ক্রীড়াঙ্গনে সাবেক খেলোয়াড় ও সংগঠকদের নিয়ে নতুন সংগঠনের আত্মপ্রকাশ

জেলা-বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক পরিষদ নামে একটি সংগঠন রয়েছে ক্রীড়াঙ্গনে। এত দিন ছিল তাদের দৌরাত্ম। আজ থেকে বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক অ্যাসোসিয়েশন নামে আরেক সংগঠনের আত্মপ্রকাশ হয়েছে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ অডিটরিয়ামে ৪৫ সদস্যের এডহক কমিটিও গঠিত হয়েছে। মূলত জাতীয়তাবাদী আদর্শের সংগঠক ও খেলোয়াড় এবং বঞ্চিতরা এক হয়ে এমন সংগঠনের জন্ম দিয়েছেন।

জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক ও বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দলের (বিএনপি) ক্রীড়া সম্পাদক আমিনুল হক বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক অ্যাসোসিয়েশন আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। তিনি অনুষ্ঠানের শুরুতে সংগঠনের যৌক্তিকতা তুলে ধরে বলেন, ‘আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় ক্রীড়াঙ্গন নতুন করে সাজানোর জন্য জেলা বিভাগের এই সংগঠন। গত ১৭ বছর আওয়ামী লীগ দেশের অন্য সকল ক্ষেত্রের মতো ক্রীড়াঙ্গনেও দলীয়করণ করেছে। এতে অনেক সংগঠক দূরে সরে গিয়েছিলেন। যোগ্য ও ক্রীড়াঙ্গনে নিবেদিতপ্রাণ সংগঠকদের একটি প্ল্যাটফর্ম প্রয়োজন। এজন্য এই সংগঠন।’

জেলা-বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক অ্যাসোসিয়েশনের প্রাথমিক কমিটিতে আহ্বায়ক কিশোরগঞ্জ ও ঢাকা মোহামেডানের সংগঠক শরীফুল আলম। সদস্য সচিব বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও সাঁতার ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক সজল। যুগ্ম আহ্বায়কের মধ্যে অন্যতম- সাবেক বিসিবি পরিচালক ও সার্চ কমিটির সদস্য মহিউদ্দিন বুলবুল, আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, সাবেক তারকা ফুটবলার সৈয়দ রুম্মন বিন ওয়ালী সাব্বির, বাফুফে সহ-সভাপতি ওয়াহিদ উদ্দিন চৌধুরি হ্যাপী। 

সদস্যদের মধ্যে অন্যতম হকি ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজেদ এএ আদেল, সাবেক সাঁতারু সেলিম মিয়া, রিয়াজ উদ্দিন ও সাঁতার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শাহীন। 

দায়িত্ব গ্রহণের পর সংগঠনের আহ্বায়ক শরীফুল আলম বলেন, ‘আমরা ক্রীড়াঙ্গনকে স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্ট মুক্ত করতে চাই। বিগত ১৭ বছরে যারা সুবিধাভোগী ছিলেন তাদের অনেকেই এখনও আছেন। আবার আওয়ামী লীগের পুর্নবাসনও হচ্ছে। এসব বিষয়ে আমরা জেলা-বিভাগীয় সংগঠকরা কাজ করবো। প্রশাসন এবং সরকারের সঙ্গেও আলোচনা করবো।’

সংবাদ সম্মেলনে আমিনুল

সাবেক জাতীয় ফুটবলার আমিনুল হক এই সংগঠনকে অনিয়ম ও দুর্নীতি উন্মোচনের আহ্ববান জানিয়ে বলেন, ‘ক্রীড়াঙ্গন এখনও স্বৈরাচার মুক্ত হয়নি। যারা ক্রীড়াঙ্গনে বিগত সময়ে দুর্নীতি করেছে তাদের চিহ্নিত করতে আপনারা কাজ করবেন। দুর্নীতি প্রমাণিত হওয়ার পর তারা ক্রীড়াঙ্গনে আজীবন নিষিদ্ধ হবেন। কাজী সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ জমা পড়েছে জেনেছি। দুদক চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করবো সেটার সঠিক তদন্ত করার জন্য।’ 

এরপর তার কথা, ‘ক্রীড়াঙ্গনকে আমরা রাজনীতিমুক্ত রাখতে চাই। জেলা-বিভাগের কমিটিতে সৈরাচার ও ফ্যাসিস্ট দোসর ছাড়া যে কাউকে নিয়ে কমিটি হতে পারে। ক্রীড়াঙ্গনে ভালো কাজ করতে চায় এবং আগ্রহী আমরা সকলকে নিয়ে কাজ করতে চাই।’  

আজ সংগঠনের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক আব্দুস সালাম। তিনি ক্রীড়াঙ্গন সংস্কারের জন্য গঠিত সার্চ কমিটির সমালোচনা করে বলেন, ‘সার্চ কমিটি নিজেদের পছন্দ মতো ব্যক্তিদের দিয়ে ফেডারেশন করছে। এদেরকেও এক দিন জবাব দিতে হবে। গত ৭-৮ মাসে ক্রীড়াঙ্গন আরো পিছিয়ে পড়েছে।’

অনুষ্ঠানে জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট, মিনহাজুল আবেদীন নান্নু, তামিম ইকবাল, সাবেক ক্রিকেটার নিয়ামুর রশীদ রাহুল, সাবেক তারকা ফুটবলার ও কোচ শফিকুল ইসলাম মানিক, সাবেক হকি খেলোয়াড় আরিফুল হক প্রিন্স, শুটার শারমিন আক্তার রত্নাসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।