লড়াই করে টিকে আছি: সুমিতা

হার্ডলসের রানী সুমিতা২০০৩ সাল থেকে শুরু, এখনও ১০০ মিটার হার্ডলসে রাজত্ব টিকিয়ে রেখেছেন সুমিতা রানী দাস। মাঝে ছন্দপতন হলেও আবারও ফিরেছেন পুরানো রূপে। ৪১তম জাতীয় অ্যাথলেটিক্সের দ্বিতীয় দিন ১০০ মিটার হার্ডলসে স্বর্ণপদক জিতে আবারও শ্রেষ্টত্ব অর্জন করেছেন বাংলাদেশ জেল দলের এই হার্ডলার।

শনিবার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের ট্র্যাকে সুমিতা সময় নিয়েছেন ১৫ সেকেন্ড। জাতীয় ও সামার অ্যাথলেটিক্স মিলিয়ে ১৮টি স্বর্ণপদক জমা হলো। ২০০৩ সাল থেকে স্বর্ণপদক পেলেও মাঝে কয়েকবার হাতছাড়া হয়েছে সেটা। ২০০৯ সালে জেতা হয়নি। ২০১৫ ও ২০১৬ সালে তো ইনজুরির কারণে জাতীয় আসরে খেলাই হয়নি।

সুমিতার ক্যারিয়ার সেরা টাইমিং ১৩.৯৯ সেকেন্ড। সেটা ঢাকার এসএ গেমসে। সেখানে অল্পের জন্য স্বর্ণপদক হাতছাড়া হয়েছে। এছাড়া শ্রীলঙ্কাতেও ২০০৬ সালে রৌপ্যপদক ছিল তার। সর্বশেষ এই বছরে সামার অ্যাথলেটিক্সে ১৫.১০ সেকেন্ড ছিল।

স্বর্ণপদক জেতার পর সুমিতার বক্তব্যে আনন্দের চেয়ে বেশি ঝরলো আক্ষেপ, ‘আমাদের সংস্থা বাংলাদেশ কারা কর্তৃপক্ষের তো মাঠ নেই। আমরা বিকেএসপি গিয়ে অনুশীলন করতাম। বিকেএসপি মাঠ আবার নতুনভাবে প্রস্তুত করায় সেখানে অনুশীলন করতে পারছি না। কাশিমপুরে একটা লেন আছে, ওখানেই অনুশীল করেছি। মাঝেমধ্যে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে এসে অনুশীলন করেছি। গাজীপুরের কোনাবাড়ি থেকে এখানে এসে অনুশীলন করা মোটেও সহজ কাজ নয়। তারপরেও করতে হচ্ছে।’

রেকর্ড গড়লেন সজীবহার্ডলসে যেখানে অনেকে লড়াই করার আগ্রহ নেই, সেখানে নিজের টিকে থাকার সংগ্রাম করে যাচ্ছেন সুমিতা। সে কথাই বললেন তিনি, ‘আমি ছোটবেলা থেকে অ্যাথলেটিক্সে আছি। অনেক চড়াই-উৎরাই পার হতে হয়েছে। লড়াই করেই টিকে আছি বলতে পারেন। হার্ডলসে অনেকে আসতে চায় না। ভয় পায়। আমি সেই ভয়কে জয় করে এগিয়ে যাচ্ছি।’

এসএ গেমসে দুটি রৌপ্য জেতা এই হার্ডলার স্বপ্ন দেখা ছাড়তে চান না। আশা আছে আন্তর্জাতিক ট্র্যাকেও ভালো করার, ‘কেন এসএ গেমসে আর পদক জেতা যাবে না? এখনও আমাকে উন্নত সুযোগ-সুবিধা দিলে অবশ্যই জেতা সম্ভব। গত এসএ গেমসে স্বর্ণ এসেছে ১৩.৯৯ সেকেন্ডে। উন্নত প্রশিক্ষণ পেলে তার চেয়ে ভালো করতে পারবো। আমি এখনও আশাবাদী এসএ গেমসে ভালো কিছু করতে পারবো। চাপ হবে না এটা আমাদের জন্য।’

জ্যাভলিনে সোনা জিতেছেন মনিরুজ্জামানসুমিতা ছাড়াও ২০০৭ সালে জাতীয় আসর শুরু করা সজীব হোসেন শনিবার হাইজাম্পে গলায় ঝুলিয়েছেন ১৯তম স্বর্ণ। ২০১০ সালে ২.১১ মিটার উচ্চতা অতিক্রম করে জাতীয় রেকর্ড গড়েন পাবনা থেকে উঠে আসা বিকেএসপির সাবেক এ ছাত্র। শনিবার ২ মিটার লাফিয়ে সোনা জিতেছেন তিনি। স্বর্ণপদক জিতে নৌবাহিনীর এই অ্যাথলেট বলেছেন, ‘খেললাম, স্বর্ণপদকও এলো। কিন্তু এভাবে আর ভালো লাগে না। আমাদের আসলে উন্নত প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। তা পেলে এসএ গেমসে হয়তো দেশকে কিছু দিতে পারবো।’

দ্বিতীয় দিনে রেকর্ড হয়েছে একটি। জ্যাভলিন থ্রো ইভেন্টে রেকর্ড গড়েছেন সেনাবাহিনীর মনিরুজ্জামান। ৬৪.০৪ মিটার দূরত্ব অতিক্রম করেছেন তিনি। ২০১২ সালে সেনা বাহিনীর সতীর্থ রাশেদুজ্জামানের ৬৩.৭৪ মিটারের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন মনিরুজ্জামান।