আদালতকে পুলিশ: ম্যারাডোনার ঘরে কোনও ‘চিকিৎসা সামগ্রী’ ছিল না

কিংবদন্তি ডিয়েগো ম্যারাডোনার মৃত্যুতে চিকিৎসকদের অবহেলার বিচারকাজ চলছে। সেখানেই একজন পুলিশ কর্মকর্তা সাক্ষ্য দিয়েছেন। চার বছর আগে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়াদের মধ্যে প্রথম ব্যক্তিটি ছিলেন এই পুলিশ কর্তকর্তা লুকাস ফারিয়াস। মঙ্গলবার আদালতে জানিয়েছেন, ম্যারাডোনা যে বাড়িতে অস্ত্রোপচার পরবর্তী সেবা নিচ্ছিলেন, সেই কক্ষে কোনও ধরনের চিকিৎসা সামগ্রী দেখেননি তিনি।

অবহেলার অভিযোগে ম্যারাডোনার চিকিৎসায় নিয়োজিত ৭ জনের বিরুদ্ধে চলমান বিচারকাজে সাক্ষ্য দিয়েছেন ফারিয়াস। তাদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। কৌঁসুলিরা আদালতে ম্যারাডোনার শেষ দিনগুলোতে অভিযুক্তদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করতে গিয়ে সেই পরিস্থিতিকে হরর থিয়েটারের সঙ্গে তুলনা করেছেন। 

নিজের সাক্ষ্যে ফারিয়াস বলেছেন, ‘ঘরে আমি কোনও চিকিৎসা সামগ্রী দেখিনি। কোনও ধরনের সেরাম (শরীরে সরাসরি শিরার মাধ্যমে দেওয়া ওষুধ) দেখিনি। যা আমার মনে হয় ঘরোয়া চিকিৎসা ব্যবস্থার অংশ হওয়া উচিত ছিল।’   

ফারিয়াস ছিলেন চার পুলিশের মধ্যে একজন, যিনি মঙ্গলবার সাক্ষ্য দিয়েছেন। এক সপ্তাহ আগে বুয়েন্স এইরেসের উত্তরের শহরতলি সান ইসিদ্রোতে বিচারকাজ শুরু হয়েছে। 

ফারিয়াস আদালতকে আরও বলেন, ‘তখন যেভাবে আমি ম্যারাডোনাকে আবিষ্কার করি, তা হলো তিনি চিত হয়ে শুয়ে ছিলেন। তার পেট এতই ফোলা ছিল যে, মনে হচ্ছিল এটা বিস্ফোরিত হবে। আমি তাকে এই অবস্থায় দেখে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম, কখনও ভাবিনি এমন একটি দৃশ্যের মুখোমুখি হতে হবে।’

মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধায় অস্ত্রোপচার করতে হয় ম্যারাডোনার। সেখান থেকে বাড়িতে সুস্থ হওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যেই তিনি ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর মারা যান। তার আগে বহু বছর কোকেন ও অ্যালকোহল আসক্তির জন্য লড়াই করেছেন।   

প্রাথমিকভাবে জানা যায়, ম্যারাডোনা হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে এবং ফুসফুসে অতিরিক্ত তরল জমা হয়ে মারা গেছেন। 

বিচারের আওতায় থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন একজন নিউরোসার্জন, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, মনোবিজ্ঞানী, মেডিকেল কো-অর্ডিনেটর, একজন নার্স কো অর্ডিনেটর, একজন চিকিৎসক ও রাতে কর্মরত নার্স। 

কৌঁসুলিরা দাবি করছেন, ম্যারাডোনাকে দীর্ঘ ও যন্ত্রণাদায়ক সময়ে তার ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল, যার পরিণতিতে তার মৃত্যু হয়। 

অভিযুক্তরা ‘ইচ্ছাকৃত হত্যাকাণ্ডের’ দায়ে দোষী সাব্যস্ত হলে তাদের ৮ বছর থেকে ২৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। বহু বিলম্বিত এই বিচারকাজে সাক্ষ্য দেবেন ১২০জন সাক্ষী। যা জুলাই পর্যন্ত চলার কথা রয়েছে।