আসন্ন প্রিমিয়ার লিগে সবার দৃষ্টি কাড়বেন বলে অপেক্ষায় আছেন। লিগে ভালো করতে পারলেই জুটতে পারে জাতীয় দলের জার্সি। ফিনল্যান্ডের অনূর্ধ-১৭ ও ১৯ দলে খেলেছেন। ফিনল্যান্ড জাতীয় দলের হয়ে খেলারও হাতছানি ছিল। কিন্তু তারিক সেই প্রলোভন আপাতত উপেক্ষা করেছেন বাংলাদেশের জন্য।
বাবা শহীদুল কাজী ১৯৮০’র দশকে ফিনল্যান্ড প্রবাসী হন। মা ফিনিশ, নাম আনু পিলয়া। চার ভাই-বোনের মধ্যে তারিক দ্বিতীয়। বাবার গ্রামের বাড়ি নওঁগাতে। সেই সূত্রে বাংলাদেশের প্রতি রয়েছে তার গভীর টান। বাবাই চাইতেন ছেলে যেন বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে।
তারিক তাই কোনও কিছু না ভেবেই বাংলাদেশের ক্লাব ফুটবলে খেলতে চলে এসেছেন, ‘বাংলাদেশ আমার বাবার দেশ। তাই আমারও। আমি চাই এখানে খেলতে। ক্লাব ফুটবলে খেলেই একসময় জাতীয় দলে নাম লেখাতে চাই। এই স্বপ্ন নিয়ে ঢাকায় এসেছি। এর জন্য আমি কঠোর পরিশ্রম করতে প্রস্তুত।’
তবে ২০ বছর বয়সী ডিফেন্ডারের সামনের চ্যালেঞ্জটা সহজ নয়। শীতপ্রধান অঞ্চল থেকে বাংলাদেশে এসে কতটুকু মানিয়ে নিতে পারবেন, এ নিয়ে সংশয় আছে। তবে সব সংশয় উড়িয়ে দিয়ে তারিক আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে বলেছেন, ‘আমি জানি এখানে মানিয়ে নেওয়াটা সহজ হবে না। অনেক গরমেও খেলতে হবে। তবে আমি সব বাধা ডিঙিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছি। যাতে বাংলাদেশের হয়ে একসময় খেলতে পারি। এখানকার ক্লাব ফুটবলেও প্রতিষ্ঠিত হতে চাই।’
তারিক কাজী বড় অনুপ্রেরণা মানেন জামাল ভূঁইয়াকে। ডেনমার্ক থেকে শুরুতে বাংলাদেশের আবহাওয়ার সঙ্গে মানিতে নিতে পারেননি জামাল। পরের বছর ঠিকই প্রস্তুতি নিয়ে এসে ক্লাব ফুটবলে দাপটের সঙ্গে খেলছেনই শুধু নয়, লাল-সবুজ দলের অধিনায়কই হয়ে গেছেন! তাই তারিক বলেছেন, ‘জামাল ভূঁইয়া ডেনমার্ক থেকে এসে এখন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক। তিনি যদি পারেন, তাহলে আমি কেন পারবো না। এই দেশের ফুটবলে প্রতিষ্ঠিত হতে হলে আমার যা যা করার দরকার তাই করবো।’
ভাঙা ভাঙা বাংলায় তারিক জানিয়েছেন তার এই দৃঢ়সংকল্প। ফিনল্যান্ডে নিজের বাসায় বাবার সঙ্গে বাংলায় কথা বলার চেষ্টা করেন। ঢাকায় খেলবেন বলে ইতিমধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্রসহ পাসপোর্ট নিয়েছেন। বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত এই ফুটবলারের বুকে প্রবল আশা, ‘বাবার মুখে এই দেশ সম্পর্কে অনেক গল্প শুনেছি। তার কাছ থেকেই আমি অনুপ্রাণিত। আমি এই দেশের একজন নাগরিক হয়ে দেশের ফুটবলকে এগিয়ে নিতে চাই।’
স্বপ্নের সঙ্গে প্রত্যাশার মিল রেখে তারিক কাজী এখন এগিয়ে যেতে পারলেই হয়।