রহমতগঞ্জে একজন জিলানির ছোঁয়া

মোহামেডানকে হারানোর আনন্দে কোচ জিলানিকে কোলে তুলে নিলেন রহমতগঞ্জের খেলোয়াড়রানিজেদের ক্লাব ফুটবলের ইতিহাসে এটাই প্রথম। পুরান ঢাকার রহমতগঞ্জ ফেডারেশন কাপের ফাইনালে জায়গা করে নিলো। এখন তাদের চোখে শিরোপা-স্বপ্ন।এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে উন্মুখ সবাই।

রহমতগঞ্জকে স্বপ্ন-রঙিন করে তোলার নেপথ্যে কাজ করেছেন একজন– কোচ সৈয়দ গোলাম জিলানি।মাঝারি মানের দলকে নিয়ে গেছেন ট্রফি ছোঁয়ার দ্বারপ্রান্তে!

অথচ রহমতগঞ্জ অন্যদের টপকে ফাইনালে খেলবে, তা কেউ ভাবেইনি। এমনকি কোচ জিলানিও। তিনি নিজেই যেমন বলেছেন, ‘আসলে আমি নিজেই ভাবিনি এই পর্যায়ে দলকে নিয়ে আসতে পারবো। ভেবেছিলাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হয়তো একটি পর্যায়ে বিদায় নিতে হবে। কিন্তু দল যে ফাইনালে উঠবে, তা ছিল কল্পনাতীত!’

জিলানি অবশ্য নিজের কথা বলছেন না, ফাইনালে ওঠার পেছনে পুরো দলকেই তিনি কৃতিত্ব দিচ্ছেন, ‘দলের ফাইনালে আসার পেছনে সবার অবদান আছে। এখানে আমি শুধু আমার কাজ করেছি। খেলোয়াড় ও কর্মকর্তারা সবার মধ্যে সমন্বয় না থাকলে দল ফাইনালে উঠতে পারতো না। এছাড়া আমি যা বলছি খেলোয়াড়েরা তা করে দেখাতে পারছে। এতেই আসলে কাজ কিছুটা সহজ হয়ে গেছে।’

খেলোয়াড়ি জীবনে ভিক্টোরিয়া-ব্রাদার্স ইউনিয়নে কাটানো জিলানি কোচিং পেশায় আসেন ২০০০ সালে। তৃতীয় বিভাগের কদমতলা সংসদের কোচ হয়ে দলটিকে চ্যাম্পিয়নও করেছিলেন। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।দ্বিতীয় ও প্রথম বিভাগের ক্লাবসহ জাতীয় দলের সঙ্গেও কাজ করেছেন। তার অধীনেই ২০১৫ সালে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ প্রতিযোগিতায়।

এএফসি ‘এ’ লাইসেন্সধারী কোচের নিজের ওপর বিশ্বাস আছে, আর এভাবেই তিনি এগিয়ে যেতে চান, ‘আমার কোচিং দর্শন হলো নিজেদের শক্তিমত্তা দেখে প্রতিপক্ষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়া। আমি আমার দলের শক্তি আর দুর্বলতা কোথায় তা জানি। সেই অনুযায়ী এবার ফেডারেশন কাপে খেলছি। সাফল্যও আসছে।’

গোলাম জিলানির ট্যাকটিকসের কাছে হার স্বীকার করেছেন আবাহনীর পর্তুগিজ কোচ মারিও লেমোস এবং মোহামেডানের অস্ট্রেলিয়ান শন লেনও। নকআউট পর্বে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দলেই হেরে গেছে রহমতগঞ্জের কাছে।জিলানির কথা, ‘অন্যরা আমাদের চেয়ে সবদিক দিয়ে অনেক এগিয়ে। তাদের কোচও বিদেশি। কিন্তু হারার আগে হারবো না, এই পণ করেই আমি খেলে গেছি। মাত্র দুই সপ্তাহের প্রস্তুতিতে আমরা ফাইনাল খেলছি।’

ফাইনালে রহমতগঞ্জের সামনে বসুন্ধরা কিংস। প্রথমবারের মতো ট্রফি জেতার জন্য উন্মুখ হয়ে আছেন রহমতগঞ্জের কোচ, ‘আমাদের দল ফাইনালে ওঠায় সংশ্লিষ্ট সবার মধ্যে সাড়া পড়ে গেছে। এখন ট্রফি জিততে পারলে তা হবে বড় সাফল্য। সেই পথেই যেতে চাই।’