‘ইতালি আমাদের ভিসা দেবে না চিন্তাও করিনি’

বিশ্ব জুনিয়র দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিতে বেশ কিছু দিন অনুশীলন করে আসছিলেন নোশিন আনজুম-সুব্রত বিশ্বাসরা। গ্র্যান্ডমাস্টার এনামুল হোসেন রাজীব তাদের দিক-নির্দেশনা দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু আগামী ১১ থেকে ২৩ অক্টোবর ইতালির সার্দিনিয়া শহরে শুরু হতে যাওয়া টুর্নামেন্টে আর অংশ নেওয়া অংশ হচ্ছে না ওই দাবাড়ুদের। পালিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় বাংলাদেশ দলের কাউকে ভিসা দেয়নি ইতালির দূতাবাস। এমন খবর জানতে পেরে যারপরনাই হতাশ দলের সবাই।

এই টুর্নামেন্টকে ঘিরে সুব্রত বিশ্বাস, ওয়ালিজা আহমেদ, ওয়াদিফা আহমেদ, নিলাভো চৌধুরী, জান্নাতুল ফেরদৌস, শাহদাত কিবরিয়া ও নোশিন আনজুমের অনেক প্রত্যাশা ছিল। আশায় ছিলেন ওপেন ও গার্লস বিভাগে খেলে নিজেদের আরও ঋদ্ধ করতে পারবেন। কিন্তু সব পরিশ্রমই বৃথা গেলো শেষ পর্যন্ত।

৭জন দাবাড়ুর অন্যতম নোশিন আনজুম তো হতাশা প্রকাশ করেছেন বাংলা ট্রিবিউনের কাছে, ‘না যেতে পেরে অনেক খারাপ লাগছে। এক মাস ধরে ভিসার জন্য চেষ্টা করেছি। কোর্টের কাগজপত্রও দিয়েছি। এছাড়া অন্য কাগজ পত্রও দিতে হয়েছে। সাড়ে ১২ হাজার টাকা ফি ছিল। টিকিটও কাটা হয়েছে। এখন রিফান্ডের টাকাও পাওয়া যাবে না। আসলে এমনটি হবে আমরা কেউ আশা করিনি। ইতালি যে আমাদের ভিসা দেবে না, চিন্তাতেও ছিল না।’

আরও পড়ুন: ইতালিতে থেকে যাওয়ার শঙ্কায় ভিসা দেয়নি ৭ দাবাড়ুকে

ইতালিতে বিশ্বের প্রায় সব দেশের দাবাড়ু অংশ নেবে। তাই সুব্রত-নোশিনরা চাইছিলেন সেখানে ইতিবাচক ফল করে যদি নর্ম অর্জন করা যায়। নোশিন বলছিলেন, ‘বিশ্বের সব দল খেলবে, বড় ইভেন্ট। অনেক অভিজ্ঞতাও হতো। নর্ম অর্জনের বড় সুযোগ হাতছাড়া হলো। হয়তো ইউরোপে খেলা হওয়াতে সমস্যা হলো। সবারই এখন মন খারাপ।’

গত বুধবার ঢাকার ইতালির দূতাবাসে গিয়েছিলেন নোশিনরাও। কিন্তু দেখা করার সুযোগ পাননি। ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনায় বলেছেন, ‘‘আমরা চেষ্টা করেও রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দেখা করতে পারিনি। মলি আন্টি(মাহমুদা আক্তার, হেড অব ডেলিগেশন) ছাড়া কেউই কথা বলতে পারেনি। পরে শুনেছি ওদের একটাই কথা, আমাদের দেবে না। শুনেছি এমনও বলেছে, ‘তোমরা বাঙালিরা গিয়ে থেকে যাও কেন।’ এরপর মলি আন্টি রাগ করে বেরিয়ে আসেন। আসলে এমন তিক্ত অভিজ্ঞতা আগে কখনও হয়নি। অনেক দেশে খেলতে গিয়েছি। কিন্তু ভিসা প্রত্যাখাত হয়নি।’’

বিশ্ব জুনিয়র দাবায় বাংলাদেশের হেড অব ডেলিগেশন মাহমুদা হক মলি দুঃখভারাক্রান্ত মনে জানিয়েছেন, ‘আমরা শুনেছি শুধু বাংলাদেশ নয়, শ্রীলঙ্কার দাবাড়ুদেরও নাকি ভিসা দেওয়া হয়নি। ওই দিন ঢাকায় ইতালির রাষ্ট্রদূতকে বোঝানোর চেষ্টা করেও আমরা সফল হইনি। আসলে দুর্ভাগ্য। ওরা ভালো একটি টুর্নামেন্টে খেলা থেকে বঞ্চিত হলো।’