এসএ গেমসের সফল সাঁতারু শীলার আক্ষেপ

সাঁতারু মাহফুজা আক্তার শীলাকিছুটা আক্ষেপ নিয়ে এসএ গেমসে জোড়া সোনাজয়ী সাঁতারু মাহফুজা আক্তার শীলা বলছিলেন, ‘অনেক আশা ছিল, কমনওয়েলথ গেমসের সাঁতারে অংশ নেবো, দেশের প্রতিনিধিত্ব করবো। কিন্তু ফেডারেশন সেই সুযোগ দিলো না, কমনওয়েলথ গেমসে অংশ নেয়ার স্বপ্ন পূরণ হলো না।’

আগামী বছরের এপ্রিলে অস্ট্রেলিয়ার গোল্ড কোস্টে বসবে কমনওয়েলথ গেমসের ২১তম আসর। সাঁতারে বাংলাদেশের হয়ে অংশ নেবেন দুজন— আরিফুল ইসলাম ১০০ মিটার ব্রেস্ট স্ট্রোক এবং নাজমা খাতুন ৫০ মিটার বাটারফ্লাইয়ে।

কমনওয়েলথ গেমসে অংশগ্রহণের প্রক্রিয়া নিয়ে বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে দুঃখ লুকিয়ে রাখতে পারেননি শীলা। তার অভিযোগ, প্রতিযোগিতার জন্য নিয়ম মেনে সাঁতারুদের বাছাই করা হয়নি। বিশেষ করে মেয়েদের ইভেন্ট নিয়ে অভিযোগ করেছেন তিনি, ‘যে দুজন সাঁতারু কমনওয়েলথ গেমসে যাচ্ছেন, তাদের নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। ফেডারেশন সুযোগ করে দিয়েছে বলেই তারা যাচ্ছেন। তবে যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছে, তা সঠিক ছিল না, বিশেষ করে মেয়েদের ইভেন্টে।  এসএ গেমসে মেয়েদের ৫০ মিটার বাটারফ্লাইয়ে পদক আসা তো দূরের কথা, বাংলাদেশ হয়েছিল অষ্টম। তাহলে এই ইভেন্টে কেন সাঁতারু পাঠানো হবে?’

এসএ গেমসে জোড়া সোনা জয়ের পর আজারবাইজান, কানাডা ও হাঙ্গেরিতে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন শীলা। প্রথমটি ইসলামিক সলিডারিটি গেমস, আর শেষটি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ। তিনটি আসরেই তার পারফরম্যান্সে উত্থান-পতন ছিল।

গত জুলাইয়ে হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে অনুষ্ঠিত বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে শীলার পারফরম্যান্স ভালো হয়নি। তাই কমনওয়েলথ গেমসে তার জায়গায় নাজমাকে নেওয়া হয়েছে বলে বাংলা ট্রিবিউনকে জানালেন সাঁতার ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেলিম মিয়া। কমনওয়েলথ গেমসে মেয়েদের ইভেন্টে অংশগ্রহণের প্রক্রিয়া নিয়ে শীলার অভিযোগের জবাবে তার মন্তব্য, ‘শীলা দেশের অন্যতম সেরা সাঁতারু, তাকে একাধিক প্রতিযোগিতায় সুযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সে সব প্রতিযোগিতায় তার টাইমিং ভালো ছিল না। তাই কমনওয়েল গেমসে তার জায়গায় আরেকজনকে বাছাই করা হয়েছে। এসএ গেমসে নাজমার ইভেন্টে পদক আসেনি ঠিকই, তবে আমরা আশাবাদী, আগামীবার এই ইভেন্টে পদক আসবে।’

অনেক ফেডারেশনই আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় খেলোয়াড়দের ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে পাঠায়। পারফরম্যান্স নয়, তারা অনুসরণ করে ‘পর্যায়ক্রম পদ্ধতি’। ক্রীড়াঙ্গনে গুঞ্জন, সাঁতার ফেডারেশনও এ পদ্ধতি মেনে চলে। এ বিষয়ে শীলার বক্তব্য, ‘ফেডারেশন ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে সবাইকে আন্তর্জাতিক আসরে পাঠাতেই পারে, তবে এটা বলে দিলেই হয়। আমার পারফরম্যান্স খারাপ এমন কথা বলা ঠিক নয়। এতে করে আমাকে ছোট করা হচ্ছে। সর্বশেষ তিনটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় আমার পারফরম্যান্স ছিল মিশ্র। কখনও ভালো করেছি, কখনও কিছুটা খারাপ হয়েছে। অল্প কিছু দিন অনুশীলন করে আন্তর্জাতিক মিটে ভালো করা যে কঠিন, তা বুঝতে হবে। এখন কমনওয়েলথ গেমসের ট্রেনিংয়ে থাকতে পারলে অস্ট্রেলিয়ায় নিশ্চয়ই ভালো টাইমিং হতো।’

কমনওয়েলথ গেমসে শীলা কেন নেই, তা বুঝতে পারছেন না জাতীয় সাঁতার দলের দক্ষিণ কোরিয়ান কোচ পার্ক তে গুনও। তার কথা, ‘বুঝতে পারছি না শীলাকে কেন দলে রাখা হয়নি। পারফরম্যান্সের কারণে হতে পারে। আসলে ফেডারেশনই এটা ভালো বলতে পারবে।’