লাতিন ফুটবল নিয়ে এমবাপ্পের বিতর্কিত মন্তব্য তাতিয়ে দেবে মেসিদের

৬ মাস আগে এমবাপ্পের এক মন্তব্যে ফুটবল বিশ্বে বিতর্কের ঝড় উঠেছিল। ইউরোপিয়ান ও লাতিন আমেরিকান ফুটবলের তুলনা করতে গিয়ে কিছু মূল্যায়ন অকপটে জানিয়ে দিয়েছিলেন এই ফ্রেঞ্চ তারকা। তার মূল্যায়নে লাতিনদের চেয়ে ইউরোপীয় ফুটবল যে এগিয়ে রয়েছে তারই বহিঃপ্রকাশ ছিল। এবার বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনালে আর্জেন্টিনা-ফ্রান্সের আড়ালে ইউরোপ-লাতিন আমেরিকার যুদ্ধও। তাই ঘুরেফিরে এমবাপ্পের সেই মূল্যায়ন আবারও সামনে চলে এসেছে।

এমবাপ্পে ৬ মাস আগে কী বলেছিলেন? ফ্রেঞ্চ ফরোয়ার্ড আসলে বোঝাতে চাইছিলেন দুই মহাদেশের ফুটবল কীভাবে চলছে? তার একটা চিত্র তুলে ধরেছিলেন। লাতিনের চেয়ে ইউরোপ এগিয়ে রয়েছে সেটাই পরিষ্কার বলে দিয়েছিলেন, ‘ইউরোপের অনেক দলই আছে। এখানে আমাদের সুবিধা হলো আমরা সবসময় হাইলেভেলের ম্যাচ খেলে থাকি। এই যেমন আমরা নেশন্স লিগ খেলে থাকি। যখন বিশ্বকাপ আসে আমাদের প্রস্তুতিটা সেভাবেই হয়। আমরা সেভাবেই বিশ্বকাপে অংশ নিই।’

এরপরই তার মন্তব্যটা ছিল বেশ তির্যক। ২০১৮ বিশ্বকাপ জয়ী সদস্য সোজাসাপ্টা বলেছিলেন, ‘আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল হাইলেভেলের ম্যাচ না খেলেই বিশ্বকাপে অংশ নেয়। দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবলটা আসলে ইউরোপের মতো উন্নতি করতে পারেনি। যার কারণে বিশ্বকাপের সাম্প্রতিক চিত্রের দিকে তাকালে আপনি দেখবেন ইউরোপিয়ানরা সবসময় জিতে আসছে।’

এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে লাতিন আমেরিকার ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা ও উরুগুয়ে ছাড়া কেউই ট্রফি স্পর্শ করতে পারেনি। ২০০২ সালে সবশেষ ব্রাজিল শিরোপা জেতার পর আর কোনও লাতিন দলের সৌভাগ্য হয়নি তা স্পর্শ করার। হয়তো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেই এমবাপ্পে তার মূল্যায়ন প্রকাশ করেছিলেন।

যদিও এরপর এমবাপ্পের কথাকে অন্যভাবে ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন লিওনেল মেসি ছাড়াও এমিলিয়েনো মার্টিনেজরা। লাতিন আমেরিকায় খেলতে হলে কী কী সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। একেক জায়গায় একেক রকম প্রতিকূলতা। সবকিছুই মানিয়ে নিয়ে যে তাদের ফুটবলকে ঘিরে এগিয়ে যেতে হয় সেটাই বুঝিয়েছেন। আর তা করেই একেকজন বড় ফুটবলার হয়েছেন তাও বলে দিতে কার্পণ্য করেননি। সেটা যে ইউরোপের মতো সহজ নয় তাও বলেছেন কেউ কেউ।

এই যেমন মেসি বাস্তবতা বুঝে বলেছিলেন, ‘সে (এমবাপ্পে) কী বলেছিল তা আমি জানি না। কিন্তু আমরা এ নিয়ে কথা বলেছি। আমরা যখন বাছাই পর্ব খেলে ফিরে আসি, তা নিয়ে স্পেনের ফুটবলারদের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। বাছাই পর্ব খেলাটা কতটা কঠিন সেটাই বুঝিয়েছিলাম। যদি আপনি সেখানে খেলতে যান তাহলে যে একেক জায়গায় একেক রকম প্রতিকূলতা। কোথায় গরম, কোথায় উষ্ণতা, যা আমাদের আরও কঠিন করে তোলে। এছাড়া শক্তিশালী দল ও ভালো খেলোয়াড়ও হয়।’

তবে এমবাপ্পে ৬ মাস আগে যাই বলুন না কেন, মেসি-মার্টিনেজরা যতই ব্যাখ্যা দিক না কেন, ফাইনালে কিন্তু প্রমাণ হবে বর্তমানে ইউরোপের ফুটবল এগিয়ে, নাকি লাতিনরা?