মিয়ানমারকে হারিয়ে বাটলার ও ঋতুপর্ণা যা বললেন

এশিয়ান কাপ ফুটবলের বাছাইয়ে শক্তিশালী মিয়ানমারকে হারিয়ে মূল পর্বে এক পা দিয়ে রেখেছে বাংলাদেশ। এমন ঐতিহাসিক ম্যাচ জিতে মনিকা-রুপনারা ব্যাপক খুশি। ২০১৮ সালের বড় হারের প্রতিশোধও তো নেওয়া হয়েছে। আজ বাংলাদেশের হয়ে জোড়া গোল করেছেন ঋতুপর্ণা চাকমা।

ম্যাচ শেষে এই তারকা আসল উদযাপনটা তুলে রাখার কথাই শোনালেন। মানে মূল পর্বে উঠতে পারলেই উৎসব করার ইঙ্গিত দিলেন, ‘বাংলাদেশে যেহেতু আমরা কষ্ট করে সারা বছর এত অনুশীলন করি, তাই লক্ষ্য ছিল ম্যাচ বাই ম্যাচ জিতে কোয়ালিফাই করা। এখনও আমাদের একটা ম্যাচ আছে। সেই ম্যাচে যদি আমরা ভালো ফল আনতে পারি, তাহলে অবশ্যই উদ্‌যাপন করবো।’

ইংলিশ কোচ পিটার বাটলার আরও সাবধানী, ‘টেকনিক্যালি তাদের কিছু ভালো খেলোয়াড় আছে। তবে আমার মনে হয়েছে আমাদের কৌশলে ফাটল ধরাতে কিংবা মনোবল ভাঙতে হিমশিম খেতে হয়েছে তাদের এবং তারা হতাশ হয়ে পড়েছিল। আমাদের বিনয়ী হওয়াটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয়। কারণ কাজ এখন অর্ধেক শেষ হয়েছে, পুরোটা নয়। আমাদের পরের প্রতিপক্ষকে (তুর্কমেনিস্তান) সম্মান জানাতে হবে। বাহরাইন-মিয়ানমারের বিপক্ষে  যেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি, ঠিক সেভাবেই প্রস্তুতি নেবো।’ 

প্রতিপক্ষ মিয়ানমার নিয়ে বাটলারের আরও কথা, ‘যারা আমাকে জানেন, তারা জানে মিয়ানমারে খুবই সুন্দর স্মৃতি আছে আমার। এখানে একটি বছর কাটিয়েছি। এখানকার লোকেরা খুবই অতিথিপরায়ণ ও বন্ধুসুলভ। এই দেশ থেকে আমি সবচেয়ে বড় যে জিনিসটা শিখেছি, সেটা বিনয়। আমাদের এখনও কাজ করা বাকি। সেজন্য প্রস্তুত হতে  হবে।’ 

ঋতুপর্ণার প্রশংসা করে বাটলার বললেন, ‘এই মেয়ের (ঋতুপর্ণা) আরও উচ্চমানের লিগে খেলার সামর্থ্য আছে। সবাই সেটা জানে বলে আমি মনে করি। দুর্ভাগ্যজনক যে বাংলাদেশে লিগ হয় না, সেজন্য ভুটানে লিগে গিয়ে খেলতে হয়েছে তাকে। তবে তার সৌদি আরব, মধ্যপ্রাচ্য কিংবা অন্য কোথাও ভালো মানের লিগে খেলা উচিত। সে সাহসী ও কঠিন এক মেয়ে। এখনও তরুণ। তার সামনে সম্ভাবনার বিশাল এক জগৎ খোলা আছে। আমি চাই সে সামনে এগিয়ে যাক, আরও বড় পর্যায়ে খেলুক, কারণ সে এটার যোগ্য।’ 

খেলোয়াড়দের ম্যাচে কৃতিত্ব দিয়ে বাটলার বিস্তারিত জানিয়ে বললেন, ‘অফিসিয়ালরা যেভাবে ম্যাচটি সামলেছে তা দুর্দান্ত। মিয়ানমারের খেলোয়াড়দের দ্বারা প্রভাবিত হয়নি। আমরা চাই সঠিক চেতনা নিয়ে খেলতে। আমি চাই না আমার খেলোয়াড়েরা অযাচিতভাবে পেনাল্টি আদায়ের চেষ্টা করুক। আমি সেভাবে কাজ করি না। সেদিক থেকে রেফারিরা দুর্দান্ত ছিল। লাইন্সম্যানরাও ঠিক কাজ করেছে। সব সিদ্ধান্ত সবসময় সঠিক হবে না। তবে এর মধ্যে একটিও পেনাল্টি ছিল বলে আমার মনে হয় না।’

তিনি আরও বললেন, ‘আমাদের একটি পরিকল্পনা ছিল এবং সেজন্য নিখুঁতভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি। জানতাম যে ম্যাচটি দেখতে সুন্দর লাগবে না। তবে আমরা যেভাবে খেলেছি, যেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি, তারা তাদের পাসিং ফুটবলটা মেলে ধরতে পারেনি। তাদের টেকনিক্যালি ভালো খেলোয়াড় থাকলেও কেবল এক-দু্ইবার আমাদের সমস্যায় ফেলতে পেরেছে। সত্যি বলতে আমার খেলোয়াড়দের পুরো কৃতিত্ব দিতে হবে। রক্ষণে তারা বেশ ভালোভাবে সামাল দিয়েছে এবং খেলার সবচেয়ে কঠিন ও পরিশ্রমী কাজটি করেছে। তারা খুবই ভালো খেলেছে।’