অনুশীলনে প্রাণবন্ত এক আর্জেন্টিনা

কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে গিয়ে দেখা গেলো প্রাণবন্ত এক আর্জেন্টিনাকে। যথারীতি দলের বড় তারকা লিওনেল মেসিকে ঘিরে সবকিছু আবর্তিত। তবে অনুশীলন শুরুর একটু পরই অধিনায়ক সতীর্থদের সঙ্গে যোগ দেন। অনুশীলনের প্রথম ১৫ মিনিটে যা বোঝা গেলো, নক আউট পর্বে অপেক্ষাকৃত কম শক্তিধর অস্ট্রেলিয়াকে হালকাভাবে নিচ্ছে না দুইবারের চ্যাম্পিয়নরা।

শুরুতে মাঠের এক কোণে কৃত্রিম আলোর নিচে বল নিয়ে সবাই গা-গরম করে নিলেন। তারপর মাঠে মাঝে এসে ‘ডামি ম্যান’ সাজিয়ে কীভাবে তাদের পরাস্ত করে এগিয়ে যেতে হবে তারই যেন মহড়া চললো। ওয়ান টু পাস খেলে সামনের দিকে এগিয়ে চলার চেষ্টা তো ছিলই।

কিছুক্ষণ এমন অবস্থা চলার পর মাঠে সবাই গোল হয়ে বড় জায়গা নিয়ে ‘চোর-পুলিশ’ খেললেন। মেসি অন্যদের সঙ্গেই সাবলীলভাবে অনুশীলন করে গেছেন। সতীর্থদের যোগ্য সমর্থন দিয়ে গেছেন। আবার কোনও সময় হাসি-ঠাট্টা করে অনুশীলন পর্বটা জমিয়ে রাখেন।

এভাবে কিছু সময় অতিবাহিত হওয়ার পর সকারুদের বিপক্ষে কৌশল নিয়ে স্কালোনি রুদ্ধদ্বার অনুশীলন করিয়েছেন। ততক্ষণে আর মিডিয়াকর্মীদের আর সেখানে থাকার সুযোগ মেলেনি। তবে যতটুকু মনে হয়েছে তাতে করে এই আর্জেন্টিনা একটি সুখী পরিবার।

সৌদি আরবের কাছে অপ্রত্যাশিত হারের পর যেভাবে দল ঘুড়ে দাঁড়িয়েছে তাতে আত্মবিশ্বাসে কমতি নেই। পর্যাপ্ত রসদ নিয়েই শেষ ষোলোতে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে আলবিসেলেস্তেরা। তবে নকআউট পর্বের আগে দলে কিছুটা চাপা অস্বস্তি আছে। বিশেষ করে গ্রুপের শেষ ম্যাচ খেলার পর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আরও একটি বাঁচা-মরার লড়াইয়ে নামতে হচ্ছে। তাই ধকল তো কিছুটা থাকবেই। তারপরেও পেশাদার দল হিসেবে তা মেনে নিতে হবে। অনুশীলনে সবাইকে যেভাবে স্বতঃস্ফূর্ত মনে হলো তাতে করে আজ সকারুদের বিপক্ষে তেড়েফুড়ে খেলারই কথা।

তবে সংবাদ সম্মেলনে স্কালোনি আগাম বলে রেখেছেন,‘অস্ট্রেলিয়া, যারা (নিজেদের) গ্রুপে দ্বিতীয় হয়েছে, তারা খেলেছে সন্ধ্যা ৬টায়। আমরা গ্রুপ সেরা হয়েছি, কিন্তু খেলেছি রাত ১০টায়। আমরা ঘুমাতে যাই ভোর ৪টা। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যখন আরেকটি ম্যাচ খেলতে হয়, তখন এটি প্রভাব ফেলে।’ 

তবে সেই প্রভাব মাঠের পারফরম্যান্সে পড়লে বিপদ। যে করেই হোক নিজেদের ইতিবাচক পারফরম্যান্স ধরে রেখে এগিয়ে যেতে হবে। স্কালোনি তাই পরক্ষণেই বলেছেন,‘প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মাঠে আমরা নিজেদের সর্বোচ্চটা উজাড় করে দেবো। বিশ্বকাপ কতটা কঠিন আমরা তা জানি, এটাই ফুটবল। গতকাল (বৃহস্পতিবার)কী হয়েছে আমরা দেখেছি (জার্মানি ও বেলজিয়াম গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়েছে)। তবে এটা অবাক করার মতো ছিল না। বড় দল পরের ধাপে থাকার যোগ্য, এমনটা যখন বলা হয়, আমি বলবো, সেটি সব সময় হয় না।’ 

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বিশ্বকাপে আগে কখনও মুখোমুখি হননি মেসিরা। প্রথমবার লড়াইয়ে নেমে নিশ্চয়ই দারুণ ফল হবে– এমনটি প্রত্যাশা সমর্থকদের।