টাইব্রেকারে শেখ জামালকে হারিয়ে সেমিফাইনালে আবাহনী 

স্বাধীনতা কাপের দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে নাটকীয় ম্যাচের জন্ম দিয়েছে আবাহনী ও শেখ জামাল। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার পর ম্যাচটা নিষ্পত্তি হয়েছে টাইব্রেকারে। শেখ জামালকে ৩-২ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে আবাহনী লিমিটেড। নির্ধারিত সময়ে কোনও দলই গোল করতে পারেনি। অতিরিক্ত সময়ের খেলাতে স্কোরলাইন ছিল ১-১। ৯৪ মিনিটে আবাহনী ও ১০৮ মিনিটে গোল করে শেখ জামাল।

রবিবার টাইব্রেকারে আবাহনীর জয়ের অন্যতম নায়ক তরুণ গোলকিপার শামীম হোসেন। টাইব্রেকার শুরুর আগ মুহূর্তে তার ওপর ভরসা রাখেন আর্জেন্টিনার কোচ দিয়েগো আন্দ্রেস ক্রুসিয়ানি। ভাগ্য পরীক্ষায় আস্থার জবাবটা ঠিকঠাক দিয়েছেন শামীম। তিনি একাই প্রতিপক্ষের দুটো শট রুখে দিয়ে দলকে জয়ের নোঙরে পৌঁছে দিয়েছেন। আবাহনীর হয়ে জোনাথন ফেরনান্দেজ, ওয়াশিংটন ও মিলাদ শেখ লক্ষ্যভেদ করেন। মিলাদ তো শেষ শটে গোল করে দলের জয় নিশ্চিত করেছেন। তবে শট পোস্টের ওপর দিয়ে গেছে রবিউল হাসান ও এমেকা ওগবাগের।

বিপরীতে শেখ জামালের হিগোর লেতে ও রাজীব হোসেন গোল করেছেন অনায়াসে। তবে খোলমাতভ ও শাকিল হোসেনের শট গোলকিপার শামীম দারুণ দক্ষতায় রুখে দিয়েছেন। আর ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের শট পোস্টের বাইরে দিয়ে গেলে হতাশই হতে হয় দলকে।

টাইব্রেকারে যাওয়ার আগে অতিরিক্ত সময়ের খেলা ১-১ গোলে সমতা ছিল। প্রথমার্ধের একপর্যায়ে সতীর্থের ক্রসে বক্সের ভেতরে এমেকা বুক দিয়ে বল সামনে ফেললে জোনাথন দারুণ এক নিচু শটে গোলকিপারকে পরাস্ত করে মাঠে আসা সমর্থকদের আনন্দে ভাসিয়েছেন।

কিন্তু অতিরিক্ত সময়ে প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে শেখ জামালও ম্যাচে ফিরে আসে। ব্রাজিলিয়ান হিগোর লেতে দারুণ এক ফ্রি-কিকে গোলকিপারকে পরাস্ত করেছেন। পাপ্পু বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়েও বলের নাগাল পাননি।

বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনাতে নির্ধারিত সময়ের শুরুর প্রথমার্ধে দুইদল অনেকটাই সাবধানী ফুটবল খেলেছে। তবে লড়াই হয়েছে সমানে সমান। সুযোগ পেলেও কোনও দল গোলের দেখা পায়নি। ম্যাচ ঘড়ির ১৪ মিনিটে শেখ জামাল প্রথম সুযোগটি পায়। ফ্রি-কিক থেকে ব্রাজিলিয়ান হিগো লেতে চেষ্টা করেছিলেন লক্ষ্যভেদ করতে। কিন্তু এই ব্রাজিলিয়ানের জোরালো শট গোলকিপার পাপ্পু হোসেন জায়গা থেকে একটু সরে এসে তালুবন্দী করেন। ৩ মিনিট পর আবাহনীও সুযোগ নষ্ট করে। মেহেদী হাসানের জোরালো শট সোজা গোলকিপারের তালুতে জমা পড়ে। ২৩ মিনিটে ফাহাদের ক্রসে বক্সের ভেতরে ফাঁকায় খোলমাতভের হেড দূরের পোস্ট দিয়ে বেরিয়ে যায়।

বিরতির পর যেন আবাহনী খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসে। প্রথম ১৫ মিনিটে আক্রমণের ঝড় বইয়ে দেয়। কিন্তু জোনাথন-মেহেদী-এমেকা-ওয়াশিংটনরা মিলে দলকে গোল এনে দিতে পারেননি। 

নিজদের গুছিয়ে শেখ জামালও ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করে। ৫৭ মিনিটে শেখ জামাল সুযোগ পায়। সতীর্থের ক্রসে খোলমাতভের হেড গোলকিপারের তালুতে জমা পড়ে। দুই মিনিট পর আবারও আবাহনীর সামনে সুযোগ আসে। ওয়াশিংটনের পাস অন্য প্রান্তে আবাহনীর তিনজন খেলোয়াড়ের যে কেউ তা পাওয়ার আগেই গোলকিপার প্রীতম শুয়েপড়ে নস্যাত করে দেন।

৭০ মিনিটে একজনকে কাটিয়ে বক্সের প্রান্ত থেকে মেহেদী হাসানের জোরালো শট পোস্টের একটু ওপর দিয়ে গেছে। প্রতি আক্রমণে শেখ জামাল চেষ্টা করেও লক্ষ্যভেদ করতে পারেনি। কলম্বিয়ার ভ্লাদিমির দিয়াজ বক্সে ঢুকে গোলকিপারকে একা পেয়ে  শট নিতে পারেননি। দারুণ দক্ষতায় পাপ্পু তা নস্যাত করে দেন।

যোগ করা সময়ে ম্যাচ আরও জমে ওঠে। তবে গোল নয় লাল কার্ডের কারণে! প্রথম মিনিটে রেফারি সায়মন হাসান আবাহনীর ম্যানেজার কাজী নজরুল ইসলামকে প্রথমে হলুদ কার্ড দেখেন। তর্ক চালিয়ে গেলে তাৎক্ষণিক তাকে লাল কার্ড দেখতে হয়েছে।

দিনের আগের ম্যাচে প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে রহমতগঞ্জ পিছিয়ে পড়েও ২-১ গোলে পুলিশ ক্লাবকে হারিয়েছে।