শ্রীলঙ্কা থেকে পাকির আলী: অবস্থা কতটা খারাপ বলে বোঝানো যাবে না

১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভ করে দ্বীপ রাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। স্বাধীনতা পাওয়ার পর এমন ক্রান্তিকালের ভেতর দিয়ে কখনও যায়নি দেশটি। খাবার থেকে শুরু করে, জ্বালানি, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চরম সংকট চলছে। পুরো দেশজুড়ে এখন হাহাকার। দেশের এমন দুর্দশায় সবাই যার যার অবস্থান থেকে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ করে যাচ্ছেন। খেলোয়াড়রাও বাদ নেই। সাবেক ক্রিকেটার মাহেলা জয়াবর্ধনে-কুমারা সাঙ্গাকারাও মুখ খুলেছেন। এবার দেশটির ফুটবল কিংবদন্তি পাকির আলীও আওয়াজ তুললেন। দেশের এমন ক্রান্তিকালে বিক্ষোভ জানাতে রাস্তায় নেমে এসেছেন। চাওয়া, যে করেই হোক এমন দুর্বিষহ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ।

পাকির আলী শ্রীলঙ্কার ফুটবলে পরিচিত মুখ। লঙ্কানদের হয়ে রক্ষণ সামলেছেন বহুদিন। এছাড়া জাতীয় দলের কোচের পদেও দেখা গেছে তাকে। আর বাংলাদেশে পাকির আলী পরিচিত অন্য কারণে। দেশের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব আবাহনী লিমিটেডের হয়ে ’৮০-এর দশকে মাঠ মাতিয়েছেন। সেই সময়ে সমর্থকদের হৃদয়ে আলাদা জায়গা করে নিয়েছিলেন অনায়াসে।

এরপর তো ঢাকার ক্লাব ফুটবলে কোচিংও করিয়েছেন। সবশেষ গত মৌসুমে শেখ জামাল হয়ে পুলিশ এফসির ডাগ আউটে দেখা গেছে। একদিন আগে রাজধানী কলম্বোতে শহরবাসীর সঙ্গে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন পাকির আলী ও তার ছেলে। শ্রীলঙ্কার সবশেষ অবস্থা হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে বাংলা ট্রিবিউনকে জানাতে গিয়ে এই সাবেক তারকা বলেছেন, ‘আমরা আর ঘরে বসে থাকতে পারছি না। গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ থেকে শুরু করে সবকিছুতেই সংকট। অথচ কতই না সুন্দর আমাদের দেশটি। কখনও কল্পনাই করিনি এমন পরিস্থিতি হবে। বাধ্য হয়ে প্রতিটি পেশাজীবী রাস্তায় বিক্ষোভে নেমেছি- সরকারকে বোঝাতে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণ চাই।’

পাকির আলী মনে করেন, রাজনীতিবিদদের কারণে দেশের আজ করুণ অবস্থা। জনগণ মোটেও ভালো নেই। তার ভাষায়, ‘শ্রীলঙ্কার অবস্থা আজ কতটা খারাপ তা বলে বোঝানো যাবে না। আমরা এমনটা মোটেও চাইনি। আমরা সবাই শান্তিপ্রিয়। সবাই দেশের ভালোটা চাই। কিন্তু রাজনীতিবিদরা সেটা বুঝতে পারছেন না। তাই সবাই রাস্তায় নেমে পড়েছে ক্ষোভ প্রকাশ করতে। প্রতিবাদ জানাতে। এখন সরকারের উচিত জনগণের স্বার্থে কাজ করা।’

রাজধানী কলম্বোতে বসবাস পাকির আলীর। সেখানে সময় মেপে লোডশেডিং হচ্ছে। সবকিছুতেই ক্রাইসিস চলছে। এই অবস্থায় ফুটবলীয় কার্যক্রমেও সেভাবে অংশ নিতে পারছেন না এই সাবেক ডিফেন্ডার। তবে চাইছেন দেশের বাইরে কোচিং করাতে। তাতে করে যদি নিজের পরিবারের পাশাপাশি দেশের জন্য কিছু একটা করা যায়।

সাবেক আবাহনী তারকার বক্তব্য, ‘বাংলাদেশ আমার দ্বিতীয় বাড়ির মতো। সেখানে খেলেছি। কোচিং করিয়েছি। যদি সেখানে আবারও কোচিং করানোর সুযোগ পাই তাহলে আমার জন্য ভালো হবে। তাতে করে নিজের পরিবারের পাশাপাশি দেশের জন্য (রেমিট্যান্স) কিছুটা হলেও ইতিবাচক হবে।’

নতুন চাকরি হোক না হোক, সবুজে ঘেরা শ্রীলঙ্কার মানুষের মুখে আবারও হাসি ফুটবে, আবারও আগের মতো পরিস্থিতি দ্রুত ফিরবে- এমনটিই প্রত্যাশা পাকির আলীর।