মেসির সেঞ্চুরিতে চোখ রেখে কুরাসাওর সামনে আর্জেন্টিনা

গত কয়েকদিন আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ উদযাপনে কেটে গেছে। পানামার বিপক্ষে বুয়েন্স আয়ার্সের মনুমেন্টাল স্টেডিয়ামে ৮৪ হাজার দর্শকের সামনে ট্রফি উৎসব করেছিল আলবিসেলেস্তেরা। তিন তারকাখচিত জার্সিতে খেলার আনন্দ উপভোগ করেছেন লিওনেল মেসিরা। এই স্মরণীয় মুহূর্তগুলোর রেশ এখনও কাটেনি। বুধবার বাংলাদেশ সময় সাড়ে ৫টায় আবার মাঠে নামছে আর্জেন্টিনা, প্রতিপক্ষ কুরাসাও।

আগের ম্যাচে ফ্রি কিকে তিনটি সুযোগ নষ্টের পর মেসি মাইলফলক ছোঁয়া গোলের দেখা পান। সেই ফ্রি কিক থেকেই পেশাদার ক্যারিয়ারের ৮০০তম গোল করেন ৩৫ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড। এলএমটেন আরেকটি কীর্তিতে চোখ রেখে কুরাসাওয়ের মুখোমুখি হচ্ছেন। জাতীয় দলের জার্সিতে আগেরটি ছিল তার ৯৯তম। আরেকটি গোল করলে হয়ে যাবে সেঞ্চুরি, মানে শততম। 

আর্জেন্টিনার এই প্রতিপক্ষ কোনও স্বাধীন রাষ্ট্র না। দক্ষিণ ক্যারিবিয়ান সাগর ও ডাচ ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের একটি দ্বীপ রাষ্ট্র এটি। জনসংখ্যা দেড় লাখের মতো। ২০১০ সালে একে রাষ্ট্রের মর্যাদা দেয় নেদারল্যান্ডস। বর্তমানে কুরাসাও একটি স্বায়ত্তশাসিত রাষ্ট্র, যার অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলো দ্বীপের স্থানীয় লোকজন নিয়ন্ত্রণ করলেও প্রতিরক্ষা এবং বৈদেশিক সম্পর্কের দেখভাল এখনও করে নেদারল্যান্ডসই।

ফুটবলে কিন্তু নতুন কোনও দেশ নয় কুরাসাও। ১৯২৪ সাল থেকে ফুটবল খেলে আসছে তারা। নেদারল্যান্ডসের কাছ থেকে স্বায়ত্তশাসিত রাষ্ট্র হওয়ার পর নতুন করে গড়ে তোলে জাতীয় ফুটবল দল। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে শুরুতে বেশ পেছনে থাকলেও ২০১৬ সাল থেকে তাদের উত্থান শুরু। এরপর আর কখনও ৯০ এর বাইরে যায়নি তারা। ট্রফিও জিতেছে তারা ২০১৭ সালে, ক্যারিবিয়ান কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ফাইনালে জামাইকাকে হারিয়ে। ওইবার তারা তাদের ফুটবল ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৬৮তম র‌্যাঙ্কিং অর্জন করেছিল। বর্তমানে তাদের ফিফা র‌্যাঙ্কিং ৮৬। সবশেষ ম্যাচে কানাডার বিপক্ষে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে কনকাকাফ নেশনস লিগে হেরেছিল তারা ২-০ গোলে।

এবারই প্রথমবার আর্জেন্টিনার সামনে দাঁড়াচ্ছে কুরাসাও। আগামী বিশ্বকাপ আয়োজন করবে কনকাকাফ অঞ্চল, তাই চার বছরের মধ্যে নিজেদের ফুটবলের উন্নয়নে চোখ রেখে সামনের ম্যাচগুলোতে অংশ নিচ্ছে তারা। এই দলের অধিনায়ক কুকো মার্তিনার ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে এভারটন ও সাউদাম্পটনের সঙ্গে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। দলের গোলরক্ষক এলয় রুমও বেশ অভিজ্ঞ। এছাড়া ইংল্যান্ডের শীর্ষ স্তরের ফুটবলে খেলা লিয়ান্দ্রো বাকুনা আছেন।

তাই কুরাসাওকে কোনোভাবে হেলাফেলা করছে না আর্জেন্টিনা। এই ম্যাচেও তাই শক্তিশালী দল নিয়ে মাঠে নামবে তারা। পানামার বিপক্ষে প্রথম গোল করা থিয়াগো আলমাডার জায়গা হতে পারে শুরুর একাদশে। এছাড়া প্রথম দলে থাকতে পারেন লাউতারো মার্তিনেজ, লিসান্দ্রো মার্তিনেজ ও পাওলো দিবালা। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হিসেবে প্রথম দুটি ম্যাচই জিতে শেষ করতে চায় আর্জেন্টিনা। পানামার বিপক্ষে ভোগান্তির কথাও মাথায় রাখছে তারা। গোল পেতে কতই না ঘাম ছুটেছিল তিনবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের! শেষটা তাই স্মরণীয় করতেই মাঠে নামবেন মেসিরা।