মেসি-নেইমারের পর রোনালদো কি জ্বলে উঠবেন?

বড় তারকারাই দলের প্রয়োজনে জ্বলে উঠেন। পারফর্ম করে দলকে নিয়ে যান অনন্য উচ্চতায়। এই যেমন লিওনেল মেসি কিংবা নেইমার জুনিয়র কিংবা এমবাপ্পের কথা যদি বলা হয়ে থাকে। তাহলে এখন পর্যন্ত অনায়াসে লেটার মার্ক পাবেন তারা। ত্রয়ী মিলে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল-ফ্রান্সকে একটু একটু করে নিয়ে যাচ্ছেন কাঙ্ক্ষিত শিরোপার দিকে। তাদের ওপর যে প্রত্যাশা তার পুরোটাই পূরণ করে চলেছেন তিন বড় তারকা। ঠিক তেমনি তাদের সমসাময়িক আরেক বড় তারকা ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। মেসি-নেইমার-এমবাপ্পেরা দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে চললেও রোনালদো কেন জানি মনে হচ্ছে কিছুটা ম্রিয়মাণ, নিজের সঙ্গে লড়ছেন।

গ্রুপ পর্যায়ে ইতিবাচক খেলার চেষ্টা করলেও একটির বেশি গোল আসেনি। তাও আবার পেনাল্টি থেকে। ৩৭ বছর বয়সী ফরোয়ার্ডের আজই অগ্নিপরীক্ষা হতে যাচ্ছে। তাই অবধারিতভাবে প্রশ্নটা এসেই যায়। কাতার বিশ্বকাপে শেষ ষোলোর ম্যাচে রোনালদো কি ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন?  ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপ খেলতে এসে নিজেকে আবারও প্রমাণ করার সুযোগ কি হাতছাড়া করবেন?

চারদিকে যখন এতো আলোচনা হচ্ছে তখন নিশ্চয়ই কাতারের ক্যাম্প থেকে রোনালদো কিছুটা হলেও তার আঁচ পাচ্ছেন। আর এই আঁচ যখন শরীরে জ্বালা করে উঠবে রোনালদোর মতো অভিজ্ঞ-মেধাবী ফুটবলার পারফর্ম না করে যায়-ই না।

তবে পারফর্ম করতে হলে তো আগে রোনালদোকে মাঠে নামতে হবে। আর মাঠে নামা নিয়ে কিছুটা সংশয় রয়েছে। আগের ম্যাচে যেভাবে মাঠ ছেড়ে আসছিলেন তখন রাগান্বিত মনে হয়েছিল। এছাড়া তার পারফরম্যান্স নিয়ে সমালোচনার কারণে কোচ ফেরনান্দো সন্তোষ সিআর সেভেনকে একাদশে রাখবেন কিনা দোলাচলের মধ্যে থাকলেও থাকতে পারেন।

কিন্তু কথার পিঠে অন্য কথাও থাকে। রোনালদোর মতো খেলোয়াড় মাঠে থাকা মানেই বাড়তি অনুপ্রেরণা, বাড়তি উচ্ছ্বাস। তাই রোনালদো খেলছেন তা ধরেই নেওয়া যাচ্ছে। সমালোচনা যাই থাকুন না কেন প্রতিপক্ষ সুইজারল্যান্ড কিন্তু তাকে ধরে নিয়েই ছক কষছে। এই তো গত নেশনস লিগে প্রথম রাউন্ডে যেভাবে পর্তুগালের কাছে নাকাল হয়েছিল সুইজারল্যান্ড, তা ভুলে কীভাবে। চার গোলের দুটি তো রোনালদোর কাছ থেকে এসেছিল। সুইসদের বড় তারকা জেরদান শাকিরি তো আগেভাগেই বলেছেন, ‘আপনি রোনালদোকে বাতিলের খাতায় ফেলতে পারবেন না। মেসির মতো রোনালদোও বিশ্বমানের খেলোয়াড়। অন্যতম সেরা। যে কোনও মুহূর্তে ম্যাচের দিক পরিবর্তন করে দিতে পারে। আমরা সতর্ক আছি।’

রোনালদো এখন পর্যন্ত পাঁচ বিশ্বকাপে খেলছেন। এরমধ্যে সবকটি আসরেই তার গোল রয়েছে। তবে নেই নকআউট পর্বে। যা এবার মেসি করে দেখিয়েছেন। নেইমার তো আছেনই।

শুধু তাই নয়, পর্তুগিজ কিংবদন্তী ইউসেবিওর বিশ্বকাপে করা ৯ গোলের রেকর্ডকে স্পর্শ করার সুযোগও রোনালদোর সামনে। নিজে গোল করে দলকে জিতিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে নিতে যেতে পারলে সমালোচকদের প্রতি রোনালদোর জবাবটা মোক্ষমই হবে। দেশের হয়ে ১১৮ গোলের মালিক রোনালদো কি পারবেন তা করে দেখাতে?