লাল-সবুজের স্বপ্ন নিয়ে লন্ডন থেকে ঢাকায়

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে চায় সাফওয়ান। ছবি-সংগৃহীত২১ বছর আগে তার বাবা জীবিকার তাগিদে পাড়ি দিয়েছিলেন লন্ডনে। সেখানেই জন্ম আল সাফওয়ান উদ্দিনের। লেখাপড়ার পাশাপাশি বক্সিং চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি, অংশ নিয়েছেন লন্ডনের বেশ কয়েকটি প্রতিযোগিতায়। দেশের টানে সাফওয়ান এখন বাংলাদেশে, অংশ নিচ্ছেন জাতীয় বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে। আর রিংয়ে নেমে প্রথম দিনেই চমকে দিয়েছেন সবাইকে, জয় পেয়েছেন ৬০ কেজি ওজনশ্রেণিতে। শুধু জাতীয় প্রতিযোগিতা নয়, তার লক্ষ্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে লাল-সবুজ পতাকার প্রতিনিধিত্ব করা।

বৃহস্পতিবার প্রথম রাউন্ডে মাত্র ৩০ সেকেন্ডে দিনাজপুরের কামরুজ্জামান জনিকে হারিয়ে দিয়েছেন ১৮ বছর বয়সী সাফওয়ান। আন্তর্জাতিক বক্সিংয়ের নিয়ম অনুযায়ী, ১৯ বছর বয়সের আগে কোনও জাতীয় প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারেন না বক্সাররা। তবে বক্সিং ফেডারেশন বিশেষ বিবেচনায় সাফওয়ানকে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে।

সাফওয়ান অবশ্য এতে সন্তুষ্ট নন। তার চোখে বাংলাদেশের হয়ে রিংয়ে নামার স্বপ্ন, ‘আমার লক্ষ্য লাল-সবুজ পতাকার হয়ে খেলা। ইংল্যান্ডের হয়ে অলিম্পিকে খেলতে পারবো না, তাই বাংলাদেশের হয়ে খেলতে চাই। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সাফল্য পেতেই দেশে ফিরেছি। নিজের দেশের হয়ে খেলা অনেক সম্মানজনক।’

লন্ডনে এডমন্ড ঈগল ক্লাবে অনুশীলন করেন সাফওয়ান। তিনি বললেন, ‘বাংলাদেশের হয়ে যে কোনও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে চাই, সম্ভব হলে এশিয়ান গেমসে। লন্ডনে আমার ক্লাবের কোচ কস্তালেস ইভানজুলি বলেছেন, বাংলাদেশের জাতীয় প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে জাতীয় দলে সুযোগ পেলে আমাকে আরও প্রশিক্ষণ দেবেন।’ এদেশের বক্সারদের নিয়ে তার মন্তব্য, ‘বাংলাদেশের বক্সারদের ফিটনেস ভালো, তবে টেকনিকে দুর্বলতা আছে।’

সিলেটের সংসদ সদস্য সেলিম উদ্দিনের নাতি সাফওয়ানকে নিয়ে আশার কথাই শোনালেন বক্সিং ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কুদ্দুস খান, ‘সাফওয়ানের খেলার ধরন ভালো। ঠিকমতো প্রশিক্ষণ চালিয়ে গেলে সে ভালো বক্সার হতে পারবে। জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে ভালো করলে আমরা তাকে এসএ গেমসের ক্যাম্পে ডাকবো। আগামী জুনে থাইল্যান্ডে কিংস কাপে অংশ নেবে বাংলাদেশ, সেখানেও পাঠাতে পারি।’

২০১০ সালে ঢাকা এসএ গেমসে স্বর্ণপদক জয়ী আব্দুর রহিমও আশাবাদী, ‘সাফওয়ান ভালো বক্সার, তার টেকনিক ভালো, ভালো পাঞ্চও করতে পারে। তবে তাকে আরও শিখতে হবে।’

ছেলেকে নিয়ে গর্বিত জবলু উদ্দিন। তার কথা, ‘সাফওয়ান দেশের জন্য কিছু করতে চায়। জাতীয় দলে সুযোগ পেলে আমার ছেলের জন্য লন্ডনে আরও উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবো।’