে চুমুও খেয়েছি। আমার থেকে কয়েক বছরের ছোট হবে। নানা কারণে তার ফুটবল ক্যারিয়ার দীর্ঘ হয়নি। ভাবতেও পারছি না এভাবে সে না ফেরার দেশে চলে যাবে!’ 

মুগদাপাড়া স্থানীয় মসজিদে জানাজা শেষে আজিমপুর কবরস্থানে সাবেক তারকা ফুটবলারকে দাফন করা হবে। মনুর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে ঢাকা মোহামেডান ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)।