কমান্ডো ট্রেনিংয়ে জিমি-চয়নদের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা

Hockeyজাতীয় হকি দলের খেলোয়াড়দের জন্য এই অভিজ্ঞতা একেবারেই নতুন। আগস্ট-সেপ্টেম্বরে ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠেয় এশিয়ান গেমসে ভালো করতে কঠোর পরিশ্রম করছেন তারা। কিছু দিন আগে ভারত সফর করে আসা জিমি-চয়নদের কমান্ডো ট্রেনিংয়ের অভিজ্ঞতাও হলো! গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুরে বিমানবাহিনীর ৪১ নং স্কোয়াড্রনে তিন দিনের প্রশিক্ষণ নিয়ে খেলোয়াড়রা রোমাঞ্চিত।

তবে রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা হলেও কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে খেলোয়াড়দের। অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার মামুনুর রহমান চয়ন বাংলা ট্রিবিউনকে বললেন, ‘প্রথম দিন তিন কিলোমিটার হেঁটে ভেতরে ঢুকতে হয়েছে। শুরু থেকেই সময় মতো নিজেদের কাজ করতে হয়েছে আমাদের। প্রশিক্ষণের জন্য ঠিক সময়ে হাজির হতে হয়েছে। এমনকি আগে গেলে শাস্তির বিধানও ছিল! ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় প্রশিক্ষণ করে সবার অবস্থাই বেশ খারাপ হয়ে পড়েছিল। প্রচণ্ড গরমে আমাদের ঘাম শুকাতো না সহজে। জুডো সহ অনেক কিছুই শিখতে হয়েছে।’

প্রতিদিন তিন কিলোমিটার দৌড়ের পর ১৩ ধরনের কমান্ডো পিটি করতে হতো খেলোয়াড়দের। সূচি অনুযায়ী কমান্ডো ট্রেনিং শেষ না করে কেউ মাঠ ছেড়ে যাওয়ার সুযোগ পেতেন না। চয়ন জানালেন, ‘আমাদের ২৮ জন খেলোয়াড়ের সঙ্গে থাকতেন ১৩ বা ১৪ জন কমান্ডো। মানে দুজনের পেছনে একজন কমান্ডো বলতে পারেন। প্রশিক্ষণ শেষ না করে আমাদের কেউ যেতে পারতো না। একজনেরও ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ ছিল না। আমরা তাঁবুতে থাকতাম, আর রাতে ব্যবহার করতাম হ্যারিকেন। তাঁবুও বানিয়েছিলাম নিজেরাই। নির্দেশনা ছিল, গভীর রাতেও বাঁশি বাজানোর তিন মিনিটের মধ্যে ড্রেস পরে যে কোনও কাজের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। কমব্যাট ড্রেস পড়ে সাঁতরে পুকুরের এক পার থেকে অন্য পারে যেতে ভীষণ কষ্ট হতো আমাদের।’

প্রশিক্ষণে জঙ্গলে প্রবেশের অভিজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বললেন, ‘আমাদের তাঁবুর কাছাকাছি ছিল গভীর জঙ্গল। সেখানে কাঁটা, সাপ কিংবা বন্যপ্রাণী যা-ই থাকুক না কেন, সব বাধা পার হতে হয়েছে। জঙ্গলে হেঁটে পাঁচ কিলোমিটার পার হতে দেড় ঘণ্টাও লেগেছে আমাদের। থামার কোনও সুযোগ দেওয়া হতো না। এ ধরনের প্রশিক্ষণের লক্ষ্য হলো, প্রতিপক্ষ যত শক্তিশালী হোক না কেন, সব বাধা পেরিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।’

প্রথম রাতে অনেকেই নাকি বেশ ভয় পেয়েছিলেন। চয়ন সেই অভিজ্ঞতাও ভাগ করে নিলেন বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে, ‘প্রথম রাতে বেশ ভয় করছিল আমাদের। শিয়াল বা অন্য কোনও প্রাণীর তাঁবুর কাছে চলে আসার ভয় করছিলাম আমরা। কেউ কেউ তো ভূতের ভয়ও পাচ্ছিল! তবে প্রথম রাতের পর আমাদের মনে ভয়-ডর বলে কিছু ছিল না। তিন দিনের কমান্ডো ট্রেনিং আমাদের মানসিকভাবে দৃঢ় করেছে। এই অভিজ্ঞতাকে ভালোই বলতে হবে। টার্ফের খেলায় এটা বেশ কাজে আসবে।’