ইউরোপীয় বাধা পেরোতেই পারছে না ব্রাজিল

বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিলের বিদায় যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০০২ সালে শেষ বিশ্বকাপ জেতার পর থেকে এই নিয়ে মোট চার বার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে বিদায় নিলো ব্রাজিল। প্রতিবারই ইউরোপের কোনও দলের কাছে হেরেছে তারা। শুক্রবার সেমিফাইনালে উঠার লড়াইয়ে ক্রোয়েশিয়ার চেয়ে এগিয়ে থেকেও টাইব্রেকারে হারতে হয়েছে নেইমারের দলকে।

১-১ গোলের সমতার ম্যাচ শেষে টাইব্রেকারে ব্রাজিলের প্রথম শটটা নেন বদলি নামা তরুণ ফরোয়ার্ড রদ্রিগো। কিন্তু তার দুর্বল শট আটকে দেন ম্যাচে দুর্দান্ত খেলা ক্রোয়েশিয়ার গোলকিপার ডোমিনিক লিভাকোভিচ। টাইব্রেকারে মার্কুইনোসের নেওয়া চতুর্থ শট পোস্টে লাগতেই মুখ ঢাকলেন নেইমার। কান্নায় ভেঙে পড়লেন স্টেডিয়ামের উপস্থিত হাজার হাজার সমর্থক। কোটি কোটি ব্রাজিল সমর্থকদের যেন কান্নার রাত।

গত ২০ বছর ধরেই হেক্সা জয়ের মিশন নিয়ে বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছে দলটি। কিন্তু প্রতিবারই তাদের সেই মিশন ব্যর্থ। শুক্রবারের ফাইনাল ম্যাচটি ব্রাজিলের জন্য ভীষণ হতাশার। অতিরিক্ত মিনিটে গোল দিলেও এর আগে একের পর এক গোল মিস করেছে তারা। ৩৬ বছর বয়সী লুকা মাদ্রিচকেও মধ্যমাঠে আটকাতেই পারেননি। গোল ব্যবধান আরও বাড়াতে গিয়ে ক্রোয়েশিয়ার পাল্টা আক্রমণের গোল হজম করতে হয়েছে।

২০ বছর আগে এশিয়ার মাটিতেই নিজেদের পঞ্চম ও সবশেষ বিশ্বকাপ জিতেছিল জোগো বনিতোর দেশ। কোরিয়া-জাপান বিশ্বকাপে রোনালদো-রিভালদো-রোনালদিনহোদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে পঞ্চম শিরোপা জেতে তারা। এরপর আরও চারটি বিশ্বকাপে ফেভারিট হিসেবে অংশগ্রহণ করলেও তাদের সর্বোচ্চ সাফল্য ২০১৪ সালে নিজ দেশে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল। কিন্তু এরপর বাকি বিশ্বকাপগুলোতে ফেভারিটের তকমা নিয়ে খেলতে গেলেও ইউরোপের কাছে হার মানতে হয়েছে। ২০০২ বিশ্বকাপের নকআউটে সর্বশেষ কোনও ইউরোপিয়ান প্রতিপক্ষকে হারাতে পেরেছে তারা। সেবারেই সর্বশেষ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তারা।

এরপর ২০০৬ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে পারেনি ব্রাজিল। পরের বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডস বাধা দূর করতে পারেনি তারা। ২০১৪ বিশ্বকাপে জার্মানি সাথে ঘরের মাঠে ৭-১ ব্যবধানে হেরে যাওয়ার ইতিহাসতো সবারই জানা। সর্বশেষ রাশিয়া বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে বেলজিয়ামের কাছে হেরে বিদায় নেয় ব্রাজিল। এবার হেক্সা জয়ের মিশন নিয়ে কাতারে আসা দলটি আরও একবার ইউরোপীয় দলের সঙ্গে বিদায় নিলো।

এভাবে বিদায় নিয়ে ভীষণ হতাশ থিয়াগো সিলভা।  তার কন্ঠে ফুটে উঠলো আক্ষেপ আর হতাশা, ‘এই মুহূর্তে কথা বলা কঠিন, নিজেকে সামলাতে হচ্ছে।  আমাদের চেষ্টা করা ছাড়া বিকল্প আর কিছু নেই।’